ইভিএম বন্ধ ও অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবীতে রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সংবাদ সম্মেলন

 

বিএনপি প্রতিবেদক: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিতর্কিত ইভিএম মেশিন ব্যবহার বন্ধ, অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ, বিগত রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট ডাকাতি, ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং- এ সহায়তাকারী আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিতর্কিত সদস্যদের অপসারণ, গণ গ্রেফতার ও ভীতি মুক্ত বাধাহীন পরিবেশে নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের দাবীতে আজ রবিবার মহানগর বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করেন।

মালোপাড়াস্থ্য বিএনপি কার্যালয়ে বেলা ১২টায় সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পেিরবশ বিষয়ক সম্পাদক, মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য জননেতা মিজানুর রহামন মিনু। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন ও তানোর পৌর মেয়র মিজানুর রহমান।

অন্যদের মধ্যে বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র সভাপতি সাইদুর রহামন পিন্টু, মতিহার থানা বিএনপি’র সভাপতিদ আনসার আলী, শাহ্ মখ্দুম থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন, বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম মিলু, মতিহার থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক ডিকেন, ১নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি আলহাজ্ব শহীদ আলম, ৩নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি ওয়াজির উজির, ১নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শামীম রেজা, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ওয়ালিউল হক রানা ও বর্তমান সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট,জেলা যুবদলের সভাপতি মোজদ্দে জামান সুমন, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রিটন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হাসনাইন হিকোল, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাকির হোসেন রিমন, সাধারণ সম্পাদক আবেদুর রেজা রিপন, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার রহমান ভুট্টো, মহানগর ছাত্র দলের সভাপতি আসাদুজ্জমান জনি, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রবি ও যুগ্ম সম্পাদক আকবর আলী জ্যাকি সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনে নেতারা উল্লেখ গত ২৭ অক্টোবর, ২০১৮ শনিবার রাজশাহীর নির্বাচন কমিশন প্রাঙ্গনে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম প্রদর্শনী হয়েছে। আগামীতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক করার ক্ষেত্রে কোনরূপ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করে বিশ্বব্যাপী পরিত্যক্ত ও বর্জিত ইভিএম নিয়ে মাতামাতি রাজনৈতিক দুরভিসন্ধিমূলক। তারা আরো বলেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করে অধিকাংশ আইটি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শকে তোয়াক্কা না করে সরকার ও তার অনুগত নির্বাচন কমিশন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে নানাবিধ কর্মতৎপরতা চালাচ্ছে। জনগণের কষ্টার্জিত প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১ লক্ষ ৫০ হাজার ইভিএম/ডিভিএম যন্ত্র ক্রয়ে নির্বাচন কমিশনের অতিআগ্রহ সন্দেহমূলক। জনগণের অর্থ লুটপাট ও তাদের ভোটাধিকার হরণ ও ভোটের ফলাফল ম্যানুপুলেশনে নির্বাচন কমিশনের এ ধরনের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা সকলেই অবগত আছি, যে সরকারের আমলে বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা যারা হ্যাক করতে পারে ইভিএম হ্যাক করা তাদের কোন বিষয়ই না।

নির্বাচন কমিশন যেখানে ২০১০ সালে ১০ হাজার টাকা মূল্যে ১টি ইভিএম ক্রয় করেছিল সেখানে আজ ২০গুণ বেশী দামে (দুই লক্ষ পাঁচ হাজার টাকা) তে ক্রয় করতে যাচ্ছে। এটা জনগণের অর্থ লোপাটে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের একটি অশুভ পার্টনারশীপ। ইতিপূর্বে ইভিএম আয়োজিত সংলাপে ৪০টি রাজনৈতিক দলের অধিকাংশ দল, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ এবং নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ইভিএম ব্যবহারের বিরুদ্ধে পরামর্শ/ প্রাস্তাব দেয়ার প্রেক্ষিতে জাতীয় ঐক্যমত এবং সার্বজনীন আস্থা সৃষ্টি না হলে ইভিএম ব্যবহার করার কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে না প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছিলেন। অথচ হঠাৎ করে কি ঘটলো, কি কারণে, কার নির্দেশে, কাকে খুশী এবং বিজয়ী করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশন এই বিতর্কিত এবং সারাবিশ্বে প্রায় পরিত্যক্ত ইভিএম যন্ত্র নিয়ে অতিমাত্রায় তৎপরতা চালাচ্ছে জনমনে এ প্রশ্নের উদ্রেক অস্বাভাবিক নয়! এমনকি ইভিএম ব্যবহার নিয়ে নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।

ইভিএম ব্যবহারে কমিশনের হঠাৎ অতি উৎসাহের কিছু কারণ বা যোগসূত্র বিশেষভাবে আলোচিত। সরকারের প্রতি অনুগত একজন কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী হেলালউদ্দীন গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, আরপিও সংশোধন করা হবে না। তাহলে কেন আরপিও সংশোধন করে ইভিএম ব্যবহারের এই উদ্যোগ? নেপথ্যে কে বা কারা কলকাঠি নাড়ছে? তাছাড়া নির্বাচন কমিশন আয়োজিত সংলাপে আওয়ামীলীগ আগামী জাতীয় সংসদে ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছিল। শাসক দলের প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে অনুরূপ মতামত তার বক্তৃতায় প্রদান করেছিলেন। আমরা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করছি, নির্বাচন কমিশন সে প্রস্তাবে নির্লজ্জভাবে তড়িৎ সারা দিয়েছে। অর্থাৎ সরকারের অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নেই এমন উদ্যোগ- সে সন্দেহ অমূলক নয়।

ইভিএম এর মাধ্যমে যে ভোট ম্যানুপুলেট করা যায় তা আজ বিশ্ব স্বীকৃত। আপনারা জানেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কমিশন যে স্বল্প পরিসরে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে তাতেও কেন কোন জায়গায় বিশেষ করে খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী, রংপুরে ইভিএম কখনো কখনো বন্ধ হয়ে গেছে। উল্লেখ্য যে, গত ৩০ শে জুলাই রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে রাজশাহীর ভোলানাথ একাডেমী ভোট সেন্টারে ১১টি বুথেই ইভিএম মেশিনে ভোট দেওয়ার সময় ৩ টা বুথের ইভিএম মেশিন বেলা ১২ টার মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায় এবং পরে পুনরায় তা চালু করা সম্ভব হয়নি। ইভিএম মেশিন বিদ্যুৎ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় বিদ্যুৎ না থাকলে প্রজেক্টর চালু থাকে না বিধায় রিডিংগুলি দেখতে না পাওয়ায় পোলিং এজেন্টদের জন্য দায়িত্ব পালন করা কষ্টসাধ্য। একজনের ভোট আরেকজন দিয়েছে, কোথাও ইভিএম বাদ দিয়ে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করা হয়েছিল। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ভোট কেন্দ্রে ভোটদানকালে ইভিএম মেশিন অকার্যকর হয়ে যায়, যা নির্বাচনের দিন আর মেরামত করা সম্ভব হয়নি। ফলে পরবর্তীতে আরেকদিন ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে হয়েছে। গাজীপুর সিটি নির্বাচনে একটি কেন্দ্রে ইভিএম দিয়ে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে সন্ধ্যা ৬.০০ টার বেশী বেজে যায়। অর্থাৎ ইভিএম কর্তৃক ভোট গ্রহণে নির্বাচন কমিশন উল্লিখিত স্বচ্ছতায়, ত্রুটিমুক্ত ও বিশ্বাসযোগ্য ভোট গ্রহণ এবং ভোটগণনা দ্রুত সম্পন্ন করার ঘোষণা এসব কারণেই আস্থার সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন বলছে ভোটারের বায়োমেট্রিক ছাড়া মেশিন কার্যকর হবে না, অথচ বাস্তবে ভোটার ছাড়াও চাইলে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার তার নিজের বায়োমেট্রিকের মাধ্যমে ইভিএম ভোটদানের উপযোগী করতে পারে। উল্লেখ্য যে, পৃথিবী বিখ্যাত ঝড়ভঃধিৎব ঈড়সঢ়ধহু “গরপৎড়ংড়ভঃ” বলছে, “ঞযবৎব রং হড় ংড়ভঃধিৎব রহ ঃযব ড়িৎষফ যিরপয পধহহড়ঃ নব যধপশবফ ড়ৎ পৎধপশফড়হি”
কোন কোন বিশেষজ্ঞের মতো ইভিএম এ জালিয়াতির সুযোগ থাকায় এক চাপে ৫টি ভোট দেয়া সম্ভব। তাছাড়া দেশের বা বিদেশের মাটিতে বসেও ইভিএম হ্যাক করা যায় এবং একটি ইভিএম হ্যাক করতে এক মিনিটের বেশি লাগে না। ইভিএম মেশিন বিদেশে তৈরি হয়। ফলে ইভিএম মেশিন নিয়ন্ত্রণের গোপন কোড তাদের কাছে থাকে। তারা চাইলে কারো পক্ষে-বিপক্ষে ভোটের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে।

তারা উল্লেখ করেন পৃথিবীর ৯০ ভাগ গণতান্ত্রিক দেশে, ই-ভোটিং/ইভিএম/ডিভিএম পদ্ধতি চালু নেই। হাতে গোনা যে কয়টি দেশে এটা চালু করেছিল প্রচন্ড সন্দেহ ও বিতর্কের পর তারা এটি থেকে সরে এসেছে। জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স ইত্যাদি উন্নত গণতান্ত্রিক দেশ বিতর্কিত এ পদ্ধতি ইতিমধ্যে পরিত্যাগ করেছে। পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতেও অতি সম্প্রতি ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট কারুচুপির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট ২০১২ সালের জানুয়ারী মাসে ইভিএম টেম্পারপ্রুপ নয় মর্মে রুল জারি করে। সকল বিরোধী দল ভারতে একযোগে নির্বাচন কমিশনের কাছে ইভিএম এ ভোটগ্রহণ পরিহারের জোর দাবী জানিয়েছে।

ইটঊঞ এর অধ্যাপক ড. লুৎফুল কবির ও তার উদ্ভাবিত ইভিএম মেশিনের নিরাপত্তা নিয়ে শতভাগ সন্দেহমুক্ত নন- বলে, উল্লেখ করেছেন। তাছাড়া অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মত প্রকাশ করেছেন যে, চেষ্টা সত্ত্বেও যন্ত্রে ভোট দেয়াকে সম্পূর্ণ নিরাপদ করা সম্ভব নয়। তাঁর বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনকে স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, জনআস্থাহীন গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি বিধ্বংসী, বিভ্রান্তিকর, বিশ্বব্যাপী পরিত্যাজ্য ইভিএম ব্যবহারের যে কোন উদ্যোগ/তৎপরতা বন্ধ করুন। সকল রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনাক্রমে প্রচলিত, পেপার ব্যালট পদ্ধতিকে ফুলপ্রুফ করার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করুন। সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের যাবতীয় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।
বিএনপি, দেশের সর্ববৃহৎ জনপ্রিয় এবং একাধিকবার জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ রাজনৈতিক দল হিসেবে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি হিসেবে সরকারি নিপীড়ন ও পুলিশী অপতৎপরতায় সব রকম সাংগঠনিক রাজনৈতিক কর্মকা- পরিচালনায় অধিকার থেকে বঞ্চিত। তাই আমরা মনে করি নির্বাচন কমিশনের সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে তফশীল ঘোষণার পূর্বেই সকল রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুবিধা বা লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা উচিত। রাজশাহী মহানগর ও জেলার ছয়টি আসনে এবং সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৩০টির বেশি গায়েবী মামলা হয়েছে এবং প্রায় ১২০ জনকে পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে। প্রায় ২৫০০ (দুই হাজার পাঁচশত) শত নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিগত রাসিক নির্বাচনে, ভোটের আগের দিন রাত্রে ভোট প্রদান এবং ভোটের দিনে ব্যালট পেপার না থাকা সহ দায়িত্বরত পুলিশ অফিসারদের সরাসরি হস্তক্ষেপে একটি প্রার্থীর পক্ষে ভোট প্রদানে সহায়তার নানাবিধ অনিয়ম উঠে এসেছে। এমতাবস্থায় সম্ভাব্য নির্বাচনের প্রস্তুতির কাজ সহ সর্বপ্রকার দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা ব্যহত হচ্ছে। অথচ নির্বাচন কমিশন এ বিষয় গুলোতে সম্পূর্ণ নির্বিকার। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় নির্বাচন কমিশন স্বতন্ত্র সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও সরকারের ইচ্ছা পূরণে পুরোপুরি নিয়োজিত।

আমরা মনে করি, এটি সরকারের বিরোধী দলকে সম্পূর্ণ কোনঠাসা বা লাপাত্তা করে একতরফা নির্বাচনের ষড়যন্ত্রকে বাস্তাবায়নের নীলনকশা। নির্বাচন কমিশন এই দূরহ অবস্থা অবসানে অতি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সকল দলের অংশগ্রহণে অবাধ, নিরপেক্ষ, অর্থবহ নির্বাচনের জনআকাঙ্খা বাস্তাবয়ন সম্ভব হবে না। একথা সর্বজনবিদিত বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে রাজশাহীর আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সিভিল প্রশাসনের ব্যাপক অংশ সরকারি দলের প্রার্থীর পক্ষে নির্লজ্জভাবে ভোট ডাকাতি ও ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এ প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসারসহ অন্যান্য নির্বাচনী কর্মকর্তাদের বিপুল অংশ দলীয় কর্মীর ভূমিকায় অবতীর্ণ ছিল। প্রশাসনের এসকল বিতর্কিত দলীয় অনুগত কর্মকর্তারা বিশেষ করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চিহ্নিত কর্মকর্তারা রাজশাহী প্রশাসনে দায়িত্ব বহাল থাকলে সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ, অবাধ নির্বাচনের এবং দলীয় সাংগঠনিক কর্মকা- পরিচালনা করা প্রায় অসম্ভব। নির্বাচনের তফশীল ঘোষণার পূর্বেই সম্ভাব্য নির্বাচনকে বাধাহীন করতে এসকল প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের রাজশাহী থেকে প্রত্যহার অতি আবশ্যক বলে আমরা মনে করি। তদস্থলে নিরপেক্ষ পেশাদার কর্মকর্তাদের পদায়ন করার প্রয়োজনীয় ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা একান্ত জরুরী।

আমাদের পূর্ব ঘোষিত দাবিসমূহ- বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, বর্তমান সংসদ বাতিল, সরকারের পদত্যাগ, সকল দলের অংশগ্রহণের আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন, ভোটের পূর্বে ম্যাজেস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়ন, ইভিএম ব্যবস্থা থেকে সরে আসা, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দল নিয়োগ- আমন্ত্রণ, সকল রাজবন্দীদের মুক্তি, নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত তাদের প্রশাসনিক হয়রানি থেকে মুক্ত রাখা, নিরাপত্তা প্রদান, গ্রেফতার তল্লাশির নামে হয়রানি বন্ধ, নতুন ও পুরাতন সকল রাজনৈতিক মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখা- সুষ্ঠ নির্বাচন আয়োজনে এবং সহনশীল শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণে অনিবার্য বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।প্রেস বিজ্ঞপ্তি ) #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.