সিন্ডিকেটবান্ধব বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে সিন্ডিকেটে জড়িতরা আরো ক্ষমতাবান হবে : রিজভী

ঢাকা প্রতিনিধি: বিএনপিরা সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সিন্ডিকেটবান্ধব সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী ‘সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে সংকট তৈরি হবে’বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে সিন্ডিকেটে জড়িতরা আরো বেশি ক্ষমতাবান হয়ে উঠবে।‌আরো বেশি প্রণোদিত ও উৎসাহিত হয়েছে। দেশবাসী সবাই জানে, সিন্ডিকেটের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরাই জড়িত। সেজন্যই বাণিজ্যমন্ত্রীকে সিন্ডিকেটের পক্ষে পক্ষাবলম্বন করতে হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্য প্রভূত্বের ও জনগনকে অধীন করে রাখার প্রকাশ পায়। এরা সহযোগীতা ও সামাধানের বৃত্ত বিস্তৃত না করে প্রভুর ন্যায় আচরণ করছে বলেই জনগণ এক অবর্ননীয় সংকটের মধ্যে পড়েছে।
আজ বুধবার (২৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ঈদুল-আজহার প্রাক্কালে জনজীবন নাকাল অবস্থা বিরাজ করছে। একদিকে যানজটে অসহনীয় ভোগান্তি, অন্যদিকে সব ধরনের খাদ্য পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। ভোটারবিহীন সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দল ও ভিন্নমতের মানুষদের ওপর দমনপীড়নে যতোটা দক্ষ, ততোটাই ব্যর্থ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দামসহ জনজীবনের সব ধরনের ভোগান্তি কমাতে বিষ্ময়কর মুদ্রাস্ফীতি নিম্ন ও মধ্যভিত্তের স্বল্পআয় গিলে খাচ্ছে।
তিনি বলেন, জনম্যান্ডেটহীন আওয়ামী সরকার সিন্ডিকেট-হিতৈষী সরকার বলেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দ্রুত বেগে ধাবমানতা আটকাতে পারছে না। অবৈধ সরকারের দু:শাসনের যাতাকলে পড়ে স্বভূমির সীমানায় কেউ শান্তিতে নেই।
বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন,  সারা বিশ্বে বর্তমানে খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও দেশে কেন লাগামহীন অবস্থা? কারণ যে দেশের অর্থনীতি, টাকা পাচার আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হরিলুটের নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত সেখানে খাদ্যপণ্যের লাগাম টানা যায় না। মেগাদূর্নীতির ভাবধারা থেকে উৎসারিত তথাকথিত মেগা উন্নয়ন করতে গিয়ে মানুষকে কিনতে হচ্ছে ছোট মুরগি, ছোট ডিম, ছোট সাবান, ছোট রুটি। পাশাপাশি চাল, চিনি, মাংস ও সবজীর ওজন কমে যাচ্ছে। অর্থাৎ গরিব মানুষের আয় থেকে প্রয়োজনীয় পরিমাণ খাদ্যপণ্য কিনতে পারছে না। সরকারের বাজেট পূর্বের বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেলেও মধ্যম ও স্বল্প আয়ের মানুষদের ব্যক্তিগত বাজেট যথেষ্ট পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে।
রিজভী বলেন, মধ্যম ও স্বল্প আয়ের মানুষ দিশেহারা, ভুক্তভোগী মানুষ বোবা কান্নায় গুমরে মরছে। সরকার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দোহাই দিয়ে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ বলে চেঁচিয়ে বেড়াচ্ছে। অথচ সেই যুদ্ধ যে অঞ্চলে হচ্ছে সেই ইউরোপে জিনিসপত্রের দাম পূর্বের তুলনায় অনেক হ্রাস পেয়েছে।
তিনি বলেন, বিদ্যমান অর্থনীতির এই নৈরাজ্যের মধ্যে এবারের কুরবানীর ঈদ পালিত হতে যাচ্ছে। খাদ্যপণ্যের অসহনীয় দাম, আইনশৃক্সখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। মানুষের ঈদ আনন্দ অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে। গত কয়েক মাসের মধ্যে চাল, চিনি, ডাল, শাক-সবজীর দামের বৃদ্ধি অনেক গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। পেঁয়াজ ও কাচা মরিচসহ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম গ্যালাক্সিতে পৌঁছেছে। যার কারণে এবার পশুর হাটে তেমন বেচা-বিক্রি নেই, পশুরহাট জমে ওঠেনি। স্বভূমির সীমানায় কেউ শান্তিতে নেই।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এই ঈদ আনন্দর মধ্যে সরকারী নিপীড়ণের কোনো কমতি নেই। অসহিষ্ণুতা, সীমাহীন লোভ আর উদ্ধত রাষ্ট্রশক্তির আশ্রয় করে শুধুই একটি হিংসার বিকৃত রূপ দেখা যায় সরকারের আচরণে। ঈদের প্রাক্কালেও হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্বেও আমাদের কারাবন্দি নেতাদের মুক্তি দেওয়া হয়নি। গায়েবী মামলা অব্যহত চলছে। সারাদেশে পুলিশের ছত্রছায়ায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের চলছে নারকীয় আক্রমণ।  তিনি কারাগারে আটক সব নেতা-কর্মীর মুক্তি দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মো: মাসুদ রানা খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.