হ্যালো, আপনাকেই বলছি : রহমান উজ্জ্বল

রহমান উজ্জ্বল: (১) বাংলাদেশের সাম্প্রতিক গণ অভ্যুত্থানকে (আমার মতে চলমান) যারা নেহায়েত একটা বিপ্লব মনে করছেন,তারা ভুল চিন্তা করেছেন। খুব নিকট ইতিহাসে এটা একটা মহা বিপ্লবের সম্মান পাবে। আমি এ ব্যাপারে শিউর।
আমাকে পেশাগত কারণে মাঠে-ঘাটে, হাট-বাজারে চষে বেড়াতে হয়। নতুন নতুন মানুষের সাথে কথা বলি। নতুন নতুন মানুষের সাথে পরিচয় হয়। তাদের মনোভাব বুঝার চেষ্টা করি। এক পাল্টে যাওয়া বাংলাদেশ দেখি, অনুভব করি। কিন্ত কিছুটা আশাহত হই, দু/ একটি দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কর্মকাণ্ড ও আচরণ দেখে। ছাত্রনেতা নামধারী কাউকে কাউকে দেখে। বিপ্লবকে বিকৃত বা বিক্রি করে দেয়ার প্রচেষ্টা দেখে।
রাজনীতিতে মাঠের অবস্থাটা কিন্ত আবার ভিন্ন। তীক্ষ্ণ আর দৃপ্ত ভাষা মানুষের চোখে-মুখে। নাগরিকরা এখন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জবাবদিহিতা আশা করে। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের কাছে ভদ্র, বিনয়ী এবং দুর্নীতি মুক্ত আচরণ আশা করে। নাগরিকরা আগের চেয়ে শতগুণ সাহসী একেকজন। এজন্যই এখন তারা কাস্তে হাতে সীমান্ত পাহারার হিম্মত রাখে।
পাশাপাশি আরেকটি সত্যি কথা হলো, এরকম একটি গণ আত্মত্যাগের ইতিহাসের পর আমরা যতটুকু পরিবর্তন আশা করেছিলাম -তা কি হয়ছে? না, হয়নি। অবশ্য রাতারাতি নাগরিকদের চরিত্রগত (বিশেষ করে আর্থিক বিষয়ে) পরিবর্তন আসবে- এমনটা আশা করাও ঠিক হবে না। তবে নাগরিকদের মনে একটা ধারণার বীজ রোপিত হয়েছে – রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে যে যা খুশি করবে-সেই দিন শেষ।
২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের আগে এদেশের তথাকথিত সুশীল সমাজ ও দালাল মিডিয়াগুলোর অবস্থান ছিল রীতিমত হাস্যকর। মানবতার ধ্বজাধারীরা কল্পনাও করেনি শেখ হাসিনার পতনের কথা। নিজেকে বাঁচানোর জন্য নেতাকর্মীদের রেখে পলায়নের কথা (যা পূর্বেও ঘটেছিল)। আমাদের শিল্প- সংস্কৃতির মানুষ এবং সাংবাদিকরা এ সময় মূলত একাত্তরের রাজাকারদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, এ সময় কিছু নামধারী শিক্ষক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র- ছাত্রীদের তথ্য তৎকালীন আওয়ামী প্রশাসনের হাতে তুলে দিয়েছিল।
এক কথায় বলতে গেলে, আন্দোলনের আগে- পরে রাজনৈতিক নেতৃত্ব বাদে এদেশের সিনিয়র সিটিজেনদের অনেকের ভূমিকাই প্রশ্নবোধক। এক্ষেত্রে বরঞ্চ রাজনৈতিক দল ও নেতাদের ভূমিকা অনেক উজ্জ্বল। বিশেষ করে বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো এবং তাদের নেতাদের ভূমিকা দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যাপক ভূমিকা রাখে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভেদাভেদ ও প্রতিহিংসা ভুলে সবাইকে দেশ গড়ায় তাগিদ দেন ও অনুরোধ করেন।
শেখ হাসিনার পলায়ানের পর ছাত্র -জনতার সরকারবিহীন বাংলাদেশকে পাহারায় রাখা, সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনসহ অসংখ্য নজির স্থাপন আমাদের সুশৃংখল জাতি হতে অনুপ্রাণিত করে। মামলা -হামলা, খুন-গুমে ক্লান্ত একটি জাতিকে মাথা উচু করে বাঁচতে উদ্বুদ্ধ করে।
যখন রাজনৈতিক দলগুলো বিগত ১৬ বছর ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে, সেই সময় রাজনৈতিক দলগুলো এবং ছাত্র-জনতার ঐক্য মাত্র ২০ দিনে একজন চরম ফ্যাটিস্ট শাসককে বিদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে। এটাই,স্টুডেন্ট পাওয়ার। এটা ভুলে গেলে চলবে না। ভুলে গেলে চলবে না সাঈদ, ওয়াসিম, মুগ্ধ’র মতো অসংখ্য প্রাণ উৎসর্গীকারী ও পঙ্গুত্ব বরণকারীদের কথা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ২৪ – এর চেতনাকে ধারণ এবং লালন করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে জাতি ও রাষ্ট্র হিসেবে।
অসীম সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেয়া ২০২৪ এর বিপ্লবের চরিত্র ছিল একদমই আলাদা। এখানে কোন জাত-পাত, শ্রেণি-পেশা, ধর্ম, দল-মত এসব ছিলনা। প্রয়োজনে নিজেদের রক্ত ঝরাতে পারে এ জাতি – এটা আবারও প্রমাণিত হয়। অনুপ্রাণিত জাতি হিসেবে শুরু হয় দেশের নতুন পথচলা।
অন্য অনেকের মতো আমিও ভাবতাম- এরা মোবাইলে বুদ হয়ে থাকা একটা অথর্ব প্রজন্ম । আমি ভুল ভেবেছি । এজন্য দুঃখ প্রকাশ করছি এবং ক্ষমা চাইছি সন্তানসম ছাত্র তরুণদের কাছে। বিপ্লবী স্যালুট জানাই, ২০২৪ এর এই মহা বিপ্লবের প্রতিটি সৈনিকের প্রতি।
হ্যা এই যে, এখন আপনাকে বলছি, শেয়ালের মতো উকিঝুকি বাদ দেন। এইসব করে লাভ নাই। যারা সরকার নামায় ২০ দিনে, তারা শেয়াল ধরতে ২০ ঘন্টাও সময় নেবে না। অতএব সাধু সাবধান। বিশেষ করে যারা বিগত সময়ে অন্ধকারে থাকতে থাকতে আর অহংকারের কারণে নিজেরাও অন্ধ হয়ে গেছেন কিমবা ভোদাই অথবা আঁতেল হয়ে গেছেন- তারা কথাটা বিশেষভাবে চিন্তা করবেন।
আপনি কোন দলের, কোন ধর্মের, কোন আদর্শের- আসুন দেশের স্বার্থে এসব ভেদাভেদ ভুলে যাই। বৈচিত্র্যময় এই বাংলাদেশটা সবার। এদেশের সব নাগরিকের। এটা আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে এবং মানতে হবে।
(২) প্রথম বাকশালী শাসনের চেয়েও দ্বিতীয় বাকশালী শাসন বেশি ভয়ংকর এবং অনেক সুদূর প্রসারী একটা প্রয়াস। বঙ্গবন্ধু থেকে শুধু মুজিব এবং তারপরের পরিনিতি তো আপনারা সবাই কমবেশি জানেন। শেষ পর্যন্ত উনি এতই টেম্পারেচার হারালেন যে, বাকশাল গঠন করে একদলের শাসন শুরু করলেন। অর্থাৎ সবার গলা চেপে ধরলেন। উনার অহংকার, উনার দাম্ভিকতা এবং চাটুকারদের ভূমিকা বুঝতে দিল না- উনি কি সব ভুলগুলো করছেন। তারপরে হল দুর্ভিক্ষ। তারপর তো ১৫ই আগস্ট।
প্রথম বাকশালী শাসনের চেয়ে দ্বিতীয় বাকশালী শাসন কেন ভয়ংকর তা এখন মোটা দাগে ব্যাখ্যা করছি-মুজিবের অহংকার অথবা আত্মবিশ্বাস কিংবা এতই দাম্ভিকতা ছিল যে, সে প্রকাশ্যে বাকশাল গঠন করেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা এটা করেনি। সে অত্যন্ত চতুর ভাবে কিছু সাইনবোর্ড সর্বস্ব দল নিয়ে এটা প্রতিষ্ঠা করেছিল। অত্যন্ত কৌশলে তার শাসন ব্যবস্থায় একচ্ছত্র অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল। মুজিব সেনাবাহিনীকে বাদ দিয়ে রক্ষী বাহিনীকে প্রাধান্য দিয়েছিল, আর শেখ হাসিনা এসব কোন কিছু গঠন না করে বরং দেশের সব বাহিনীকে কুক্ষিগত করে নিজের আঙ্গুলের ইশারায় চালাত। শেখ মুজিবের মধ্যে শেষ পর্যন্তও কিছুটা দেশপ্রেম থাকা অসম্ভব না। কিন্তু শেখ হাসিনার বেলায় এটা দেখা যায়নি। মুজিব বিচার বহির্ভূত হত্যা করে (সিরাজ সিকদার) সংসদে দাঁড়িয়ে অহংকার করে বলেছিল কিন্তু শেখ হাসিনা চুপচাপ আয়না ঘর বানিয়ে রেখেছে। মুজিবের বাকশালে মুস্তাকের মতো কিছু চাটুকার ছিল আর শেখ হাসিনার বাকশালে দুই একজন ভালো মানুষ বাদে সবাই চাটুকার ছিল। মুজিব ভারতকে ফারাক্কা করতে দিয়েছিল কিন্তু হাসিনা দেশের সব কিছু বিদেশি শকুনদের হাতে দিতেও দ্বিধা করেনি। ওগুলো আবার গর্ব করে বলতেন। অর্থাৎ মুজিবের চেয়েও বেশি অহংকার ও স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে দেশের জনগণ ও মিডিয়ার সামনে এগুলো বলতেন শেখ হাসিনা। মুজিব তার সাঙ্গোপাঙ্গ দিয়ে ব্যাংক লুট করাতেন কিন্তু শেখ হাসিনা তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের দিয়ে পুরো ব্যাংকগুলোই খেয়ে ফেলেছেন। মুজিব তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বানিয়ে গণহত্যা চালিয়েছেন (জাসদ ও গণবাহিনী)। কিন্তু শেখ হাসিনা ঘোর আওয়ামী লীগ ব্যতিত দেশের সবাইকেই প্রতিপক্ষ বানিয়েছেন এবং বারবার গণহত্যা চালিয়েছে। চেতনা, সাম্প্রদায়িকতা, সংখ্যালঘু, মুক্তিযুদ্ধ, রাজাকার – শব্দগুলোকে আতঙ্কের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। ট্রমার মত বানিয়ে ফেলেছে। আবার শেখ মুজিব শেষ পর্যন্ত দেশেই মৃত্যুবরণ করেন বা নিহত হন কিন্তু শেখ হাসিনা সবাইকে রেখে পালিয়ে যায়। যাই হোক, এরকম আরো বহু আলোচনা সামনে আনা যাবে-এখানে আলাপের শেষে একটা কথা বলি- শেখ হাসিনা প্রথম কয়দিন মেট্রো রেল, ইট-কাঠ, কংক্রিট ধরে কান্নাকাটি করেছিল। কেউ কেউ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গিয়ে আপনারাও একই কাজ করেছেন। আপনার ধানমন্ডি যাওয়া নিয়ে আমার ১ আনার আগ্রহও নাই । আপনার আবেগে আপনি যেতেই পারেন। কিন্তু আমার প্রশ্নটা হল অন্য জায়গায়-। আপনাদের চোখগুলো কি আসলেই ইট-কাঠ কংক্রিট দিয়ে গড়া ? আপনারা ইট_কাঠ, কংক্রিট বুঝেন অথচ হাজার হাজার ছাত্র জনতার রক্তাক্ত লাশ বুঝেন না? লাশের গন্ধ আর মানুষের কান্নায় আপনাদের মনে কি একটুও অনুভূতি হয় না ?
শেষে প্রথমের কথাটা আবার বলি- প্রথম বাকশালি শাসনের চেয়ে দ্বিতীয় বাকশালী শাসন অনেক ভয়ঙ্কর এবং সুদুর প্রসারী একটা প্রয়াস। শেখ মুজিব শেষ পর্যন্তও কিছু ভালো লোক সাথে পেয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার সাথে ছিল কিছু মেধাহীন দালাল , চাটুকার আর ফটকাবাজ লোক। ফলাফলস্বরূপ শেখ হাসিনা নির্দ্বিধায় ছাত্র-জনতার প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে বারবার- কিন্তু ঐ যে কথায় বলে না -‘চোরের দশ দিন তো গৃহস্থের একদিন’।
(৩) আপনি কি এই বিপ্লবকে অস্বীকার করতে চান ? আপনি কি ছাত্র- জনতার এই মহা বিপ্লবকে মজা করার ছলে একটা চড়ুইভাতী ভেবেছেন? আপনার কাছে কি ছাত্র- জনতার এত এত রক্তের কোন মূল্য নেই? আপনি কি ভীষণ রকমের একপেশে চিন্তার অধিকারী বা আপনার ভাবনার জগতটা কি চরমভাবে গণ্ডিবদ্ধ?
হ্যাঁ, তাহলে আপনাকেই বলছি-। জেনে রাখুন, এত বেশি রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই বিজয় কোন জোলাভাতি নয় বা চড়ুইভাতী নয়। বরং দেশের বেশিরভাগ মানুষের দ্বারা সংঘটিত একটি বিপ্লব। আমি মনে করি, যা এখনো চলমান। ইতিহাসের পাতায় এই গণঅভ্যুত্থান নিঃসন্দেহে একটি মহা বিপ্লব হিসেবে স্থান করে নেবে। এর সাথে জড়িত বহু ঘটনাও অনেক ইতিহাসের সাক্ষী হবে। এই সহজ সত্যটা আপনার পঙ্কিল মন স্বীকার করল কি-না বা মেনে নিতে পারল কি-না সেটা তো আপনার একান্ত নিজস্ব ব্যাপার।
এখানে পঙ্কিলতার কথা আসলো যে কারণে তা হল- ইতিহাসের একজন চরম নিষ্ঠুর, মিথ্যাবাদী স্বৈরাচারের পতনের পরও আপনারা কিছু লোক হাসি -মশকারার মতো করে বিপ্লবের বিপরীতে প্রতি বিপ্লবের স্বপ্নে মশগুল আছেন। ঘটনা প্রবাহে আমরা দেখছি – ডাকাত লীগ, আন্দোলনের নামে সনাতনী ভাইদের বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা, আদালতের মাধ্যমে কু ঘটানোর চেষ্টা, আনসারদের মাধ্যমে কু করার চেষ্টা, গ্রাম পুলিশ ভাইদের দিয়ে আন্দোলন, গার্মেন্টস শ্রমিক- রিক্সা শ্রমিক ভাইদের আন্দোলনের কথা বলে উত্তেজিত করার চেষ্টা, পাহাড়কে অশান্ত করার চেষ্টা, দেশের সীমান্তে বিশৃঙ্খলা,সচিবালয়সহ আওয়ামীলীগের পুরনো আগুন সন্ত্রাস, বাংলাদেশ নিয়ে অপপ্রচার ইত্যাদি সব মারাত্মক দেশি – বিদশী চক্রান্ত। অর্থাৎ কোনোভাবেই থেমে নেই দেশ থেকে পলায়নকৃত স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী, তাদের দোসর এবং তাদের বিদেশী প্রভুর চক্রান্ত।
সাম্প্রতিক বা চলমান মহা বিপ্লবের প্রতিটি ধাপে এত বেশি রক্ত ঝরেছে যে- এখনো দেশের প্রতিটি কোনায় কোনায় স্বজনহারাদের আত্মীয়-স্বজন এবং দেশবাসীর হাহাকার -মাতম চলছেই। চারপাশে কান পাতলে শোনা যায় , আহত ছাত্র-জনতার আর্ত চিৎকার। কিন্তু চক্রান্ত থেমে নেই। এর মধ্যে আবার দেশবাসী বিস্ময়ে লক্ষ্য করলো – আমাদের তথাকথিত বন্ধু দেশের চরম হটকারিতা। রাতের অন্ধকারে পানির বাঁধ ছেড়ে দিয়ে ডুবিয়ে দেয়া হলো বাংলাদেশের বিরাট একটা অংশ।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে দেশে একটি অরাজনৈতিক এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় অনভিজ্ঞ সরকার বিরাজমান। রক্তস্রোত, কান্না আর আকস্মিক বন্যার পানিতে দেশের মানুষ যখন হাবুডুবু খাচ্ছে- তখন তারা দেশের শাসন দন্ড হাতে নিয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি , তারা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবে বা করছে। জন মানুষের সাথে মিলে লড়াই করছে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে। কিন্ত এই রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ এতটা বিলম্বিত হওয়া উচিত যা থেকে দেশে আরেকটি ওয়ান ইলেভেনের সৃষ্টি হয় বা ঐরকম আশংকা তৈরি হয়।
দেশের এমন ক্রান্তিকালে কিছু লোক ব্যস্ত আছে গোলাপানিতে মাছ শিকার করতে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে , দেশে বোধ হয় আন্দোলনের মৌসুম শুরু হয়েছে। যারা বিগত ১৬-১৭ টা বছর একটু টু- টা শব্দ পর্যন্ত করেনি তারাও এখন অনেক অনেক দাবি নিয়ে শাহবাগ কিংবা প্রধান উপদেষ্টার বাড়ির সামনে জমায়েত হচ্ছে। হই- হট্টগোল করছে, গুলি চালিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। ঐসব তথাকথিত আন্দোলনের নেপথ্যের কারণ কি ? কারা উস্কানি দিচ্ছে ওইসব আন্দোলনে ? আপনি বা আপনারা নন তো ?
এখন প্রশ্ন হল- আপনারা কি দেশে ঘটে যাওয়া এই মহা বিপ্লবকে মানতে পারছেন না? এরকম ভয়ংকরতম জেনোসাইডকে অস্বীকার করতে চান ? এতগুলো তাজা প্রাণের বিসর্জন বা ত্যাগ আপনার বা আপনাদের কাছে কি কোন বিষয়ই না ?
এতগুলো সন্তান আর জনমানুষ মরলো, পঙ্গুত্ববরণ করল -তারপরও কি আপনাদের কোন বিকার নেই ? রাতে ঘুমান কি করে ?আপনার বিবেক বোধ কি কয়লা হয়ে গেছে ? আপনার হৃদযন্ত্র, চোখ -এগুলো কি পাথর দিয়ে বানানো ? বুঝলাম, ওগুলো না হয় পাথরের কিন্তু কোথাও কি একটুও স্পর্শ করেনা – ওইসব শহীদের রক্ত বা আত্মত্যাগ ? যদি আপনার ভেতর থেকে কোন স্পর্শ অনুভূত না হয় -তাহলে আপনি বহু আগেই মরে গেছেন। মরে ফেরাউনের মতো চিমসে হয়ে গেছেন। সেই চিমসে মার্কা দুর্গন্ধ শরীর- মন নিয়ে এখন শিয়ালের মতো খালি বাঁকা পথে উঁকিঝুঁকি মারছেন। এত তাড়াতাড়ি ছাত্র- জনতার মাইরের কথা ভুলে গেলে কি হবে ? দেশের মানুষও কি এত তাড়াতাড়ি ওইসব ভয়ংকর পৈশাচিক, বিভীষিকাময় দিনগুলো আর সন্তান হারানোর কষ্ট ভুলে যাবে ? কক্ষনো না।
আপনি ভালো হয়ে যাবেন-নাকি দুর্গন্ধ মমির মত জীবন কাটাবেন সেই বিবেচনা আপনার। তবু আপনাদের কাউয়া কাদেরের মত করেই বলি- “ভালো হয়ে যাও, মাসুদ”। নইলে কইলাম ছাত্র- জনতা আবার পেদাবে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.