রানীনগরে মাদকের মিথ্যে হয়রানি মামলা থেকে রক্ষা পেতে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন
নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর রানীনগরে মিথ্যে মাদক মামলার হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে পুলিশের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগীরা।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাবে ভুক্তভোগী সোনামুলের পরিবার ও এলাকাবাসীর আয়োজনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সোনামুলের খালাতো ভাই আব্দুস সোবহান।
লিখিত বক্তব্য থেকে জানা যায়, মাদক ব্যবসায়ীকে ধরিয়ে দেয়ার জেরে সোনামুল খন্দকারকে (২৫) মিথ্যে মামলা দেয়া হয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীর সাথে রানীনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সরকার ইফতে খারুল মোকাম্মেল ও এএসআই লুৎফর রহমান যোগসাজস করে মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন।
এ ছাড়া এ সাজানো মামলায় উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের ইন্তাজের ছেলে নিরহ গ্রীল মিস্ত্রী মানিক (২৫) ১মাস ১০ দিন জেল হাজত খেটে জামিনে বেরিয়েছেন। সোনামুল খন্দকার উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের সমতুল খন্দকারের ছেলে।
গত ২১ মে উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের পাগলীর মোড়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে উপ-পরিদর্শক (এসআই) সরকার ইফতে খারুল মোকাম্মেল ও এএসআই লুৎফর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় বাজারে সোনামুল খন্দকারের কথিত অফিসের দিকে পুলিশ যাওয়ার সময় তিনজন লোক দৌড় দিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে গ্রীল মিস্ত্রী মানিক নামে এক যুবককে আটক করা হয়। স্বাক্ষীদের উপস্থিতিতে মানিকের শরীর তল্লাশি করে ৯ পুরিয়া হেরোইন উদ্ধার করা হয়।
এ ছাড়া মামলার ২ নম্বর আসামী সোনামুল খন্দকার ও ৩ নম্বর আসামী হাতকাটা জহুরুল (২৬) দৌড় দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় সোনামুল খন্দকার পালানোর সময় ১৩ পুরিয়া হেরোইন ফেলে যায় এবং তার অফিসের চৌকির তোষকের নিচ থেকে ৮৭ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয় যা সম্পূর্ন মিথ্যা ও উদ্যেশ্য প্রণোদিত।
আরো জানা যায়, সোনামুল খন্দকার শান্তিপ্রিয় ছেলে, কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। পাগলীর মোড়ে তার কোন অফিস ঘর নাই এবং ওই মোড়ে দীর্ঘদিন থেকে তার আসা যাওয়া নাই। মামলার বাদী এসআই সরকার ইফতে খারুল মোকাম্মেল ভুল তথ্য দিয়ে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছেন।
গত ২৫/০৩/২০১৯ তারিখে সন্ধ্যায় ৭৮ পিচ ইয়াবা সহ এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ইলাহীকে থানা পুলিশে ধরিয়ে দিতে সোনামুল সহ কয়েকজন যুবক সহযোগিতা করেন। এরই জের ধরে উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের মাদকের মাদক সম্রাট মীর কাশিম (আপন) সোনামুলকে ফাঁসানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। মাদক সম্রাট আপন তৎকালীন থানার অফিসার ইনচার্জ সিদ্দিকুর রহমান কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে টাকার প্রভাব খাঁটিয়ে মাদক দিয়ে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফইম উদ্দিন, বাদী এসআই সরকার ইফতে খারুল মোকাম্মেল ও এএসআই লুৎফর রহমানের প্রতিনিয়ত হুমকি ধামকিতে ভুক্তভোগী পরিবার ভীত হয়ে পড়েছেন। আর সোনামুল দীর্ঘদিন থেকে পলাতক জীবন যাপন করছেন। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ন্যায় বিচারের দাবী জানানো হয়।
পাগলির মোড়ে ওই অফিসের মালিক আসাদ সরদার বলেন, মোড়ে সোনামুলের যে অফিস ঘরের কথা বলা হয়েছে ওই ঘরটি দীর্ঘদিন থেকে ভাড়া নিয়ে আমি ব্যবসা করে আসছি। সেখানে সোনামুলের কোন সম্পৃক্ত নাই। যেহেতু ওই ঘর থেকে মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। সেহেতু আমার নামে মামলা হওয়া কথা। কিন্তু উদ্যেশ্য প্রনোদিত ভাবে সোনামুলের নামে মিথ্যে মামলা দেয়া হয়েছে।
রানীনগর থানার ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফইম উদ্দিন বিটিসি নিউজকে বলেন, মামলার তিনজন আসামী মাদকের সাথে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টির সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। চার্জশিট আদালতে জমা দেয়া হয়েছে। আদালতেই তারা বুঝবে। তবে কাউকে হুমকি দেয়ার বিষয়টি মিথ্যা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ভুক্তভোগী সোনামুল খন্দকারের বাবা সমতুল খন্দকার ও মা বেবি খাতুন, মামলার ১ নম্বর আসামী মানিক, আসাদ সরদার সহ প্রায় ৫০ জন এলাকাবাসী।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নওগাঁ প্রতিনিধি মো: আব্বাস আলী। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.