৭৯ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার: ‘পুলিশ দেখেও ডাকতে পারেননি অপহৃতরা’

কক্সবাজার প্রতিনিধি: ফিল্মি স্টাইলে অপহরণ ও পাহাড়ে আটকে রেখে মুক্তিপণ পেতে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে অপহরণকারীরা। তাদের উদ্ধারে অভিযান চালানো বনকর্মী, বন পাহারাদলের সদস্য ও পুলিশকে কাছাকাছি দেখেও মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে রাখায় ডাক দিতে পারেননি অপহরণের শিকার বন পাহারা দলের তিন সদস্য।
এভাবে নিপীড়ন সইয়ে একপ্রকার অনাহারে থাকার প্রায় ৭৯ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার হতে পেরে আল্লাহর প্রতি শোকরিয়া ও অভিযানকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন কক্সবাজারের টেকনাফে অপহরণের শিকার হওয়া গহীন পাহাড় থেকে উদ্ধার হওয়া তিন বনকর্মী।
গতকাল সোমবার (০৪ আগস্ট) রাতে টেকনাফ থানায় প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া-টেকনাফ সার্কেল) মুহাম্মদ রাসেল বলেন, শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) তিন বন কর্মী দমদমিয়া নেচার্র পার্ক সংলগ্ন পাহাড়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ ১৫ জনের একটি ডাকাতদল তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পাহাড়ের ভেতর নিয়ে যায়। এরপর থেকে তারা নিখোঁজ ছিলেন। অপহরণের পর থেকে আমরা একাধিকবার পাহাড়ে ভেতর অভিযান চালাই। অভিযান চলাকালীন সোমবার দুপুর ৩টার দিকে গহীন পাহাড়ে তাদের অবস্থান শনাক্ত করে আমরা যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছি তখন ডাকাতদল পুলিশের ওপর গুলি বর্ষণ করেন। এসময় পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি বর্ষণ করলে, ডাকাতদল অপহৃত তিন অপহৃত রেখে পালিয়ে যায়। পরে আমরা ঘটনাস্থল তল্লাশি করে দু’টি একনলা দেশিয় তৈরি বন্দুক ও ৫ রাউন্ড তাজা কার্তুজ উদ্ধার করি।
ব্রিফিংয়ে উদ্ধার হওয়া আব্দুর রহমান (৩৭) বলেন, শুক্রবার একদল অস্ত্রধারি এসে আমাদের তিনজনকে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে পাহাড়ে ভেতর নিয়ে যায়। মুক্তিপণ পেতে নির্যাতন শুরু করে। বাড়িতে কল করে প্রত্যেকজনের পরিবারের কাছ থেকে ২০ লাখ করে মুক্তিপণ দাবি করে আসছিলেন তারা। আমাদের ঠিকমত খেতেও দেয়নি। পুলিশ ও স্থানীয়রা আমাদের খোঁজে পাহাড়ে গেলে আমরা তাদের দেখতে পাচ্ছিলাম, কিন্তু অপহরণকারীরা তখন আমাদের অস্ত্র ঠেকিয়ে রাখায় ডাক দিতে পারিনি। এতে নিরবে চোখের জল ফেলেছি। সোমবার দুপুরের পর পুলিশ ও স্থানীয়রা পাহাড়ের চারপাশ ঘিরে রেখে অভিযান চালালে সন্ত্রাসীরা আমাদের রেখে পালিয়ে যান এবং তখনই আমাদের জীবিত উদ্ধার করে পুলিশ।
উদ্ধার হওয়া অপর দুজন হলেন, টেকনাফের দমদমিয়া এলাকার আবদুল মালেকের ছেলে মো. শাকের (২৪), মৃত আবদুল শুক্কুরের ছেলে আব্দুর রহিম (৩২), মৃত বকসু মিয়ার ছেলে আব্দুর রহমান (৩৭)।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মো. জোবাইর সৈয়দ বিটিসি নিউজকে বলেন, দীর্ঘ ৭৯ ঘণ্টা প্রচেষ্টার পর অপহৃত তিন বনকর্মীকে গহীন পাহাড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। চক্রের এক সদস্যকেও আটক করা হয়।
এর আগে গত শুক্রবার ১ সেপ্টেম্বর টেকনাফ দমদমিয়া নের্চার পার্ক সংলগ্ন পাহাড়ে তিন বন কর্মীকে অপহরণ করা হয়। এরপর থেকে অপহরণকারীরা তাদের পরিবার থেকে ৬০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করছিলেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর কক্সবাজার প্রতিনিধি আবুল কালাম আজাদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.