বরগুনা প্রতিনিধি: বরগুনার আমতলী উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে মেরামত অযোগ্য অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ২৬টি লোহার সেতু চিহ্নিত করছে আমতলী উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর।
গত ২২ জুন বউভাতে যাওয়ার সময় হলদিয়া হাটসংলগ্ন চাওড়া নদীর ওপর নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ লোহার সেতু ভেঙে মাইক্রোবাস খালে পড়ে ৯ জন মারা যাওয়ার ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর।
তারা উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ২৬টি লোহার সেতু চিহ্নিত করে সেগুলোতে স্থায়ী বেড়া, সিমেন্টের পিলার বসিয়ে ও সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে মালপত্র বহন ও ভারী যানবাহন চলাচলে বিধি-নিষেধ দিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার গুলিশাখালী, কুকুয়া, আঠারগাছিয়া, হলদিয়া, চাওড়া, আমতলী সদর ও আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন খালের ওপর স্থানীয় প্রকৌশল দপ্তর (এলজিইডি) কার্যালয় থেকে নির্মিত লোহার সেতুগুলোর মধ্যে অনেক সেতুতে ফাটল দেখা দিয়েছে।
বিমগুলোতে মরিচা ধরে এঙ্গেল ক্ষয়ে পড়ে সেতুগুলো নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। অনেক জায়গায় রড বেরিয়ে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। দুই পাশের রেলিং ভেঙে খালে পড়ে গেছে। হেঁটে গেলেও সেতুগুলো নড়তে থাকে।
তার পরেও বিকল্প কোনো উপায় না থাকায় প্রায় ২০ বছর আগে নির্মিত, মেরামতের অযোগ্য ওই সব লোহার সেতু দিয়ে বিভিন্ন গ্রামের মানুষজন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে।
উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নির্মিত ওই লোহার সেতুগুলো হালকা যান প্রকল্পের আওতায় ২০০২-০৩ অর্থবছর থেকে ২০০৫-০৬ অর্থবছরে নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর থেকেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এসব সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করতে থাকে। এতে সেতুগুলো নড়বড়ে ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।
এসব সেতুর মধ্যে উপজেলার পশ্চিম গাজীপুর মুসুল্লী বাড়ীসংলগ্ন, আঠারগাছিয়া বেলায়েত চেয়ারম্যান বাড়ীসংলগ্ন, চাওড়া চন্দ্রা, সদর ইউনিয়নের মেলকার বাড়ীসংলগ্ন, সেকান্দারখালী, হলদিয়ার জেবি সেনের হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন সেতুসহ অনেক সেতু ধসে পড়েছে। উত্তর-পশ্চিম তক্তাবুনিয়া রাঢ়ীবাড়ীর সামনের সেতুটির একটি অংশ এরই মধ্যে দেবে গেছে।
আমতলীর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘আমতলী উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে আমাদের দপ্তর থেকে নির্মিত লোহার সেতুর মধ্য থেকে মেরামত অযোগ্য অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ২৬টি সেতু চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই সেতুগুলোতে যাতে যানবাহন চলাচল করতে না পারে সে জন্য স্থায়ী বেড়া, সিমেন্টের পিলার বসিয়ে সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ এর মধ্যে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ লোহার সেতুগুলো সরিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে গার্ডার সেতু নির্মাণ করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘মেরামত অযোগ্য অধিক ঝুঁকিপূর্ণ সেতু চিহ্নিত করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধসে পড়া হলদিয়া হাটসংলগ্ন লোহার সেতুসহ উপজেলার অধিক ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলো সরিয়ে নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।’
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বরগুনা প্রতিনিধি মো. শফিকুল ইসলাম শফিক। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.