নিজস্ব প্রতিবেদক: পাবনা ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থীর সমর্থ ও সাধারণ মানুষের ওপর জামায়াত শিবিরের সশস্ত্র হামলার অভিযোগ তুলে পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং পাবনা-৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব বলেছেন ‘জামায়াত নেতা তালেব মন্ডলের গাড়ি থেকে নেমে অস্ত্রধারীরা গুলি করে আবার ঐ গাড়িতেই চলে যায়’।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) দুপুর ২টায় পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
হাবিবুর রহমান হাবিব দাবি করেন, জামায়াতের জেলা আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডলের গাড়ি থেকে অস্ত্রধারী তুষার মন্ডল নেমে গুলি চালায় এবং পরে একই গাড়িতে করেই তালেব মন্ডলের সঙ্গে দ্রæত স্থান ত্যাগ করে। এ সময় বিএনপির কমপক্ষে ১১ জন কর্মী-সমর্থক আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। হামলাকারীরা বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
তিনি আরও বলেন, অস্ত্রধারী তুষারের বাড়ি আবু তালেব মন্ডলের বাড়ির পাশে এবং তিনি তালেব মন্ডলের ভাতিজা মামুন মন্ডলের সহযোগী। হামলার সময় তুষারসহ একদল সশস্ত্র জামায়াত শিবির কর্মী একটি গাড়ি ভর্তি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে লক্ষীকুন্ডা এলাকায় প্রবেশ করে এবং মানুষকে পবিত্র কোরআন শরীফ ছুয়ে দাড়িপাল্লায় ভোট দিতে শপথ করাচ্ছিল। এ সময় স্থানীয় জনগণ প্রতিরোধ করলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার পর তুষারকে প্রধান আসামি এবং জামায়াত আমির আবু তালেব মন্ডলকে হুকুমের আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে হাবিব জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রশাসন নিজেরাই জামায়াত শিবিরের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ভীত। পুলিশ ও সাংবাদিকরা তুষারের বাড়িতে গেলে তার বাবা তাহের মন্ডল জানান, তুষার কোথাও গা-ঢাকা দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “বিএনপি সব সময় সংঘর্ষ এড়াতে চায়। কিন্তু আক্রমণ হলে জনগণ ও আমাদের কর্মী সমর্থকরা নিজ নিজ এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২৭ নভেম্বর চরগড়গড়ী এলাকায় জামায়াতের কিছু মহিলা কর্মী ভোট দিলে বেহেশতের প্রতিশ্রুতি দেন, পবিত্র কোরন শরীফ স্পর্শ করে শপথ গ্রহণ করান এবং জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার নম্বর সংগ্রহ করছিলেন। এর প্রতিবাদ করায় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক মক্কেল মৃর্ধা প্রতিবাদ করলে জামায়াত আমির আবু তালেব মন্ডল সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে তার পরিবার ও সহযোগীদের ওপর হামলা চালান। এতে মক্কেল মৃধা ও তার ছেলে মারাত্মকভাবে আহত হন। আরও কয়েকজনকেও কুপিয়ে জখম করা হয়।
স্থানীয়দের প্রতিবাদে তীব্র প্রতিরোধ শুরু হলে তালেব মন্ডলের গাড়িতে থাকা দেহরক্ষী তুষার উপর্যুপরি গুলি চালিয়ে এলাকা ত্যাগ করে বলে অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত শহীদ বুলবুল কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাকিল নূর বলেন, “আমরা শিবিরের গুজবের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। তুষার ছাত্রদলের কেউ নয়। আমাদের আহ্বায়ক কমিটিতে ‘পাঠাগার সম্পাদক’ নামে কোনো পদ নেই। তুষার নামের কোনো সদস্যকেও আমরা চিনি না। জামায়াত শিবির বিভ্রান্ত্রি ছড়াতে এসব মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে।”
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, নির্বাচনে বিএনপির জনপ্রিয়তা ঠেকাতে জামায়াত পরিকল্পিতভাবে উস্কানি, সন্ত্রাসী হামলা ও অপপ্রচার চালাচ্ছে।
হাবিব বলেন, “বিএনপি শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আমাদের সংযমকে দুর্বলতা ভেবে ভুল করবেন না। প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাই।”
পাবনা জেলা বিএনপি নেতা আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মান্নান মাষ্টার, আব্দুস সামাদ খান মন্টু, পুর্ণিমা ইসলাম, শেখ তুহিন, নুর মোহাম্মদ মাসুম বগা, আনিছুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জেলা জামায়াত আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমাদের নির্বাচনী গণসংযোগে বিএনপি হামলা চালায় ও গুলি করে। অস্ত্রধারী তুষার জামায়াত শিবিরের কেউ নয়। বিএনপি আমাদের ওপর ভিত্তিহীন মিথ্যা অভিযোগ চাপাচ্ছে।”
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম / পাবনা। #















