বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চলতি শতকের শেষের মধ্যে মেরু ভালুকদের পুরোপুরি বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কার মাঝে নতুন আশার সংকেত পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সাম্প্রতিক গবেষণা দেখিয়েছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে মেরু ভালুকদের ডিএনএতে পরিবর্তন আসছে। মেরু ভালুকেরা তাদের জাম্পিং জিনের কারণে উষ্ণ জলবায়ুতে বেঁচে থাকার জন্য খাপ খাইয়ে নিতে পারে।
স্প্রিংগার ন্যাচার জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। গবেষকরা উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব গ্রিনল্যান্ডের ১৭টি মেরু ভালুকের রক্তের নমুনা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পেয়েছেন।
গবেষণায় জাম্পিং জিনকে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই জাম্পিং জিন হলো জিনোমের ছোট ছোট অংশ, যা অন্যান্য জিনের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে। দেখা গেছে, দুটি অঞ্চলের তাপমাত্রার সঙ্গে এর সম্পর্ক ও অভিব্যক্তিতেও পরিবর্তন এসেছে।
গবেষকরা দেখেছেন, উষ্ণতার বৃদ্ধি দক্ষিণ-পূর্ব গ্রিনল্যান্ডের মেরু ভালুকদের জাম্পিং জিনের কার্যকারিতা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি করেছে। যা জলবায়ু ও উষ্ণতার সঙ্গে সম্পর্কিত জিনগুলোর কাজ বদলাতে সাহায্য করছে। এই পরিবর্তনগুলো মেটাবলিজম, তাপ‑স্ট্রেস ও খাদ্য ব্যবস্থাপনায় প্রভাব ফেলছে। আশা করা যাচ্ছে, উষ্ণ পরিবেশে বেঁচে থাকার জন্য এটি একটি অভিযোজনের ইঙ্গিত।
গবেষণা দলের প্রধান ড. অ্যালিস গডেন বলেন, ‘তাপমাত্রা বাড়ার কারণে দক্ষিণ-পূর্ব গ্রিনল্যান্ডের ভালুকদের ডিএনএতে জাম্পিং জিনের সক্রিয়তা বেড়েছে।’ গবেষকদের মতে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে বাসস্থান ও খাদ্যের উৎস পরিবর্তনের কারণে ভালুকদের বংশগতিতেও পরিবর্তন আসছে। ডিএনএ‑র এমন পরিবর্তনে চর্বি প্রক্রিয়াজাতকরণের জিন অভিব্যক্তিতেও পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে।
অ্যালিস গডেন আরও বলেন, এই ফলাফল মেরু ভালুকদের জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার একটি জিনগত খসড়া। যা ভবিষ্যতের সংরক্ষণ প্রচেষ্টার জন্য প্রযোজ্য হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমরা সন্তুষ্ট হয়ে বসে থাকতে পারি না। এটি কিছুটা আশা দিচ্ছে, তবে এর মানে এই নয় যে, মেরু ভালুকদের বিলুপ্তির ঝুঁকি কমেছে। তাদের রক্ষায় আমাদের এখনও যা করা সম্ভব সবকিছু করতে হবে।’ #















