৫ দিনের ব্যবধানে বাবা-মাকে হারালেন সুমন, মাহিমা হারালো মাকে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: পাঁচ দিন আগে মারা যান সিলেটের শ্রীমঙ্গলের মো. মুসলিম। পরিবার নিয়ে থাকতেন চট্টগ্রামে। মুসলিমের দাফন ও কুলখানি শেষে তার স্ত্রী ও সন্তানরা আবার চট্টগ্রামে ফিরছিলেন। কিন্তু ট্রেন দুর্ঘটনায় মুসলিম মিয়ার সাথী হলেন তার স্ত্রী জাহেদা বেগম।
জাহেদার ছেলে রবিউল হাসান সুমন বিটিসি নিউজকে জানান, বাড়িতে বাবাকে দাফন ও কুলখানি শেষ করে মা ও আমরা সবাই আবার চট্টগ্রাম ফিরছিলাম। মা ছাড়াও তারা ২ ভাই ও ২ বোন উদয়নের যাত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু টিকেট ৪টি পাওয়ায় সুমন ছিলেন অন্য বগিতে।
দুর্ঘটনায় তার মা নিহত হওয়া ছাড়াও তার দু-বোন ও এক ভাই গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সুমনও।
হাসপাতালের শয্যায় থেকেই জানান এসব কথা। মায়ের সঙ্গে উদয়ন এক্সপ্রেসে ট্রেনে করে বাড়ি ফিরছিল আড়াই বছরের শিশু মাহিমা। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় মা কাকলী প্রাণ হারিয়েছেন।
আর আহত হয়ে হাসপাতালে ছোট্ট এই শিশুটি। দুর্ঘটনাস্থল থেকে মাহিমাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা হলেও প্রথমে স্বজনদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
মাথায় ব্যান্ডেজ পড়া শিশুটি তার চারদিকে মানুষজন দেখে হাউ-মাউ করে কেঁদে ওঠে। তার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তাকে ঘিরে সৃষ্টি হয় মানুষের আবেগ-ভালোবাসা।
পরবর্তীতে জানা যায়, মা কাকলীর সঙ্গে গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলায় ফিরছিল মাহিমা। তার বাবা মাঈন উদ্দিন একটি হোটেলে কাজ করেন। তবে ছোট্ট শিশু মাহিমা এখনও জানে না তার মমতাময়ী মা আর বেঁচে নেই। ঘাতক ট্রেন কেড়ে নিয়েছে তার মায়ের প্রাণ।
স্ত্রীর মরদেহ নিতে এসে মাঈন উদ্দিন বিটিসি নিউজকে জানান, সিলেটের শাহজালাল (র.) মাজারে মানত ছিল তাদের। সেই মানত পূর্ণ করতে কাকলী ও মাহিমাসহ তাদের কয়েকজন স্বজন সিলেটে যান।
সেখান থেকেই উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে করে ফিরছিলেন তারা। ট্রেন দুর্ঘটনায় কাকলী মারা গেছেন। এ ঘটনায় মাহিমা আহত হয়েছেন। মাহিমাকে বিকেলে আহত অন্য জনের সঙ্গে ঢাকা সিএমএইচ-এ প্রেরণ করা হয়।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি মোঃ লোকমান হোসেন পলা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.