২৪ বছরের চাকরিতে ২০ বছরই অনুপস্থিত, অতঃপর…

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: হাইস্কুলের এক শিক্ষক ২৪ বছরের চাকরিজীবনে ২০ বছর অনুপস্থিত ছিলেন। এ জন্য তিনি চাকরিচ্যুত হয়েছেন। ওই শিক্ষকের নাম সিনজিয়া পাওলিনা ডি লিও। ইতিহাস ও দর্শন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াতেন। এমন ঘটনা ঘটেছে ইতালিতে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিনজিয়া পাওলিনা দীর্ঘ সময় অনুপস্থিত থাকার পর ২০১৭ সালে আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস নেওয়া শুরু করেন। এরপর তিনি চার মাস শিক্ষকতাও করেন।
তবে দীর্ঘ সময় অনুপস্থিত থাকায় সিনজিয়া পাওলিনাকে সে বছর বরখাস্ত করা হয়। এ সিদ্ধান্তের বিপরীতে অনুপস্থিত থাকার পক্ষে যুক্তি দিয়ে আদালতে দ্বারস্থ হন তিনি। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ইতালির সর্বোচ্চ আদালত সিনজিয়ার শিক্ষকের পদ থেকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে।
আদালতের মতে, সিনজিয়া পাওলিনার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিতি সম্পূর্ণভাবে ‘অযোগ্যতার’ পরিচয়।
শিক্ষক সিনজিয়া আদালতের এ রায় মেনে নিতে পারেননি। একই সঙ্গে তিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করে ‘সত্য প্রতিষ্ঠার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অনুপস্থিতির যৌক্তিক কারণ সম্পর্কিত সব তথ্য (ডকুমেন্ট) তার কাছে রয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
কিন্তু গণমাধ্যমটির পক্ষ থেকে সেসব তথ্য প্রমাণ দেখতে চাওয়া হলে সিনজিয়া বলেন, ‘দুঃখিত। আমি এখন সমুদ্রতীরে আছি।’ তিনি বলেন, দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার পেছনে যে সত্য ঘটনা, আমি সেটা তুলে ধরব।
২০১৮ সালে সিনজিয়া পাওলিনা ভেনিসের একটি আদালতের এক বিচারকের রায়ে স্বপদে বহাল হয়েছিলেন। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। এ আপিলে গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট ওই শিক্ষকের বরখাস্তের পক্ষেই রায় প্রদান করে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, সিনজিয়া চাকরির প্রথম ১০ বছর টানা অনুপস্থিত ছিলেন। পরের ১৪ বছরে তিনি অসুস্থতা, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে মোট ১০ বছর অনুপস্থিত ছিলেন।
২০১৫ সালে সিনজিয়া ভেনিসের একটি স্কুলে পড়িয়েছেন। স্কুলের শিক্ষার্থীরা সিনজিয়ার বিরুদ্ধে পাঠদানে প্রস্তুতির অভাব, ক্লাসে পাঠ্যবই না আনা এবং অযৌক্তিকভাবে নম্বর প্রদানের অভিযোগ করেন।
মামলার তদন্ত কার্যক্রম থেকে দেখা গেছে, সিনজিয়া ক্লাসে প্রস্তুতিহীন ও অমনোযোগী থাকতেন। শিক্ষার্থীরা তার ক্লাস করতে চাইত না। কেননা ক্লাসের বেশির ভাগ সময় তিনি ফোনেই ব্যস্ত থাকতেন।
সিনজিয়াকে বরখাস্তের বিষয়টি আদালতে গড়ায়। পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিতর্ক ও আপিল শেষে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য উচ্চ আদালতে যায়। সিনজিয়ার যুক্তি হলো, একজন শিক্ষকের পাঠদানের স্বাধীনতা থাকা উচিত। আদালত এ যুক্তি গ্রহণ করেনি। আদালত বলেছে, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার অধিকার নিশ্চিত করা একজন শিক্ষকের দায়িত্ব। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.