নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের একমাত্র নিরাপদ দল। বিএনপি যখন ক্ষমতায় থাকে তখন দেশের মানুষ সব থেকে ভাল থাকে। দেশে উন্নয়ন হয়। এছাড়াও আইন শৃংখলা থেকে শুরু করে গণতন্ত্র সমুজ্জোল থাকে। দেশে বৈদেশিক বিনিয়গ এবং রেমিডেন্স বাড়ে। সেইসাথে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন থাকে বলে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনসচেতনতামূলক প্রচারনায় আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনী প্রস্তুতি গ্রহনের লক্ষ্যে কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং পবা-মোহনপুর আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এডভোকেট শফিকুল হক মিলন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ধানের শীষ হচ্ছে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া, তিনবারের সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দেশের সকল মানুষের। ধানের শীষ হচ্ছে ঐক্যের প্রতিক। বিগত সতের বছের বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা শত নির্যাতন সহ্য করে দেশের পতাকা ধরে রেখেছে। সব থেকে বেশী নির্যাতিত হয়েছেন জিয়া পরিবার। বেগম জিয়া স্বামী হারিয়েছেন। হারিয়েছেন নিজ সন্তান ও বসতবাড়ী। এছাড়াও আরেক ছেলে দীর্ঘ্য সতের বছর ধরে রয়েছেন দেশের বাহিরে। সেইসাথে তাঁকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে ফরমায়েশি রায়ে সোয়া ছয় বছর জেল খাটিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে জেলের মধ্যে রেখে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো পতিত সরকারের প্রধান খুনি হাসিনা। শুধু তাইনয় তাঁকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা পর্যন্ত করতে দেয়নি। ধীরে ধীরে তিনি নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হন। সে থেকেই তিনি বার বার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন। গত তিনদিন ধরে তিনি এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। তিনি বেগম জিয়ার সুস্থ্যতার জন্য সবার নিকট দোয়া চান।
মিলন বলেন, পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী বলে বেড়াতেন তাঁর কোথাও কিছু নাই। তিনি কোন দূর্নীতির সাথে যুক্ত নয়। এসব কথা বলে প্রতিনিয়ত দেশের মানুষকে ধোকা দিতেন তিনি। তাঁর ছেলে আমেরিকাতে টাকার পাহাড় গড়েছেন। বিলাসবহুল বাড়ি করেছেন। অথচ তার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় কোন কিছুই করেন না। শুধু সজিব নয় শেখ হাসিনা নিজেও হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন। গত দুইদিন আগে অগ্রণী ব্যাংকের লকার থেকে এনবিআর এর সদস্যরা প্রায় সাড়ে আটশত কেজি সোনা উদ্ধার করেছে। এছাড়াও ঢাকায় রয়েছে তার জমি। শেখ হাসিনাসহ তার পুরো পরিবার ও আত্মীয়স্বজন এবং তার দোসররা এক কথায় চোর ও দুর্নীতিবাজ বলে আখ্যায়িত করেন তিনি।
মিলন বলেন, বেগম খালেদা জিয়া হচ্ছেন আপোষহীন একজন নেত্রী। কারন তিনি কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি। কখনো দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি। অথচ শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় দেশের মানুষকে অকুলে ভাসিয়ে ২৫ মার্চ এর রাতে পাকিস্তানী বাহিনীর নিকট আত্মসমর্পন করে পাকিস্তানে পালিয়ে যান। দেশের এই অবস্থা দেখে মেজর জিয়াউর রহমান নিজ স্ত্রী, সন্তানদের কথা চিন্তা না করে বাংলাদেশে চলে আসেন। এসে দেশের স্বাধীনতা ঘোষনা করেন। সেইসাথে তিনি যুদ্ধও করেন। শুধু যুদ্ধ নয় তিনি এক সময়ে দেশের হাল ধরেন। দেশকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেন বলে জানান মিলন।
তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান এর ন্যায় শেখ হাসিনাও একই পন্থা অবলম্বন করেন। তিনি তিন বার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। সর্বশেষ গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিজ প্রাণ বাঁচাতে পরিবারের সকল সদস্যদের নিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন। তিনি দেশের মানুষ তথা নিজ দলের নেতাকর্মীদের কথা ভাবেননি। যেমন ভেবেছিলেন না শেখ মুজিবুর রহমানও। কিন্তু তারুন্যের অহংকার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৫আগস্ট পরবর্তীতে দেশের মানুষ তথা আওয়ামীলীগেরও যেন কোন ক্ষয়ক্ষতি না হয় এমনকি বাড়িঘরে কেউ যেন আগুন দিতে না পারে জেন্য বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের দিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনকে বানচাল করতে জামায়াতে ইসলাম নামে একটি দল নানা ষড়যন্ত্র করছে। তারা একবার পিআর, আরেকবার সংস্কার, এখন আবার গণভোট নিয়ে মাঠে নেমেছে। কিন্তু তারা প্রায় ছয় থেকে আট মাস আগে নির্বাচন করার জন্য এমপি প্রার্থীসহ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পর্যন্ত প্রার্থী ঘোষনা করেছেন। তারা প্রতিদিন জনগণের বাড়ি বাড়ি যেয়ে জান্নাতের টিকিট বিক্রি করছেন (নাউযবিল্লাহ)। এই দুনিয়াতে থেকে কেউ বেহেস্তে যাবে এর গ্যারান্টি দিতে পারেনা। অথছ ঐ মোনাফেক দল এগুলো বলে আল্লাহর সাথে শিরক করছে। সেইসাথে জনগণকে ধোকা দিচ্ছে। যতই তারা গোপনে হাতের মধ্যে ছোট কোরআন শরীফ রেখে ভোট চান, আপনারা কেউ এতে বিভ্রান্ত হবেন না বলে জানান তিনি। কারণ তারা যা করছে এর ফল তাদেরই ভোগ করতে হবে। কারন এই দল সর্বদা জনগণের সাথে মোনাফেকী করেন।
তিনি বলেন, এই দল ১৯৪৭ সালে ভারত পািকস্তান যুদ্ধের সময় ভারতের পক্ষে ছিলো, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো। আবার ১৯৮৬ সালে স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে হটে গিয়ে তৎকালিন প্রেসিডেন্ট হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ এর সাথে আঁতাত করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলো। সেই থেকে তারা জাতীয় মোনাফেকে পরিণত হয়ে আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এই দেশদ্রোহী ও দেশবিরোধী দল হতে সবাইকে সাবধান থাকার পরামর্শ দেন তিনি। সেইসাথে আসছে নির্বাচনে দলমত নির্বিশেষে ধানের শীষে ভোট দিয়ে দেশের উন্নয়ন ও গনতন্ত্র সমুজ্জল রাখতে সহায়তা করার আহ্বান জানান মিলন। বক্তব্য শেষে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার বিকেলে পবার বড়গাছি ইউনিয়নে ৬নং ওয়ার্ড বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন আয়োজনে কর্মী সভায় বড়গাছী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুরাদ আলী, বড়গাছী ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নজিবুল ইসলাম শাহিন এবং বড়গাছী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হালিম এর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পবা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ, নওহাটা পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুনর সরকার জেড, বিএনপি নেতা জালাল উদ্দিন, আশরাফ উদ্দিন, রহমান মেম্বর, আলহাজ¦ জেকের আলী, রায়হান উদ্দৌলা পান্না, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কে.এইচ রানা শেখ, যুবনেতা সাইনুল ইসলাম শাহিন ও নওহাটা পৌর ছাত্র দলের সদস্য সচিব সোহেল রহমান, মহিলা দল নেত্রী মুবাশ্বিরা, ময়না, বড়গাছী ইউনিয়নের সাবেক সদস্য কহিনুর ও পারুল। #

















