গাইবান্ধায় নকল প্রসাধনীতে বাজার সয়লাব।। প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ জনগণ 

গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে হাত বাড়ালেই মিলছে নকল আর ভেজাল প্রসাধনী। মোড়ক দেখে কারও বোঝার সাধ‍্য নেই কোনটি আসল আর কোনটি নকল। এসব নকল প্রসাধনী ব‍্যবহার করে  স্কিন ক‍্যান্সার সহ বিভিন্ন জটিল ও কঠিন রোগে ভুগছে মানুষ।
উপজেলার কসমেটিকস দোকানগুলোতে রকমারি আসল পণ্যের পাশাপাশি নকল ভেজাল ও ভারতীয় পণ্যের সমারোহে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। বিশ্বের সব নামকরা ব্র‍্যান্ডের প্রসাধনী সামগ্রী থরে থরে তাকে সাজানো। হুবহুব একই ধরনের মোড়কে তৈরি করা এসব নকল ভেজাল প্রসাধনী বাইরে থেকে দেখে সাধারণ কোন ক্রেতার পক্ষে বোঝার উপায় নেই যে এটি নকল।
আসল কোম্পানীর স্টিকারের মত হুবহুব স্টিকার লাগানো রয়েছে নকল সব পণ্যের প‍্যাকেটের গায়ে। রয়েছে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্নের তারিখ এবং সর্বোচ্চ খুচরা মূল‍্যের ছাপ।
তবে একটু বিচুক্ষণতার সাথে তাকালে দেখা যাবে লেখা ছোট বড়, মোড়কের কালারের ভিন্নতা, আসল পণ্যের ঘনত্ব, ঘ্রাণ সব কিছুতে একটি স্ট‍্যান্ডার্ড বজায় রাখা হয়। নকল পণ্যেয় উৎকট গন্ধ ও ঘ্রাণ পাওয়া যাবে। নকল পণ্যের প‍্যাকেট এবং পণ্যের মিল পাওয়া যাবে না। নকল আই শ‍্যাডো, ব্রাশ অন, লিপস্টিক ও পাউডার সাধারণত আসল পণ্যের মত একই রঙের হয় না। পণ্যের প‍্যাকেট, লোগোর অবস্থান সব কিছুর দিকে নজর দিতে হবে। প‍্যাকেটের সিরিয়াল নাম্বার এবং ভেতরের পণ্যের সিরিয়াল নাম্বার মিলিয়ে নিতে হবে।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখকে ফাঁকি দিয়ে পলাশবাড়ী উপজেলার কসমেটিকসের দোকানগুলোতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে এসব নকল নামীদামি কোম্পানীর আমলা তৈল, কুমারিকা,ডাবর আমলা,ভাটিকা, ফেয়ার এন্ড লাভলী, লোশন, ফেসওয়াশ,বেলী ফুল তৈল, জেন স্টার ক্রিম,স‍্যাভলোন ক্রিম, ওলিভ ওয়েল,গোলাপ পানি, জনসন বেবি পাউডার, বেবি ওয়েল, বডি ম্প্রে  সার্ফ ব্রেড,জিলেটসহ ২০ থেকে ২৫ প্রকার নকল কসমেটিকস।
প্রতিবছর সরকারকে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত, পাকিস্তান, চীন থেকে অবৈধ পথে প‍্যারাসুট, কুমারিকা, ডাবর আমলা,ফগ,সিগনেচার,হেবা গোল্ড, সিটি গোল্ড, কানের দুল, শ‍্যাম্পু, কোবরা, ভিট, হেয়ার রিমুভার, গুড়া পাউডার, শিশুদের গুড়া দুধ, পাকিস্তানী গ্লোরি ক্রিম, এনে অধিকাংশ কসমেটিকস এবং মুদি দোকানে দেদারছে বিক্রি করছে এক শ্রেনীর অসাধু ব‍্যবসায়ী। বেশি লাভের আশায় কসমেটিকস ও মুদি দোকানদারেরা এসব নকল এবং ভারতীয় প্রসাধনী কিনে দেদারছে বিক্রি করছে।
জানাযায়, বেশিরভাগ কসমেটিকস পণ্যেয় পারদ, ক্রোমিয়ামসহ ত্বকের ক্ষতিকারক উপাদান রয়েছে। এগুলো শরীরের জন‍্যও মারাত্মক ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন  ধরে এসব ভারতীয় এবং নকল কসমেটিকস ব‍্যবহারের কারণে স্কিন ক‍্যান্সারসহ জটিল ও কঠিন রোগে ভুগছেন।
পরিত্যক্ত মোড়ক ও কৌটাতে নকল প্রসাধনী ঢুকিয়ে তা পলাশবাড়ীর বিভিন্ন কসমেটিকসের দোকানে বিক্রি করছে।
তথ‍্যনুসন্ধানে দেখা যায়, উপজেলার হারুন মার্কেট, হাইস্কুল মার্কেট, চৌমাথার আশেপাশের মার্কেটের কসমেটিকসের দোকান, মুদি দোকান, কালীবাড়ী বাজারের মুদিদোকানসহ গ্রাম-গঞ্জের হাটে বাজারের দোকানগুলোতে এসব নকল এবং ভারতীয়  কসমেটিকস পণ্য দেদারছে  বিক্রি হচ্ছে। মুদি দোকানগুলোতে মানুষের জীবন রক্ষাকারী ওষুধও বিক্রি হচ্ছে ।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব নকল পন্য ব‍্যবহারের কারণে অনেকেই বড় ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। ক্ষতিকর কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি এসব প্রসাধনী ব‍্যবহারে চর্মরোগ, স্কিন কালচে হওয়া, স্কিন ক‍্যান্সারসহ এমন কিছু জটিল রোগ হচ্ছে যার চিকিৎসায় বিপুল পরিমান অর্থ ব‍্যয় করেও কোনো  কাজ হচ্ছে না। এমনকি অঙ্গহানির মত ঘটনা ঘটছে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর গাইবান্ধা প্রতিনিধি মোঃ শাহরিয়ার কবির আকন্দ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.