নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বলেন, একের পর এক পরিকল্পিত অগ্নিকান্ডের ঘটনাগুলো কেবল কাকতালীয় নয়, এগুলো জাতিকে ভাবিয়ে তুলেছে। এই ধারাবাহিক অগ্নিকান্ডের পেছনে পরিকল্পিত নাশকতার গন্ধ রয়েছে।
দেশের মানুষ এখন প্রশ্ন তুলছে এই ঘটনাগুলোর পেছনে কারা, কেনই বা হঠাৎ করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিকান্ডের এমন পুনরাবৃত্তি ঘটছে বলে বুধবার সকালে রাজশাহীর আড়ানী মনোমোহনী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন,দেশের মানুষ যখন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে, তখন ইচ্ছাকৃতভাবে এসব ঘটনার মাধ্যমে জনগণের মাঝে ভয় ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা নির্বাচন বানচালের গভীর ষড়যন্ত্র চলছে বলে জনসভাটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র মেরামত কাঠামো ৩১ দফা বাস্তবায়ন এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হয় ।
আসন্ন নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন,সরকার আগামী ফেব্রæয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার বিরোধিতা করতে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির অপচেষ্টা চলছে। পরপর আগুন লাগার এই ঘটনাগুলো কি শুধুই দুর্ঘটনা, নাকি পরিকল্পিত কোনো ষড়যন্ত্র তা খতিয়ে দেখা দরকার বলে বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন,“বিএনপি বিশ্বাস করে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে একটি কুচক্রী মহল জনমনে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইছে। কিন্তু জনগণ এখন অনেক সচেতন। জনগণ জানেন, দেশের এই অগ্নিকান্ড, অস্থিরতা ও বিভ্রান্তি তৈরি করে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। জনগণ এই ধরনের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার জন্য প্রস্তুত আছে আছে বলে জানান তিনি।
পিআর পদ্ধতির বিষয়ে তিনি বলেন,দেশের সংবিধানে পিআর পদ্ধতি নেই। এর আগে দেশে কখনও এই পদ্ধতিতে কোনো নির্বাচন হয়নি। পিআরকে পেয়ার করে লাভ নেই, কারণ জনগণ এ বিষয়ে যথেষ্ট জানে না। ভোটাধিকার হলো জনগণের মৌলিক অধিকার, যা কোনো জটিল পদ্ধতিতে সীমাবদ্ধ করা উচিত নয়। তারা চান নির্বাচন হোক স্বচ্ছ, অবাধ ও জনগণের সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে।
তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা রাষ্ট্র মেরামত কাঠামো প্রসঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বলেন, এই ৩১ দফা শুধু রাজনৈতিক ঘোষণা নয়, এটি একটি জাতীয় পুনর্গঠনের সুপরিকল্পিত নকশা। এতে রাষ্ট্রের প্রশাসনিক সংস্কার, বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা, দুর্নীতি দমন, জনগণের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করার দিকনির্দেশনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি চায় নির্বাচন হোক অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশে। যেখানে জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের ভোট দিতে পারবে। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর বলে জানান তিনি।
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন- আড়ানী পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র তোজাম্মেল হক। আড়ানী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ বিল্টুর সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম মার্শাল, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য দেবাশীষ রায় মধু, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাবেক আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলী এশা, বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক আলহাজ্ব হাকিম সরকার, জেলা বিএনপির সদস্য গোলাম মোস্তফা মামুন।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন- চারঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকিরুল ইসলাম পিকুল, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান সজল, জেলা মহিলা দলের সভাপতি এডভোকেট সামসাদ বেগম মিতালী, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম সরকার, বাঘা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম মলিন, বাঘা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, বাঘা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুল ইসলাম তৌফিক, বাঘা উপজেলার মহিলা দলের সভানেত্রী সেলিনা আক্তার শাপলা, পৌর মহিলা দলের সভানেত্রী সোনিয়া সুলতানা।
সভায় বক্তারা আরও বলেন, তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব। এজন্য তারা জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
সভায় বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় নেতাকর্মীসহ হাজারো মানুষ উপস্থিত ছিলেন। #