সীমানা অতিক্রম করেছে চীনা সেনারা, উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী

ছবি: সংগৃহীত

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ নিয়ে যখন গোটা দুনিয়া হিমশিম খাচ্ছে তখন যুদ্ধের দামামা বাজাচ্ছে ভারত ও চীন। গত কয়েক দিনে দেশ দু’টির মধ্যে তীব্র উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

ইতিমধ্যে অন্তত চারটি স্থানে এলএসি পার হয়ে ভারতের দাবিকৃত সীমানায় ঢুকেছে চীনের সেনারা। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে আজ মঙ্গলবার (২৬ মে) উচ্চ পর্যায়ের জরুরী বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়ছে, দুই দেশের মাঝে যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বা এলএসি রয়েছে, গত কয়েকদিনে সেই এলএসি বরাবর বিভিন্ন স্থানে দুই দেশের সেনারা সরাসরি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।

অন্যদিকে চীনা সৈন্যরা এবার ঘাঁটি তৈরী করেছে লাদাখের গালওয়ান ভ্যালির মতো সম্পূর্ণ নতুন জায়গাতেও, যেখানে আগে কোনও বিরোধের ইতিহাস ছিল না।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তরাঞ্চলীয় প্যানগং লেকের তীর, ডেমচক ও গালোয়ান উপত্যকা অঞ্চলের চার-পাঁচটি এলাকায় অমীমাংসিত চূড়ান্ত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) অন্তত ১২শ’ থেকে ১৫শ’ সদস্য একদম মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।

গতকাল সোমবার (২৫ মে) সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, পিএলএ’র কিছু সীমান্ত প্রতিরক্ষা রেজিমেন্ট এলএসি’র নিকটবর্তী হয়েছে। কমপক্ষে ৫০০ সেনাকে মহড়া থেকে ওই অঞ্চলের সীমান্তের দিকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

ভারতের অপর সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

এতে মোদী ভারতের ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজর (জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা) অজিত দোভাল, ভারত-চীন বিষয়ক চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।

উচ্চ পর্যায়ের এ বৈঠকে ভারতের নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী ও সেনাবাহিনীর প্রধানরাও উপস্থিত ছিলেন বলে এনডিটিভির খবরে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে কী আলোচনা হয়েছে তার বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গত দু-তিনসপ্তাহের ভেতর চীনা সেনাবাহিনী এই ‘এলএসি’ অন্তত চার জায়গায় অতিক্রম করে অবস্থান নিয়েছে। জায়গাগুলো হল; লাদাখের প্যাংগং সো বা প্যাংগং লেক, গালওয়ান নালা ও ডেমচক – আর সিকিমের নাকু লা।

এ বিষয়ে ভারতের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অজয় শুক্লা তার ব্লগে লিখেছেন, এই প্রথম সমগ্র গালওয়ান ভ্যালিকেই চীন নিজেদের বলে দাবি করছে। এই ইনট্রুশন-গুলো কিন্তু হয়েছে বিরাট একটা জায়গা জুড়ে। উত্তর লাদাখের গালওয়ান ভ্যালি থেকে কয়েকশো কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ লাদাখের ডেমচক – আর সেখান থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে সিকিমের নাকু লা পাস পর্যন্ত। যা থেকে বোঝা যায় এই গোটা অভিযানটার পরিকল্পনা হয়েছে রাজনৈতিকভাবে খুবই উঁচু মহলে, এমন নয় যে স্থানীয় কমান্ডাররা তাদের ইচ্ছেমতো এগুলো করছেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.