রাজশাহীতে অবৈধ ও চোরাই মোবাইল ব্যবসা: বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা

ফাইল ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে অবৈধ ও চোরাই মোবাইল ব্যবসা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পর্যাপ্ত নজরদারীর অভাবে এই অপরাধ প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে দেশের রাজস্ব ক্ষতির পাশাপাশি নাগরিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজশাহীতে বিভিন্ন স্থানে অবৈধ, রাজস্ব ফাকি দেওয়া, চোরাই মোবাইল দোকানে, বাসা-বাড়ী, বিভিন্ন নামে অনলাইনে বিক্রয় ডটকম দেদারসে বিক্রি হচ্ছে এসব মোবাইল।
রাজশাহীর নিউ মার্কেটের একাধীক দোকান-সহ আলোকার মোড়, কোর্ট স্টেশন, নগরীর মতিহার থানার বিনোদপুর হানুফার মোড়, দরিখরবনা জনৈক ফারজুল ভাড়া বাসায়, কাজলা অক্ট্রার মোড়ে একটি টেলিকম দোকানে পুরাতন মোবাইল ভাঙারি ব্যবসার আড়ালে কাগজ পত্র বিহীন পুরাতন নষ্ট-রিপেয়ার মোবাইল, মোবাইলের পার্টস কোন ধরনের নিয়মনীতি এবং অনুমোদন ছাড়াই বিক্রি করছে। এছাড়াও নওহাটা পৌর বাজার, বানেশ্বর শিবপুর-সহ বিভিন্ন স্থানে রাজস্ব ফাকি দেওয়া, কাগজ পত্র বিহীন মোবাইলের ব্যবসা রমরমা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন মোবাইল দোকানী জানান, মোবাইল চুরি বা ছিনতাই হলে ভুক্তভোগীরা থানায় জিডি করেন। পরে আরএমপি ও জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহযোগীতায় মোবাইল উদ্ধার হয়। তবে তা পর্যপ্ত সংখ্যক নহে। কাগজ বিহীন মোবাইল উদ্ধারে প্রশাসনের নজরদারী বৃদ্ধি হলে এবং পরাতন মোবাইল কেনা-বেচা বন্ধ হবে। সেই সাথে পুরাতন মোবাইল বিক্রি বন্ধ হলে জনভোগান্তি কমবে। অতীতে কিছু ব্যবসায়ী চোরাই মোবাইল বিক্রির অপরাধে গ্রেফতার হলেও, সঠিক তদন্ত ও বিচার না হওয়ায় পুনরায় তারা একই কর্মকান্ড লিপ্ত হয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রযুক্তির অপব্যবহারে দেশে ফেসবুক, বিক্রয় ডট কমসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে চোরাই মোবাইল বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও মোবাইল ট্র্যাকিং এড়াতে মাদারবোর্ড বাদ দিয়ে ডিসপ্লে, ক্যাসিং, ব্যাটারি, আইসি ও অন্যান্য পার্টস আলাদাভাবে বিক্রি করা হচ্ছে।
কমদামে মোবাইল কেনার চাহিদা থাকায় অবৈধ চোরাই পথে আসা মোবাইল পুরাতন, ত্রæটিপূর্ণ, রিপেয়ার মোবাইল নিয়মনীতিহীন ভাবে বিক্রি হচ্ছে। এসকল মোবাইল ক্রয়-বিক্রয় যে আইনবিরোধী তা পাত্তাই দেন না বিক্রেতা ও ক্রেতারা।
ত্রুটিপূর্ণ এবং রিপেয়ার মোবাইল সঠিকভাবে রিপেয়ারের অভাবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। মাত্রাতিরিক্ত রেডিয়েশন মাথা ব্যাথা, হৃদ রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এইসকল পুরাতন বাতিল মোবাইলকে সচল করার জন্য যেসকল ব্যবসায়ী কাজ করেন তাদের অনেকের মোবাইল রিপেয়ারিং সম্পর্কে নেই সাধারণজ্ঞান। উচ্চলাভের আশায় এরা রাতারাতি মোবাইল টেকনিশিয়ান বনে যাচ্ছেন।
সরকারী রাজস্ব ফাকি দেয়া চোরাই মোবাইল ব্যবসা রোধে কঠোর আইন প্রয়োগ, নিয়মিত তদারকি ও সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। এছাড়া, অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর উপর নজরদারি বাড়ানো ও অবৈধ পণ্যের বিজ্ঞাপন বন্ধ করা জরুরি।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে নগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর), মোহাম্মদ রকিবুল হাসান ইবনে রহমান। মোবাইল চুরি বন্ধে আরএমপি সাইবার ক্রাইম ইউনিট সর্বদাই কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও থানা ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), মোবাইল চুরি বন্ধে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন ডটকম ও কাগজ বিহীন মোবাইল ক্রয় ঝুঁকিপূর্ণ এবং আইন বিরোধী। তাই জনসাধারণকে কাজপত্র বিহীন অবৈধ মোবাইল ক্রয়-বিক্রয় বিরত থাকতে হবে। সেই সাথে গণসচেতনতা ও প্রচার বাড়াতে হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.