বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: প্রথমার্ধে নেই কোনো গোলের দেখা। বিরতির পর গোল হলো মুড়িমুড়কির মতো! তিন মিনিটে দুইবার জালের দেখা পেল ম্যানচেস্টার সিটি। পরের সাত মিনিটেই সেই ব্যবধান ঘুচিয়ে দিল পিএসজি। পরে আরও দুটি গোল করে ঘুরে দাঁড়ানোর দারুণ এক গল্প লিখল ফরাসি দলটি।
জ্যাক গ্রিলিশ ও আর্লিং হলান্ড সিটিকে দুই গোলে এগিয়ে নেওয়ার পর উসমান দেম্বেলে ও বার্কোলার লক্ষ্যভেদে সমতায় ফেরে পিএসজি। জোয়াও নেভেস স্বাগতিকদের লিড এনে দেওয়ার পর যোগ করা সময়ে ব্যবধান বাড়ান গনসালো রামোস।
আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে এই ম্যাচকে ‘স্পেশাল’ বলেছিলেন পিএসজি কোচ এনরিকে; ডাগআউটে প্রতিপক্ষ ছিলেন যে তার সাবেক সতীর্থ ও ভালো বন্ধু পেপ গুয়ার্দিওলা।
মাঝে টানা ব্যর্থতার পর প্রিমিয়ার লিগে সবশেষ ম্যাচে ইপ্সউইচ টাউনকে ৬-০ গোলে হারিয়ে গুয়ার্দিওলা বলেছিলেন, ‘সিটি ফিরে এসেছে।’ কীসের কী, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ব্যর্থতার বৃত্তেই বন্দি রইল ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা।
ইউরোপ সেরার মঞ্চে সবশেষ চার ম্যাচে জয়হীন তারা; যেখানে হার ৩টি। ৭ ম্যাচে ২টি করে জয় ও ড্রয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে ২৫তম স্থানে নেমে ছিটকে পড়ার শঙ্কায় এখন তারা। সমান ম্যাচে ৩ জয় ও এক ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে ২২ নম্বরে উঠেছে পিএসজি। ম্যাচ বাকি আর একটি করে।
নতুন আঙ্গিকের ৩৬ দলের আসরে শীর্ষ আট দল সরাসরি যাবে শেষ ষোলোয়। নবম থেকে ২৪তম স্থানে থাকা দলগুলো দুই লেগের প্লে-অফ খেলবে শেষ ষোলোর বাকি আট দলের মধ্যে জায়গা করে নিতে।
প্রথম ২০ মিনিটে দুই দলই গোলের জন্য দুটি করে শট লক্ষ্যে রাখতে পারে, তবে সেগুলো কোনো গোলরক্ষককে খুব একটা ভাবাতে পারেনি।
আক্রমণ ও বল দখলে এগিয়ে থাকা পিএসজি ২৭তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত। কর্নারের পর ফাবিয়ান রুইসের হাফ-ভলি গোললাইন থেকে ফেরান সিটির ডিফেন্ডার ইয়োশকো ভার্দিওল।
সিটি প্রথমার্ধে তাদের সেরা সুযোগটা পায় ৩৯তম মিনিটে। ফিল ফোডেনের পাস ধরে দুই ডিফেন্ডারের চ্যালেঞ্জ সামলে বক্সে ঢুকে পড়েন সাভিনিয়ো। এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের প্রচেষ্টা পা দিয়ে ঠেকান পিএসজি গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা।
প্রথমার্ধের নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে জোরাল শটে সিটির জালে বল পাঠিয়ে উল্লাসে মাতেন আশরাফ হাকিমি; কিন্তু বিল্ডআপের সময় নুনো মেন্দেস অফসাইডে থাকায় গোল মেলেনি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সাভিনিয়োর বদলি নামা গ্রিলিশ ৫০তম মিনিটে এগিয়ে নেন দলকে। কাছ থেকে বের্নার্দো সিলভার শট দোন্নারুম্মা ঠেকিয়ে দিলেও, ফিরতি বল ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে জালে পাঠান ইংলিশ মিডফিল্ডার।
সিটির জার্সিতে ২০২৪ সালে কোনো গোল করতে না পারা গ্রিলিশ এই বছরে এরই মধ্যে করে ফেললেন দুটি।
৫৩তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন হলান্ড। গ্রিলিশের কাটব্যাকে প্রতিপক্ষের পা হয়ে ছয় গজ বক্সে বল পান তিনি, প্রথম স্পর্শে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন নরওয়ের তারকা।
পিএসজি জবাব দিতে বেশি সময় নেয়নি। ৫৬ থেকে ৬০ মিনিটের মধ্যে দুই গোল শোধ করে দেয় তারা।
প্রথমটি করেন দেম্বেলে, যেখানে বড় অবদান বার্কোলার। বাঁ দিক দিয়ে দারুণভাবে বক্সে ঢুকে পাস দেন তিনি, আর ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের শটে ঠিকানা খুঁজে নেন ফরাসি ফরোয়ার্ড।
পরের গোলটি হতে পারত দিজিরে দুয়ের। তার শট ক্রসবারে লেগে ফেরার পর বার্কোলার শট পোস্টের ভেতরের দিকে লেগে জালে জড়ায়।
৭৮তম মিনিটে সমর্থকদের আরেকবার উল্লাসে ভাসিয়ে এগিয়ে যায় পিএসজি। ডান দিক থেকে ভিতিনিয়ার ফ্রি-কিকে দূরের পোস্টে চমৎকার হেডে গোলটি করেন নেভেস।
যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে জালের দেখা পান দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামা রামোস। শুরুতে অফসাইডের পতাকা উঠলেও, ভিএআরে গোলের বাঁশি বাজান রেফারি। উল্লাসে ফেটে পড়ে গোটা স্টেডিয়াম। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.