বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: উত্তর কোরিয়া তাদের প্রথম পারমাণবিক চালিত সাবমেরিনের নতুন ছবি প্রকাশ করেছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট কিম জং উন সাবমেরিনটি পরিদর্শন করছেন।
সাবমেরিনটি আকারে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু পারমাণবিক অ্যাটাক সাবমেরিনের সমতুল্য।
ছবিতে দেখা গেছে, গাইডেড-মিসাইল সক্ষম এই সাবমেরিনটি একটি ইনডোর নির্মাণকেন্দ্রে রয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় এটি এখনও পানিতে নামানো হয়নি। পারমাণবিক চালিত সাবমেরিন নির্মাণ কিম জং উনের দীর্ঘদিনের লক্ষ্য ছিল, যা তিনি প্রথম ২০২১ সালে ক্ষমতাসীন দলের কংগ্রেসে উন্মোচন করেছিলেন।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, দক্ষিণ কোরিয়াকে পারমাণবিক চালিত সাবমেরিন নির্মাণের অনুমোদন দেয়ায় পিয়ংইয়ংয়ের এই প্রকল্পে নতুন গতি এসেছে।
পারমাণবিক সাবমেরিনের প্রধান সুবিধা হলো, পর্যাপ্ত রসদ থাকলে এটি দীর্ঘদিন পানির নিচে থাকতে পারে, যেখানে প্রচলিত সাবমেরিনগুলো নিয়মিত ভেসে উঠে ডিজেল চালানো ও ব্যাটারি চার্জ করতে হয়। এছাড়া পারমাণবিক সাবমেরিন দ্রুতগামী ও নীরব।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও ভারত পারমাণবিক সাবমেরিন প্রযুক্তিতে দক্ষ। নতুন সাবমেরিনটির ডিসপ্লেসমেন্ট প্রায় ৮৭০০ টন, যা যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া শ্রেণির বেশিরভাগ পারমাণবিক অ্যাটাক সাবমেরিনের সমতুল্য।
কিম জং উন এই সাবমেরিনের গুরুত্ব পুনরায় তুলে ধরে বলেছেন, পিয়ংইয়ংয়ের প্রতিরক্ষা নীতি সর্বশক্তিশালী আক্রমণাত্মক সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে গড়ে তোলা হয়েছে এবং এই সক্ষমতাই জাতীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে বড় ঢাল।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণকে উত্তর কোরিয়ার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন এবং তা মোকাবিলার প্রয়োজনীয়তাও উল্লেখ করেছেন।
তবে সিউলের ইহওয়া উইমেন্স ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক লেইফ-এরিক ইজলি বলেছেন, কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনার জন্য মূলত পিয়ংইয়ং নিজেই দায়ী।
তার মতে, পারমাণবিক চালিত সাবমেরিন বাড়লে অস্থিরতা বেড়ে যেতে পারে, এবং এই অস্ত্র প্রতিযোগিতার দায় কিমকেই নিতে হবে।
কিম জং উন ২০২১ সালে ঘোষিত পাঁচ বছরের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশের সামরিক সক্ষমতা ব্যাপকভাবে বাড়ানোর তদারকি করছেন। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে পৌঁছাতে সক্ষম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকল, এবং নৌবাহিনীর জন্য নতুন গাইডেড-মিসাইল ডেস্ট্রয়ার।
চলতি বছর দ্বিতীয় ডেস্ট্রয়ারটি উদ্বোধনের সময় উল্টে যাওয়ার ঘটনায় আলোচনায় আসে; তবে পরে তা মেরামত করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
নতুন সাবমেরিন পরিদর্শনের সময় কিম বলেন, ডেস্ট্রয়ার ও পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণ নৌবাহিনীর যুদ্ধক্ষমতা জোরদারের জন্য বড় অগ্রগতি। #















