লিথুয়ানিয়ায় রুশ সীমান্তের কাছে জার্মান সামরিক ঘাঁটির নির্মাণ শুরু

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার সীমান্তের কাছে জার্মান সেনাদের জন্য একটি সামরিক ঘাঁটির নির্মাণকাজ শুরু করেছে লিথুয়ানিয়া। সোমবার (১৯ আগস্ট) এই কাজ শুরু হয়। ২০২৭ সালের শেষ নাগাদ ঘাঁটিটি সম্পূর্ণ হলে এতে প্রায় চার হাজার জার্মান সেনা অবস্থান করতে পারবে। যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দেশের বাইরে জার্মানির প্রথম স্থায়ী সেনা মোতায়েন।
গত বছর জার্মানি ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র লিথুয়ানিয়ায় সেনা মোতায়েনের প্রতিশ্রুতি দেয়।
জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস এই সিদ্ধান্তকে শীতল যুদ্ধের সময় পশ্চিম ইউরোপ রক্ষার জন্য পশ্চিম জার্মানিতে মিত্রবাহিনীর অবস্থানের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
লিথুয়ানিয়ার প্রতিরক্ষা প্রধান রাইমুন্ডাস ভাইকসনোরাস জানিয়েছেন, ঘাঁটি নির্মাণের জন্য আগামী তিন বছরে লিথুয়ানিয়া ১ বিলিয়ন ইউরোরও বেশি ব্যয় করবে, যা দেশটির ইতিহাসে অন্যতম বৃহত্তম নির্মাণ প্রকল্প।
তিনি বলেন, এটি আমাদের জন্য বিশাল বিনিয়োগ।
লিথুয়ানিয়ার জনসংখ্যা মাত্র ২.৯ মিলিয়ন এবং অর্থনীতি জার্মানির দশভাগের এক ভাগ।
তিনি আরও বলেছেন, এই ব্রিগেড আমাদের জনগণের জন্য আশ্বাস ও রুশদের প্রতিরোধের বার্তা হিসেবে কাজ করবে।
ভিলনিয়াসের কাছে রুদনিন্কাই এলাকায় নির্মিতব্য এই ঘাঁটি রাশিয়ার মিত্র বেলারুশের সীমান্ত থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ঘাঁটিতে চার হাজার সেনার পাশাপাশি ট্যাংক এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জামের জন্য সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ সুবিধা ও বিভিন্ন আকারের শ্যুটিং রেঞ্জ থাকবে। প্রায় এক হাজার অতিরিক্ত জার্মান সেনা এবং বেসামরিক ঠিকাদারদের লিথুয়ানিয়ার অন্যান্য স্থানে মোতায়েন করা হবে।
তবে রুদনিন্কাইতে নির্মাণাধীন ভবনগুলোর মাত্র পাঁচভাগের এক ভাগের জন্য এখন পর্যন্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। যার ফলে ঘাঁটিটি যথাসময়ে প্রস্তুত হবে কিনা তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী লরিনাস কাসচিউনাস জানিয়েছেন, বছরের শেষ নাগাদ তার মন্ত্রণালয় বাকি নির্মাণকাজের জন্য চুক্তি সম্পাদন করবে।
জার্মান সরকার লিথুয়ানিয়ায় ঘাঁটি নির্মাণের জন্য ১০৫টি লেপার্ড ২-এ৮ ট্যাংক সংগ্রহে ২.৯৩ বিলিয়ন ইউরো বাজেট অনুমোদনের জন্য পার্লামেন্টের কাছে আবেদন করেছে। যা জুনে রয়টার্সের হাতে আসা একটি গোপন বাজেট খসড়ায় উঠে এসেছে।
লিথুয়ানিয়া এ বছর তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩ শতাংশে উন্নীত করেছে এবং প্রধানমন্ত্রী ইনগ্রিদা সিমোনাইটের সরকার আগামী কয়েক বছরে প্রতিরক্ষা খাতের ব্যয় পূরণের জন্য কর বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে।
জার্মানিকে ইঙ্গিত করে সিমোনাইট বলেছেন, যদি আমরা নিরাপদ না হই, তবে তাদেরও কোনও নিরাপত্তা নেই। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.