BTC News | বিটিসি নিউজ

আজ- বুধবার, ১২ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

আজ- ১২ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বিলুপ্তির পথে বরগুনার টেংরাগিরি বন

বিলুপ্তির পথে বরগুনার টেংরাগিরি বন

বরগুনা প্রতিনিধি: উপকূলের তীব্র ঢেউ ও ক্রমবর্ধমান ভাঙনের কারণে বরগুনার টেংরাগিরি সংরক্ষিত বন দ্রুত বিলুপ্তির পথে। গত কয়েক বছরে প্রায় দুই হাজার একর বনভূমি বঙ্গোপসাগরে বিলীন হয়ে গেছে এবং শত শত কোটি টাকার বনসম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, অব্যাহত ভাঙনরোধী পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে বনের অস্তিত্বই হারিয়ে যেতে পারে।

পাকিস্তান সরকার ১৯৬০ সালে বরগুনার টেংরাগিরি বনকে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করে।

স্থানীয়ভাবে ‘ফাতরার বন’ নামে পরিচিত এই বনটির আয়তন ১৩,৬৪৭ একর। বনের পূর্বদিকে কুয়াকাটা, মহিপুর ও আন্দারমানিক নদী, পশ্চিমে লালদিয়া, কুমিরমারাচর, পায়রা ও বিষখালী নদীর মোহনা, উত্তরে সোনাকাটা, নিশানবাড়িয়া ও সখিনা খাল এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। স্বাসূলীয় গাছের আধিক্যের কারণে এটি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় একটি স্থান।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ের তীব্র আঘাতে বনের বিরাট অংশের গাছ উপড়ে মাটিতে পড়ে আছে। ভাটার সময় এসব গাছ দেখা গেলেও জোয়ারে সেগুলো সাগরে হারিয়ে যায়। বনভেতরে প্রায় ৫০০ মিটার এলাকায় গাছের গোড়ার মাটি সরে গেছে এবং এগুলো যেকোনো সময় উপড়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয়রা দাবি করেন, বছরজুড়ে কোটি টাকার বনসম্পদ সাগরে ভেসে যাচ্ছে। বনভূমি সঙ্কোচনের পাশাপাশি বনদস্যুদের কার্যক্রমও আশঙ্কাজনক।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, একশ্রেণির অসাধু চক্র দিনের বেলায় গভীর বনে গাছ কেটে রাতের অন্ধকারে ট্রলারে করে পাচার করছে। এসব গাছ ইটভাটা ও কাঠবাজারে বিক্রি হচ্ছে। উপড়ে পড়া গাছও তারা অবৈধভাবে নিয়ে যাচ্ছে।

২০০৭ সালের ঘূর্ণিঝড় ‘সিডর’ এবং ২০০৯ সালের ‘আইলা’র আঘাতে বনটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এরপর থেকে ভাঙনের হার কয়েকগুণ বেড়েছে। ধুন্দল, কেওড়া, গেওয়া, হেতাল ও রেন্ট্রি প্রজাতির গাছ ইতোমধ্যেই নষ্ট হয়েছে।

পটুয়াখালী বিভাগীয় সহকারী বন সংরক্ষক মো. আমির হোসেন জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিনষ্ট হওয়া গাছগুলো সরানো হচ্ছে না। এই মরা গাছগুলো ঢেউয়ের প্রভাব যাতে উপকূলে না পড়ে তার জন্য বনের ভিতর রাখা হয়। তবে অসাধু ব্যক্তিরা যে বন উজাড় করছে এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কোন তথ্য নেই। যদি কোন অভিযোগ পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

তিনি আরো জানান, টেংরাগিরি বনের ভাঙনরোধে নতুন করে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়া কমাতে ঝাউসহ অন্যান্য প্রজাতির গাছ ঘন করে লাগানো হচ্ছে।

পরিবেশকর্মীরা বলছেন, বন বিলীন হলে উপকূলীয় এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যাবে। তারা টেকসই তটরক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও নজরদারি জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ উপকূলীয় বনটি রক্ষা করতে এখনই জরুরি সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বরগুনা প্রতিনিধি মো. শফিকুল ইসলাম শফিক। #

এইরকম আরও খবর

সর্বশেষ খবর

ব্রেকিং নিউজ
বার্সেলোনায় ফেরা নিয়ে ‘সবসময় কথা বলেন’ মেসি ও তার স্ত্রী-সন্তানরা বিএনপি নেতা প্রভাষক রাসেল আল ইসলাম: আন্দোলনের নামে বিশৃংখলা নৈরাজ্য সৃষ্টি করলে তা প্রতিহত করা হবে চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদান নীতিমালায় সংশোধন আনা হবে দেশে ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে’ সংকট তৈরি করা হয়েছে : মির্জা ফখরুল লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল নির্মিত হলে যেসব সুবিধা পাবে বাংলাদেশ বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে জাপানের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার চালুর সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বসিত প্রধান উপদেষ্টা শেখ হাসিনা মায়ের কোলে থাকা শিশুকেও হত্যা করতে ছাড়েনি : মিলন রাজশাহীতে পলাতক আসামি রাজিব ট্যাপেন্টাডলন-ট্যাবলেট-সহ গ্রেফতার আওয়ামী লীগের লকডাউনের প্রতিবাদে ইসলামপুরে বিএনপির মোটর সাইকেল শোভাযাত্রা