হবিগঞ্জে এক মাসে করোনা আক্রান্তের হার বেড়েছে চারগুণ ! সর্বত্র উদাসীনতা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হাজারের দোড়গোড়ায়। গেল এক মাসে নতুন সংক্রমিত হয়েছেন ৬৬৪ জন। যা পূর্বের মাসের তুলনায় প্রায় চারগুণ বেশি। বিপরীতে কমে এসেছে কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং। এনিয়ে সচেতন মহলে উদ্বেগ বাড়লেও উদাসীনই রয়ে গেছেন সাধারণ পেশাজীবীরা।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে গত ১১ এপ্রিল হবিগঞ্জে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হন। একমাস পর ১১ মে ১০২ জন, ১১ জুন ২২৭ এবং ১০ জুলাই পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৮৯১ জনে। সে হিসেবে শেষ এক মাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৩.৯ গুণেরও বেশি। আক্রান্তের অনেকেই উপসর্গহীন থাকায় তারা মিশে যাচ্ছেন হাজারো সুস্থ মানুষের সাথে।
অন্যদিকে কমে গেছে কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং। রেড জোনের আওতাধীন এলাকাগুলোতেও মানুষজন চলাচল করছেন নির্বিঘ্নে ও দোকানপাট খোলা থাকছে স্বাভাবিক নিয়মে।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, সামাজিক দূরত্ব না মেনে, মাস্ক না পরে মানুষ দীর্ঘ সময় কাটাচ্ছেন। বাজারে এক-দু’জন আক্রান্ত হলে সেখান থেকে কয়েকশো’র মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অভিজ্ঞ মহল।

সম্প্রতি আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও বাজারের ৩৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ আসে। তার ঘরে রয়েছেন স্ত্রী ও ১০ বছর বয়সী সন্তান। নমুনা দেয়ার পর থেকে বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করেছেন প্রতিদিনই। থেকেছেন স্ত্রী-সন্তানের সাথে। ১৯ দিন পর তিনি জানতে পারেন করোনা পজিটিভ। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি বাজারে অনেক জনপ্রিয়ও। প্রতিদিন এখানে আসেন শতাধিক ক্রেতা। এ অবস্থায় কতজনের মাঝে করোনা ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে তা গুণে শেষ করে যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় কয়েকজন।

এ ব্যাপারে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাঈমা খন্দকার বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, তার পরিবারের সদস্য ও সংস্পর্শে আশা লোকদের নমুনা দ্রুত সংগ্রহ করার জন্যও বলা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ উদাসীন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি শায়েস্তাগঞ্জের এক ব্যাংক কর্মকর্তা শরীরে করোনা নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন কর্মস্থলে। এলাকায় নিশ্চিন্ত মনে ঘুরেছেন চুনারুঘাটের এক নারী। এভাবে প্রতিটি উপজেলায়ই করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরও হাট-বাজারে গিয়েছেন লোকজন। এছাড়া আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা লোকদের নমুনাও সংগ্রহ করা হচ্ছে না বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।

অন্যদিকে, করোনা সংক্রমনের শুরুতে জেলায় দুই শতাধিক লোকের নমুনা সংগ্রহ হলেও এখন তা কমে একশতে এসেছে। উপসর্গবিহীনদের নমুনা না নেয়া এবং ফি নির্ধারণের পর নমুনা সংগ্রহের হার কমেছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হবিগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এক কর্মচারী। এ ব্যাপারে কথা বলতে যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি সিভিল সার্জন ডাঃ একেএম মোস্তাফিজুর রহমান।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর হবিগঞ্জ প্রতিনিধি মোঃ জুনাইদ চৌধুরী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.