ব্রীজ থেকে আধা কিলোমিটার বাঁশের সাকো ! চলছে টোল আদায়

বিশেষ প্রতিনিধি: সরাইলের চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রাম। সরাইল-অরূয়াইল সড়কের পাশে রয়েছে একটি খাল। খালের পরই গ্রামটির অবস্থান। গ্রামটিতে বসবাস করছে কয়েকশত পরিবার। সেখানে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা। লাশ দাফনের জন্য একটি কবরস্থানও আছে। কিন্তু সড়কের পাশের খালটি গোটা গ্রামের জন্য বড় সমস্যা।
বর্ষার পরও ৪-৫ মাস কাপড় ভিজিয়ে পার হতে হয় খাল। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, মহিলা ও রোগীদের জন্য তো চরম দূর্ভোগ। এসব সমস্যার কথা ভেবেই জনপ্রতিনিধিদের আহবানে এগিয়ে আসেন দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর।
২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ২৪ লাখ ৪৮ হাজার ৭৬৬ টাকা খরচ করে ওই খালের উপর নির্মাণ করা হয় একটি ব্রীজ।
মেসার্স জাহিন ট্রেডার্স নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছে ৩২ ফুট দৈর্ঘ্যরে এ ব্রীজটি। একই ধরণের আরো ৩টি ব্রীজ নির্মিত হয়েছে পাশ্ববর্তী পাকশিমুল ইউনিয়নের ভূঁইশ্বর গ্রামে। প্রাথমিক ভাবে সমস্যার সমাধান হলেও স্থায়ী ভাবে হয়নি।
শুষ্ক মৌসমে কয়েক মাস ব্রীজের উপর দিয়ে যাতায়ত করা যায় স্বাচ্ছন্দে। কিন্তু বর্ষায় বা এর পরের কয়েক মাস চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয় গ্রামবাসীকে। কারণ ব্রীজ নির্মাণ হয়েছে ঠিকই। কিন্তু ব্রীজের পর নেই সংযোগ সড়ক।
আবার সড়ক থাকলেও একেবারে নীচু। সামান্য পানিতেই তলিয়ে যায় ওইসব গ্রামীণ সড়ক। ফলে বর্ষার আগমনের আগেই ব্রীজের পরই তৈরী হয় প্রায় আধা কিলোমিটার লম্বা বাঁশের সাঁকো।
সরজমিনে দেখা যায়, লোপাড়ায় (মধ্যপাড়া) ব্রীজের উপর ছালার চট উপরে দিয়ে তৈরী করা হয়েছে অস্থায়ী ঘর। সেই ঘরে বসে আছেন সমছু মিয়া (৫৬) ও আহাদ মিয়া (২৩)।
তারা জানায়, তাদের সাথে আরো আছেন ফজলু মিয়া (৪৫) ও হামিদ উল্লাহ (৩৫)। চার জনে মিলে এবার ৭০ হাজার টাকা খরচ করে ৪শত হাত লম্বা বাঁশের সাকো তৈরী করেছেন। সাঁকোতে যাতায়ত চলবে ৫ মাস।
এই সাঁকো দিয়ে দৈনিক ১০০০-১২০০ লোক যাতায়ত করেন। জন প্রতি সাঁকোর টোল আদায় করেন ৫ টাকা। শিক্ষার্থীরা ফ্রি। দৈনিক প্রায় ৮শত থেকে ১ হাজার টাকা ওঠে। মাঝে মধ্যে নতুন বাঁশ ক্রয় করে কাজ করতে হয়। তাই সাঁকোটি ঠিক রাখতে আরো অনেক টাকা খরচ হয়। খুব বেশী লাভ হয় না। অন্য সাঁকো গুলোতে টোল আদায় করতে দেখা যায়নি।
গ্রামের বাসিন্ধা শাহ আলম সহ কয়েকজন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, এ সাঁকোটি অনেক লম্বা হওয়ায় গ্রামের অধিকাংশ নারী পুরূষ ও শিশুরা সুবিধা ভোগ করছেন। আর এ ব্রীজ ও সড়ক দিয়েই নদীর পাড় যেতে হয়। শুষ্ক মৌসমে এই সড়ক দিয়েই ফতেহপুর পরমানন্দপুরের নৌকা ঘাটে যায় লোকজন।
সরাইল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, প্রত্যেকটি ব্রীজই জনস্বার্থে করা হয়েছে। ১২ মাস পানির উপর দিয়ে যাতায়তের কষ্ট দূর হয়েছে। সেখানকার গ্রামীণ রাস্তা গুলি খুবই নীচু। তাই পানিতে তলিয়ে গিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়। জন সাধারণ সহ সকলে মিলে ওই রাস্তা গুলি উঁচু করা প্রয়োজন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি মোঃ লোকমান হোসেন পলা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.