১৩ নভেম্বর খুলনায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী, ২৪ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন 

খুলনা ব্যুরো: আগামী ১৩ নভেম্বর খুলনা সফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
সাড়ে চার বছরেরও বেশি সময় পর খুলনায় আসছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ৩ মার্চ খুলনায় তার শেষ সফর ছিল। তবে ব্যাক্তিগত সফরে গত ৬ জানুয়ারী তিনি খুলনায় এসেছিলেন।
সফর কালে, তিনি ২৪ টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন এবং ১০টি স্কুল ও কলেজ সহ আরও পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাধারণ) পুলক কুমার মন্ডল আজ (১১ নভেম্বর) জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী খুলনা বিভাগের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করবেন।
আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনা ও উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড ও পোস্টারে সাজানো হয়েছে পুরো খুলনা।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে খুলনা জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ একাধিক প্রস্তুতি সভা করেছে। খুলনার জেলা প্রশাসক খোন্দকার ইয়াসির আরেফিন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর খুলনা সফরকে সামনে রেখে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মহাসমাবেশ সফল হবে এবং খুলনার জনগণ খুশি হবে কারণ প্রধানমন্ত্রী ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং অন্য পাঁচটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
এদিকে খুলনায় আগামী ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ। চলছে মাইকিং, পোস্টারিং, প্ল্যাকার্ড, বিলবোর্ড, তোরণ নির্মাণ, আলোকসজ্জা, প্রচার মিছিল। প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে কেন্দ্র করে গোটা খুলনা নগরী নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)।
দুপুর ২টায় খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, ইতোমধ্যে দফায় দফায় দল ও সহযোগী সংগঠনগুলো প্রস্তুতি সভা করেছে। কেন্দ্রীয় নেতারা একাধিকবার এসে প্রস্তুতি দেখে গেছেন। প্রতিদিন শহরে প্রচার মিছিল করছেন নেতাকর্মীরা। নগরীজুড়ে দিনরাত চলছে মাইকিং, লাগানো হয়েছে পোস্টার, বিলবোর্ড, প্ল্যাকার্ড। গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে রাতে আলোকসজ্জা করা হচ্ছে। নগরীর বিভিন্ন সড়কে নির্মাণ করা হয়েছে দুই শতাধিক তোরণ। সার্কিট হাউস মাঠের আবাহনী ক্রীড়াচক্র প্রান্তে তৈরি করা হচ্ছে নিচে নৌকা ও ওপরে পদ্মা সেতুর আদলে ৯০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থের মঞ্চ। এতে অন্তত ৪০০ জন অতিথি বসতে পারবেন। মঞ্চের উচ্চতা সাড়ে ১৩ ফুট।
মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক জানান, সমাবেশের দিন সার্কিট হাউস মাঠে থাকবেন নারী কর্মীরা। পুরুষ নেতাকর্মীরা থাকবেন মাঠের চারপাশের সড়কগুলোতে। মাঠ ছাড়াও নগরীর কাস্টমস ঘাট থেকে শিববাড়ি মোড়, জেলখানা ঘাট, সদর থানার মোড়, হাদিস পার্ক ও হাজী মুহসীন রোডে মাইক দেওয়া হবে। শিববাড়ি মোড়সহ বেশ কয়েকটি স্থানে এলইডি মনিটরে দেখানো হবে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ।
তিনি আরও জানান, বাগেরহাট, পিরোজপুর ও গোপালগঞ্জ থেকে যেসব পুরুষ নেতাকর্মী আসবেন তারা রূপসা ঘাটে নেমে ফেরিতে পার হবেন। এ জন্য রূপসা ঘাটে ৫টি ফেরি দেওয়া হচ্ছে। আর নারী কর্মীদের বহনকারী বাস নগরীর নতুন বাজার পর্যন্ত আসবে। এ ছাড়া জেলখানা ঘাটে ৩-৪টি ফেরি দেওয়া হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের নেতাকর্মীর জন্য ওই দিন সকালে একটি স্পেশাল ট্রেন খুলনায় আসবে। ওই দিন বিএনপি অবরোধ দিলেও কোনো অসুবিধা হবে না। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে বাধা দেওয়ার সাহস তারা রাখে না।
নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল রানা জানান, জনসভায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ১০ লাখ মানুষের সমাগম ঘটানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ওই দিন নগরীর রাজপথে নেতাকর্মীর ঢল নামবে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে নগর পুলিশ। কেএমপি কমিশনার মোজাম্মেল হক জানান, জনসভাস্থলে পোশাকে এবং সাদা পোশাকে পুলিশ কাজ করবে। সার্কিট হাউস মাঠ ও আশপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। গোটা নগরী নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হবে। জনসভাস্থলে আসা এবং জনসভা শেষে যাতে লোকজন নির্বিঘ্নে ফিরে যেতে পারে সেজন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.