বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: ৯০ মিনিট শেষেও ম্যাচে সমতা। খেলা অতিরিক্তি সময়ে গড়ানোর অপেক্ষায়। বাকি আছে আর মিনিট খানেক। তখনই দুর্দান্ত এক গোল করে দলকে ফাইনালে তুলে নিলেন একজন। ম্যাচ শেষে চওড়া হাসিতে সেই ফুটবলার বললেন, “আমি আগেই বলেছিলাম, এরকম গোল করব…।”
কারও কাছে হাস্যকর লাগতে পারে, কারও কাছে অবিশ্বাস্য। কিন্তু অলি ওয়াটকিন্সের গল্পটা যে সত্যিই এমন! অন্তত তার দাবি এরকমই। তিনি জানেন, লোকে তার কথা বিশ্বাস করতে চাইবে না। ইংল্যান্ডের জয়ের নায়ক তাই প্রাণের কসম কেটে বলছেন, এমন গোলের ছবি ম্যাচের আগেই এঁকেছিলেন তিনি!
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ইউরোর সেমি-ফাইনালের ৮০ মিনিটের পর অধিনায়ক হ্যারি কেইনকে উঠিয়ে ওয়াটকিন্সকে মাঠে নামান ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। ১-১ সমতায় থাকা ম্যাচে তখন দাপট বেশি ছিল ডাচদেরই। খেলার ধারায় মনে হচ্ছিল, ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়ালে ইংলিশরাই স্বস্তি পাবেন। কিন্তু জাদুকরি একটি মুহূর্তেই সব পাল্টে দেন ওয়াটকিন্স।
ম্যাচের বয়স তখন ৯০ মিনিট ছুঁতে চলেছে। কোল পালমার বল পেয়ে দুই ডাচ ফুটবলারের মাঝ দিয়ে দারুণ এক পাস দেন। বক্সের ভেতর ডান পাশে ওয়াটকিন্স ডান পায়ে বল ধরে আলতো করে ছিটকে ফেলার চেষ্টা করেন পাশে থাকা ডাচ ডিফেন্ডারকে। পরে শরীর ঘুরিয়ে আচমকা গতিময় এক গড়ানো শট নেন। ডাচ গোলকিপার ডাইভ দিয়েও নাগাল পাননি, দূরের পোস্ট দিয়ে বল ঢুকে যায় জালে।
খ্যাপাটে উদযাপনে মেতে ওঠেন ওয়াটকিন্স। ম্যাচ শেষ হওয়ার পরও দলের উদযাপনের কেন্দ্রে তিনিই। হ্যারি কেইন ছুটে এসে তার কোলে চড়ে বসেন। সতীর্থরা সবাই ঘিরে ধরেন তাকে। গোল করার পর তো বটেই, ম্যাচ শেষেও পালমারের সঙ্গে আলাদা করে উদযাপন করতে ও উল্লাসে ফেটে পড়তে দেখা যায় তাকে।
ম্যাচের পর ওয়াটকিন্সের কথায় ফুটে উঠল সেটির কারণ।
“প্রাণের কসম কেটে বলছি, কোল পালমারকে এটা বলেছিলাম আমি। বলেছিলাম যে, ‘আজকে আমরা মাঠ নামব এবং তুমি আমাকে গোল বানিয়ে দেবে।’ এজন্যই গোলের পর কোলির সঙ্গে এত হাসাহাসি করছিলাম।”
“সে বল পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জানতাম, আমাকেই বল দেবে। ওই সময়টায় নিজের ভেতরে তাড়না থাকতে হবে, বলে স্পর্শ ও ফিনিশিংটা ভালোভাবে করতে হবে। যখন দেখলাম বলটা ভেতরে ঢুকছে, সবচেয়ে সেরা অনুভূতি সেটি।”
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে অ্যাস্টন ভিলার হয়ে অনেক গোলের সুযোগ হাতছাড়া করার ঘটনা যেমন তার আছে, তেমনি দারুণ সব গোল করার নজিরও আছে। তারকায় ঠাসা ইংল্যান্ড দলে একাদশে থাকা তো বহুদূর, বদলি হিসেবে মাঠে নামার সুযোগও সবসময় পান না। তিনিই এখন গোটা দেশের নায়ক। তার গোলেই প্রথমবার দেশের বাইরে বড় আসরের ফাইনালে উঠল ইংল্যান্ড।
তারপরও তার লেগে থাকা, অনুশীলনে ঘাম ঝরানো, সেসবের পুরস্কার মনে করেন তিনি এই ম্যাচের প্রাপ্তিকে।
“অবিশ্বাস্য… এই মুহূর্তটির জন্য সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে অপেক্ষা করছিলাম। আজকে যে জায়গায় এসেছি, এখানে আসতে অনেক অনেক কঠিন পরিশ্রমের পথ পেরোতে হয়েছে। আমি কৃতজ্ঞ যে, আজকে সুযোগটা পেয়েছি এবং দুহাতে তা লুফে নিতে পেরেছি। দারুণ উচ্ছ্বসিত আমি।” #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.