নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় অসময়ে তরমুজ চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন আবুল বাসার নামে এক কৃষক। বর্ষাকালের মতো কঠিন মৌসুমে সফলভাবে তরমুজ উৎপাদন করে এখন আলোচনায় তিনি। খরচ তুলনামূলক কম, ফলন বেশি এবং বাজারে চাহিদা থাকায় এ চাষাবাদ তাকে এনে দিয়েছে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা। আর এতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন আশপাশের অনেক কৃষকও।
মো. আবুল বাসার সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী গ্রামের কৃষক স্থানীয় আবুল খায়েরের ছেলে। কৃষির প্রতি দীর্ঘদিনের আগ্রহ থাকলেও এবারই প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে তরমুজ চাষ করেন তিনি। মাত্র ১৫ শতক জমিতে শশার পাশাপাশি মাচার ওপরে ‘বাংলালিংক’ জাতের তরমুজের চাষ করেন। মাচার নিচে করেছেন মাছ চাষ। এক সঙ্গে উৎপাদনের ফলে খরচ সাশ্রয় হয়েছে অনেকটাই।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মাচা। সেই মাচায় অসংখ্য ছোট বড় তরমুজ ঝুলে আছে। তরমুজের পাশাপাশি রয়েছে শশা।
কৃষক আবুল বাসার বিটিসি নিউজকে বলেন, পুরো ব্যবস্থাপনায় খরচ হয়েছে মাত্র ২০ হাজার টাকা। আর আড়াই মাসেই গাছে এসেছে ফলন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা ভালো দাম দিচ্ছেন। ফলন ও দামে অনুকূলে থাকায় আমি আশা করছি অন্তত ১ লাখ টাকার বেশি লাভ হবে। এর আগে আমি কখনো বর্ষাকালে তরমুজ চাষ করিনি। তাই বর্ষাকালে তরমুজ চাষ করা একটা বড় চ্যালেঞ্জের ছিল। তবে সঠিক পরিকল্পনা, পরিচর্যা আর ভাগ্য অনুকূলে থাকায় এবার ভালো ফলন পেয়েছি। মাচায় চাষ করায় জলাবদ্ধতার প্রভাব পড়েনি। ফলন দেখে অনেকেই এখন এই পদ্ধতিতে চাষে আগ্রহী।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ স্কাউটস সুবর্ণচর মুক্ত রোভার স্কাউটের সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল শিমুল অভিযোগ করে বলেন, সড়ক গুলোর বেহাল দশা হওয়ায় দেশের বিভিন্ন শহর অঞ্চল থেকে আগত বড় বড় পাইকাররা এসে মাঠ পর্যায়ের প্রান্তিক কৃষক থেকে সরারি কিনতে না পারাই সঠিক ও ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে কৃষকদের। তাই প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে উক্ত বিষয়টি বিবেচনা করে জনস্বার্থে দ্রুত সড়কটি সংস্কারের জোর দাবী জানান।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বিটিসি নিউজকে জানান, অল্প জমিতে ভালো ফলন হওয়ায় কৃষক আবুল বাসার ভাইয়ের আনন্দের শেষ নাই। তার সফলতা দেখে এলাকার অন্য কৃষকরাও উৎসাহিত হচ্ছেন। এবং সাফল্য শুধু তার পরিবারের মুখেই হাসি ফোটায়নি, আশেপাশের কৃষকদের মাঝেও এনে দিয়েছে নতুন সম্ভাবনার আলো।
সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হারুন অর রশিদ বিটিসি নিউজকে বলেন, চলতি মৌসমে উপজেলায় মোট ১৫ হেক্টর জমিতে বর্ষাকালীন তরমুজ চাষবাদ হয়েছে। এর মধ্যে মো. আবুল বাসার অন্যতম। তার এমন উদ্যোগ সমগ্র উপজেলার কৃষির নতুন সম্ভাবনার দিক দেখাচ্ছে। তবে সিজিন্যাল তরমুজের চাইতে এ তরমুজের স্বাদ অনেকটাই বেশি। যে কেউ সবজি, ফলমূল চাষ করতে চাইলে তাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা সবসময়ই করা হয়। তিনি আরো বলেন, তার এ সাফল্য দেখে উপজেলার অনেকেই তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তারা বর্ষাকালীন সবজি চাষের প্রতি বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.