মিয়ানমার রোহিঙ্গা গণহত্যার দায় এড়াতে পারে না : আইসিজে
বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নেদারল্যান্ডসে হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের রোহিঙ্গা গণহত্যায় আফ্রিকার ক্ষুদ্র দেশ গাম্বিয়ার করা মামলার অন্তর্বর্তী আদেশ পড়ছেন বিচারক।
বিচারক বলেছেন, রোহিঙ্গা গণহত্যার দায় এড়াতে পারে না মিয়ানমার। মামলায় মিয়নমার যথাযথ সহযোগিতা করেনি বলেও অভিযোগ করেছে আদালত। এই মামলা নিয়ে মিয়ানমার যে আপত্তি করেছে সেটি গহণযোগ্য নয় বলেও জানিয়েছেন বিচারক।
হেগের স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারী) সকাল ১০টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা) রায় পড়া শুরু করেন আদালতের প্রেসিডেন্ট আব্দুল কাওয়াই আহমেদ ইউসুফ।
আইসিজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এ রায় ঘোষণা সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে। রায় ঘোষণায় এক ঘণ্টারও বেশী সময় লাগবে বলে খবরে জানানো হয়।
আইসিজে রোহিঙ্গা গণহত্যা, সহিংসতা ও নিপীড়নের প্রশ্নে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী আদেশ দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা ওই মামলার শুনানি হয় গত বছরের ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর। তারপর ১৭ বিচারক গোপন বৈঠক করেছেন।
এই রায় শোনার জন্য গোটা বিশ্ববাসী বিশেষ করে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। গাম্বিয়া আর্জিতে ৬টি অন্তর্বর্তী আদেশের জন্য আবেদন করেছিল। তবে গাম্বিয়ার আর্জির ছয়টি পদক্ষেপের সবগুলোর বিষয়ে আদালতের আদেশ দেয়ার সম্ভাবনা কম। গণহত্যা বন্ধসহ রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় জরুরী যেসব পদক্ষেপ চাওয়া হয়েছে সে ব্যাপারে আদেশ আসতে পারে।
এখানে উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা নিষ্পত্তি হতে বহু বছর সময় লাগে। তাই মামলা দায়েরকারী মূল মামলার পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিকার চেয়েও আবেদন করেন। যার প্রেক্ষেতে এই অন্তর্বর্তী আদেশ দিতে রাজি হয়েছে আইসিজে।
এর আগে গত (১৩ জানুয়ারী) গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল আবু বকর এম তাম্বাদুর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে এক পোস্টে আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারী) আইসিজে রোহিঙ্গা গণহত্যার ঘটনায় জরুরী পদক্ষেপ চেয়ে করা মামলার রায় জানাবেন বলে জানান।
আইসিজের এ ঐতিহাসিক আদেশের প্রতি ঢাকার ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। এ আদেশের ওপর নির্ভর করে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ঢাকার ভবিষ্যৎ কৌশল নির্ধারণ করা হবে বলে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সূত্রে জানা গেছে।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা, ধর্ষণ ও নির্যাতন চালায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধরা। জীবন বাঁচাতে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। ওই ঘটনাকে গণহত্যা আখ্যা দিয়ে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর আইসিজেতে মামলা করে গাম্বিয়া।
এ মামলার ওপর গত ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর নেদারল্যান্ডসের হেগে শুনানি হয়। সেখানে মিয়নিমার নেত্রী অং সান সু চি নিজের দেশ ও সেনাবাহিনীর পক্ষে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন, তারা রোহিঙ্গাদের ওপর কোনো নির্যাতন চালায়নি। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার মুখেই নাকি লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে বাংলাদেশ আশ্রয় নিয়েছে।
এ নিয়ে বিশ্ব জুড়ে সমালোচিত হয়েছেন এক সময় শান্তিতে নোবেল পাওয়া অং সান সু চি। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.