মেতে উঠলেন তারা বাঁধনহারা উল্লাসে। ৯ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার গ্যালারিতেও তখন উচ্ছ্বাসের জোয়ার। প্রায় দেড়শ বছরের পুরোনো ক্লাবটিতে এমন উৎসবের উপলক্ষ এলো কত বছর পর!
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তখন ডুবে হতাশার আঁধারে। অনেক দিন ধরেই দুঃসময়ের চক্রে থাকা দল নেমে গেল যেন নতুন তলানিতে। ক্লাবের ইতিহাসে প্রথমবার হেরে গেল তারা চতুর্থ স্তরের ক্লাবের কাছে!
ইংলিশ লিগ কাপের ম্যাচটি উপহার দিয়েছে এমন ঐতিহাসিক ফল। চতুর্থ স্তরের ক্লাবটির বিপক্ষে ৭৫ মিনিটের আগ পর্যন্ত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড পিছিয়ে ছিল ২-০ গোলে। পরে ঘুরে দাঁড়িয়ে সমতা ফেরালেও শেষ রক্ষা হয়নি বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্লাবগুলোর একটির। ২৬ শটের ম্যারাথান টাইব্রেকার ১২-১১ গোলে জিতে নিয়েছেন গ্রিমসবি টাউন এফসি।
ম্যানচেস্টার থেকে ১২০ মাইল পূর্ব দিকের ছোট্ট শহর ক্লিসথর্পসের ক্লাব এই গ্রিমসবি টাউন। ১৮৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ক্লাবটি একসময় মোটামুটি পরিচিত ক্লাব ছিল ইংলিশ ফুটবলে। ১৯৩৮-৩৯ মৌসুমে এফএ কাপের সেমি-ফাইনালে খেলে তারা, লিগ কাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে যেতে পারে ১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে।
তবে এখন চতুর্থ স্তরে খেলাটাই বলে দিচ্ছে ক্লাবের অবস্থা। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে তাদের দেখা হলো ৭৭ বছর পর!
কিন্তু মাঠের ফুটবলে এ দিন চমক দেখায় তারা। ৩০ মিনিটের মধ্যেই তারা এগিয়ে যায় ২-০ গোলে। সেই ব্যবধান ধরে রাখে পরের প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে। দ্বিতীয়ার্ধে আরও একবার বল জালে পাঠায় তারা। তবে গোল হয়নি অফসাইডের কারণে।
টাইব্রেকারে প্রথম পাঁচ শটে সমতা ছিল ৪-৪ গোলে। এরপর সাডেন ডেথ চলতেই থাকে। দুই দলের গোলকিপারও টাইব্রেকারে বল পাঠান জালে।
১৮ মিনিটের পেনাল্টি শুটআউট শেষ হয় এমবুমোর ব্যর্থতায়। টাইব্রেকারে প্রথম শট কাজে লাগালেও পরেরটিতে ব্যর্থ হন গত মাসে দলে যোগ দেওয়া ফরোয়ার্ড।
গ্রিমসবির গোলকিপার ক্রিস্টি পিম নিজে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সমর্থক। প্রিয় ক্লাবের এমন বিদায়ে তার হৃদয়ে আঘাতও লেগেছে কিছুটা। তবে নিজেদের অর্জনের উচ্ছ্বাস ছুঁতে চাইছে আকাশ।
“এখনও ঠিক হজম হচ্ছে না। আমি ম্যান ইউনাইটেডের ভক্ত। কিছুটা খারাপও তাই লাগছে। তবে এই ধরনের রাতগুলোর জন্য তো আমরা ফুটবল খেলি। অসাধারণ জয়।”
“টাইব্রেকারে আমার আরেকটু ভালো করা উচিত ছিল। তবে একটি সেভ করেছি দলকে লড়াইয়ে জিইয়ে রাখতে। ছেলেরা বাকি কাজ করেছে। দুর্দান্ত জয়।” #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.