বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান জানিয়েছেন, তার দেশ রাশিয়ার জ্বালানি আমদানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতি পেয়েছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (৭ নভেম্বর) হোয়াইট হাউসে সাক্ষাতের সময় ট্রাম্প প্রশাসনের রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা থেকে হাঙ্গেরিকে অব্যাহতি দেয়ার অনুরোধ জানান ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত অরবান।
বৈঠক শেষে হাঙ্গেরিয়ান গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রেসিডেন্টের কাছে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন করেছিলাম। তিনি সম্মতি দিয়েছেন এবং বলেছেন যে দুটি পাইপলাইনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।’
অরবান জানান, তুর্কস্ট্রিম পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহকৃত রাশিয়ান গ্যাস এবং দুরুজবা পাইপলাইনের তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা থেকে হাঙ্গেরিকে সম্পূর্ণ অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, হাঙ্গেরিকে এক বছরের জন্য রাশিয়ান জ্বালানি ব্যবহার সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজিয়ারতো সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে লেখেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত হাঙ্গেরির জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।’
অরবান আরও জানান, হাঙ্গেরি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েস্টিংহাউস ইলেকট্রিক কোম্পানি থেকে পারমাণবিক জ্বালানি কিনবে। এই জ্বালানি হাঙ্গেরির পাক্স পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত হবে, যা এতদিন রাশিয়ান জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল ছিল। তবে হাঙ্গেরি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা রাশিয়া থেকেও পারমাণবিক জ্বালানি কেনা অব্যাহত রাখবে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাশিয়া-সংক্রান্ত নীতির কারণে ওয়াশিংটনের মিত্র ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশ রাশিয়ান তেল আমদানিতে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। ঠিক সেসময়েই হাঙ্গেরিকে এই অব্যাহতির ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এর আগে শুক্রবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বিষয়টি দেখছি, কারণ ওর (অরবান) জন্য অন্য উৎস থেকে তেল ও গ্যাস সংগ্রহ করা খুবই কঠিন। তাদের তো সমুদ্রপথও নেই।’
ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে অরবানকে রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি সহানুভূতিশীল নেতা হিসেবে দেখা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়ানোর প্রচেষ্টায়ও হাঙ্গেরি প্রায়ই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অরবান জানান, ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে কাজ করছেন, কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনের ‘সম্পূর্ণ সামরিক জয়ের’ লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে, যা তার মতে বাস্তবসম্মত নয়।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এর ওপর মার্কিন শুল্কনীতির প্রভাব হাঙ্গেরির অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ফলে রাশিয়ান তেল ও গ্যাস আমদানিতে ছাড় পাওয়া অরবানের জন্য একটি বড় রাজনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা তার নিজ দেশে জনপ্রিয়তা আরও বাড়াতে পারে। #

















