চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে হাটহাজারীর পর এবার রাউজান উপজেলায় ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করেন পরিবেশ অধিদপ্তর। গতকাল ৪ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) দিনভর অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালতের পরিচালিত অভিযানে চারটি ইটভাটাকে ১২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং গুঁড়িয়ে দিলেন চিমনিও।
পরিবেশ অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাউজান উপজেলার রশিদার পাড়া, পূর্ব রাউজান ও ডাবুয়া এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়।
ইটভাটা চারটিতে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৯) ও বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এর বেশ কয়েকটি ধারা লঙ্ঘন করায় অর্থদণ্ডও করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পরিবেশ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রেজওয়ান-উল-ইসলাম।
অভিযানে রাউজানের রশিদার পাড়ার মেসার্স শাহসুন্দর ব্রিকস-সিবিএমকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা ও ভাটার চিমনিসহ কিলন (চুল্লি) ভেঙে গুড়িয়ে দেয় ভ্রাম্যামান আদালত। পাশাপাশি মেসার্স শাহসুন্দর ব্রিকস-এসবিএম নামের আরেকটি ইটভাটাকেও ৩ লাখ টাকা জরিমানা ও চিমনি গুড়িয়ে দেওয়া হয়।
পূর্ব রাউজানের খাজা গরীবে নেওয়াজ ব্রিকসকে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এছাড়া ডাবুয়ার কলমপতি গ্রামের মেসার্স কাদেরিয়া ব্রিকসকে জরিমানা করা হয়েছে ২ লাখ টাকা। এ দুটি ইটভাটার চিমনিও ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মোজাহিদুর রহমান, রিসার্চ অফিসার মো. আশরাফ উদ্দিন, পরিদর্শক চন্দন বিশ্বাস ও ডাটা এন্ট্রি অপারেটর কাজী ইফতেকার উদ্দিন।
অভিযানে সহায়তা করেছে, র্যাব-৭, আনসার, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস।
এর আগে ২ ডিসেম্বর হাটহাজারী উপজেলায় আটটি অবৈধ ইটভাটাকে ১৬ লাখ টাকা জরিমানা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। সেগুলোর কয়েকটির চিমনি ও কিলন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহে সাতকানিয়া ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলার অবৈধ ইটভাটা গুলোতে অভিযান পরিচালনা করা হবে। সরকার পরিবেশ সংরক্ষণ ও রক্ষায় এক চুল পরিমাণও ছাড় নেই। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ অভিযান পরিচালিত করা হবে।
এদিকে চট্টগ্রামের পরিবেশ সংগঠন গ্রীন চট্টগ্রাম এ্যালায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা, পরিবেশ সংগঠক ও সাংবাদিক স ম জিয়াউর রহমান রাউজান উপজেলায় চারটি ও হাটহাজারী উপজেলায় আটটি অবৈধ ইটভাটা ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়ায় এবং জরিমানা করায় পরিবেশ অধিদপ্তরের টিমকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, কতিপয় ইটভাটা মালিক রাজনৈতিক ক্ষমতা ও দাপটকে কাজে লাগিয়ে অবৈধভাবে ইটভাটা গুলো পরিচালনা করে আসছে।
এছাড়াও তিনি দ্রততম সময়ের মধ্যে সাতকানিয়া, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বাঁশখালী,কর্ণফুলী, লোহাগড়া ও চন্দনাইশ উপজেলায়ও অভিযান পরিচালনা করার অনুরোধ জানিয়েছেন। এসব অবৈধ ইটভাটা গুলো বনের কাঠ করার পাশাপাশি সাবাড় করছে ফসলি জমির টপসয়েল, যার ফলে নষ্ট হচ্ছে কৃষি জমি এবং কৃষক হারাচ্ছে মূলধন – কৃষি পণ্য। অবৈধ এ ইটভাটা গুলোকে রোধ করা না গেলে একদিকে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ আর অন্যদিকে প্রভাব পরবে কৃষিতে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান স. ম. জিয়াউর রহমান। #

















