বিটিসিআন্তর্জাতিকডেস্ক: হারিকেন ইয়ান আঘাত হেনেছে সমগ্র কিউবা জুড়ে। যার তেজে ভেঙে পড়েছে কিউবার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। বৈদ্যুতিক গ্রিড বিপর্যয়ে অন্ধকারে ডুবে গেছে গোটা দেশ। আর চলার পথে সব কিছু তছনছ করে দিয়ে গেছে তৃতীয় মাত্রার শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টি।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) জানিয়েছে, হারিকেন ইয়ান মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে ফ্লোরিডার অদূরে ড্রাই টর্তুগাসের দিকে এগোচ্ছিল। এর বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৯৫ কিলোমিটার।
কিউবার বৈদ্যুতিক গ্রিড কয়েক দশকের পুরোনো এবং সমস্যায় জর্জরিত। কয়েক মাস ধরে দেশটিতে প্রায় প্রতিদিনিই লোডশেডিংয়ের ঘটনা ঘটছে।
তবে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঝড়ের আঘাত সামলানোর ক্ষমতা ছিল না কিউবান গ্রিডের। ফলে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছেন দেশটির ১ কোটি ১৩ লাখ মানুষ।
কিউবার ইলেকট্রিসিটি ইউনিয়নের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর লাজারো গুয়েরা বলেন, হারিকেন ইয়ান আঘাত হানার আগেই বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা জটিল পরিস্থিতিতে ছিল। এই মুহূর্তে দেশের কোথাও বিদ্যুৎ নেই। তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে কাজ করছে ইউনিয়ন।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, মঙ্গলবার ভোরে কিউবার পিনার দেল রিও প্রদেশে আঘাত হানে হারিকেন ইয়ান। এর আগেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পুরো প্রদেশের বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় কর্তৃপক্ষ। উপকূলীয় এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় অন্তত ৪০ হাজার বাসিন্দাকে। পশ্চিমাঞ্চলে ঝড়ের আঘাতে অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
ঝড়ো বাতাসের ঝাপটায় বহু বাড়িঘরের জানালা ভেঙে গেছে, উড়ে গেছে ভবনের ধাতব ছাদ। ঘূর্ণিঝড়ের সরাসরি আঘাত লাগা এলাকাগুলোতে গাছ উপড়ে ও বিদ্যুতের তার ছিড়ে বন্ধ হয়ে গেছে রাস্তাঘাট।
পিনার দেল রিও এলাকার বাসিন্দা ৫৬ বছর বয়সী আনা জুলিয়া গোমেজ বলেন, আমি এমন কিছু কখনো দেখিনি। আমি সব হারিয়েছি, আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।
স্থানীয় তামাক চাষি আবেল হার্নান্দেজ বলেন, কখনো কখনো এই এলাকা দিয়ে হারিকেন যায়। তবে এই মাত্রার নয়। এটি আমাদের বাড়ি, ফসল শুকানো ঘর, আমাদের খামার, ফলের গাছ, সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে।
প্রতিবেশী আর্টেমিসা প্রদেশের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঝড়ের কারণে ওই অঞ্চলের অন্তত ৪০ শতাংশ কলা বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। (সূত্র: রয়টার্স)। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.