নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় ফুটপাতে বসে আছেন জনাবিশেক মানুষ। তাঁরা প্রত্যেকেই ওই এলাকার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক অথবা কর্মচারী। ডাকাত আতঙ্কে বা হামলার ভয়ে দিনে ব্যবসা শেষে রাত জেগে বাইরে তালা লাগিয়ে দিয়ে প্রতিষ্ঠান পাহারা দিচ্ছেন।
গত ৫ আগস্টের পর থেকে রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা তাঁদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রক্ষায় রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। এরই মধ্যে অন্তত শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
ওই এলাকার ’সেল কম্পিউটার’ নামে একটি কম্পিউটার দোকানের মালিক রিঙ্কু হাসান বলেন, ‘আশে-পাশের বেশ কয়েকটি দোকান পাট ভাংচুর হয়েছে। মালামাল লুট হয়েছে। রাতে ডাকাত পড়ছে, চুরি হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। এসবের প্রথম টার্গেটই করা হচ্ছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যার কারণে আমরা গত ৬ আগস্ট থেকে রাত জেগে দল বেধে লাঠি-বাঁশি হাতে নিয়ে দোকান পাহার দিচ্ছি।’
ব্যবসায়ীরা জানান, কাদিরগঞ্জ এলাকায় স্পার্ক গিয়ার নামের একটি শো-রুমে হামলা হয়েছে গত ৫ আগস্ট। নিউ মার্কেট এলাকায় থিম ওমর প্লাজায় হামলা হয়ে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে ব্যাপক। গত ৫ ও ৬ আগস্ট পর পর দুদিন ওই মার্কেটে হামলা হয়েছে। গত ৯ আগস্ট রাতে পাশেই বেলদারপাদা ও রানীবাজার এলাকার কয়েকটি বাড়িতে হানা দিয়েছে ডাকাতরা। এছাড়াও হামলা হয়েছে নগরীর শতাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে। এর ফলে আতঙ্কে অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা দিনে ব্যবসা শেষে রাতে দোকান-পাট বন্ধ করেও বাড়িতে গিয়ে শান্তিতে ঘুমাতে পারছেন না। দোকানপাট চুরি, ডাকাতি বা হামলার ভয়ে রাতজেগে লাঠি-বাঁশি হাতে নিয়ে পাহারা দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। সঙ্গে রাখছেন দোকানে কর্মচারী বা আত্মীয়-স্বজনরা।
নগরীর নিউমার্কেট হকার্স মার্কেটের কর্মচারী বাদশা মিঞা বলেন, সারাদিন দোকানে ব্যবা করে রাতে গিয়েও বাড়িতে ঘুুমাতে পারছি না। কোনো মতে রাতের খেয়েই আবার দোকানের সামনে এসে অবস্থান নিতে হচ্ছে হামলা বা লুটপাটের ভয়ে। অধিকাংশ বড় ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা দোকানের সামনে পাহারা বসাচ্ছেন। ফলে অনেক লোক জমায়েত হচ্ছে রাতে। এতে করে কোনো ডাকাত বা চুরিরও ভয় থাকছে না আর। কিন্তু এভাবে কতদিন পাহারা দিয়ে রাখা যায়? প্রশ্ন করেন বাদশা মিঞা।
দরিখরবোনা এলাকার ফার্নিচার ব্যবসায়ী রিবন আলী বলেন, ৫ আগস্টের পর অনেক দোকানে হামলা হয়েছে। লুটপাট হয়েছে। হামলা বা লুটপাটের ভয়ে আমরা রাতে দোকান পাহারা দিচ্ছি। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান শেষ হয়ে গেলে আমাদের আর কিছুই থাকবে না। তাই রাতের ঘুম হারাম করে পাহারা বসাচ্ছি। আশে-পাশের অনেক দোকানদারই পাহারা বসাচ্ছে। ফলে চোর বা ডাকাতরা রাতে আর হামলার সাহস পাচ্ছে না। কিন্তু এরকম অবস্থা আগে কখনোই ছিল না।’
রাকিব হাসান নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, রাজশাহীতে কখনোই এমন পরিবেশ বিরাজ করেনি। দেশে যে অবস্থায় থাকুক না কেন রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা শান্তিতে ঘুমাতে পেরেছেন। কিন্তু গত ৫ আগস্ট থেকে আমাদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে রাতে পুলিশ পাহারা না থাকায়।’
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধিমো. মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.