৬ বছরেও শ্রমিকদের পুনর্বাসন করা হয়নি, তাজরিন ট্রাজেডির ঘটনায়

ঢাকা প্রতিনিধি: সাভারে তাজরিন ফ্যাশন ট্রাজেডির ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও ভয়াবহ সেই স্মৃতির কথা ভেবে এখনো শিউরে ওঠেন ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকরা। শরীরের ক্ষত শুকিয়ে গেলেও মনের ক্ষত কমেনি। তারপরও দৃঢ় মনোবল আর অদম্য সাহস নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন অনেকেই। শ্রমিক নেতাদের মতে, শুধু প্রতিশ্রুতিতেই নয়, সরকারি- বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সাহায্যের হাত বাড়ালে অনেকেই হয়তো স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবেন।

এক সময় শ্রমিকদের কর্মযজ্ঞে মুখরিত ছিলো আশুলিয়ার তাজরিন ফ্যাশনের এই ভবনটি। এখন শুনশান নীরবতা নিয়ে নিশ্চিন্তপুরবাসীর কাছে দুঃশ্চিন্তার বলিরেখা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এটি।

আজও সেই ভয়াবহ স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে শিউরে ওঠেন আহত শ্রমিকরা। শ্রমিকরা জানান, এই দুর্ঘটনার কথা সবাই ভুলে যেতে পার আমরা ভুলতে পারবো না। এখনো আমরা শব্দ শুনলে আতঙ্কে উঠি।

তবে সব হারিয়ে নিঃস্ব হবার পরও আবারো ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য লড়ছেন অনেকেই। এমন দু’জন জরিনা ও সবিতা।নিজ উদ্যোগে কয়েকজন শ্রমিক ও পুরানো মেশিন দিয়ে গড়ে তুলেছেন কাপড় তৈরির ছোট কারখানা। কিন্তু পুঁজির অভাবে তাদের এই ঘুরে দাঁড়ানোতেও প্রতি পদে পদে বাধা পেরুতে হচ্ছে। আর সময় মতো কাপড় সরবরাহ করতে না পারায় লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।

ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক জানান, কাপড় নাই, সুতি নাই, সেই সাথে মেশিন নাই। সরকার যদি আমাদের প্রতি একটু নজর দেয়, তাহলে এই প্রতিষ্ঠানটিকে আমরা দাঁড় করাতে পারবো।

সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি সুদ-মুক্ত ঋণ পেলে ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য পরিবারগুলোও স্বাবলম্বী হতে পারবেন বলে মনে করেন গার্মেন্টস শ্রমিক নেতারা।

গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাংগঠনিক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, ছয় বছর পার হয়ে গেছে, এখনো ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের পুনর্বাসন করা হয়নি।

বাংলাদেশ পোশাক শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সভাপতি তুহিন চৌধুরী বলেন, তাদেরকে ক্ষুদ্র  ঋণ দেওয়া হোক। যাতে তারা ঋণের মাধ্যমে চলতে পারে।

২০১২ সালের ২৪শে নভেম্বর তাজরিন ফ্যাশনে ভয়াবহ আগুনে প্রাণ হারায় ১শ’ ১৪ জন। আর আহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় হাজারের ওপরে।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.