হামাগুড়ি দিয়ে পার হতে হয় এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বাঁশের সাঁকোতে হামাগুড়ি দিয়ে পার হচ্ছেন বাসিন্দারা। স্থানীয়দের নিজস্ব অর্থায়নে  তৈরি এই সাঁকো ভেঙে পড়লেও সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত সেতু নির্মাণের কোনো উদ্যোগ  নেওয়া হয়নি। এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে পারা হতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। তাই স্থায়ীভাবে সাঁকো নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কিশামত শিমুলবাড়ী এলাকায় করিমের ঘাটে বারোমাসিয়া নদীর ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি জরাজীর্ণ অবস্থার মধ্যে রয়েছে। চলতি বছরে তীব্র স্রোতে সাঁকোর মাঝামাঝি জায়গায় কয়েকটি খুঁটি ভেঙে পড়েছে। এরই ওপর দিয়ে ঝুঁকির মধ্যে চলাচল করছে মানুষ। ভারী মালামাল নিয়ে পার হতে গেলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।  আর নারীরা হামাগুড়ি দিয়ে অনেক ঝুঁকির মধ্যে মালামাল পার করছেন। আর স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে।
স্থানীয়রা বিটিসি নিউজকে জানান, বারোমাসিয়া বা বাণিদহ নদীটি ধরলা নদীর একটি উপশাখা। যা সরাসরি ভারত থেকে এসে উপজেলার মূল ধরলা নদীতে মিশে গেছে। ধরলা নদী ও বারোমাসিয়া নদীর পানির রঙ সম্পূর্ণ আলাদা। ফলে বারোমাসিয়া নদীটি আলাদা বৈশিষ্ট্য বহন করছে। এই নদী ভারতের কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার সীমান্তবর্তী মরাকুটি গ্রাম দিয়ে বাংলাদেশে এসেছে নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোড়ক মণ্ডপ গ্রাম দিয়ে। স্থানীয়ভাবে এই নদীকে বাণিদহ বা বারোমাসিয়া নদী বলা হয়। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৫ কিলোমিটার। এই উপশাখা নদীর ওপর দুটি বাঁশের সাঁকো রয়েছে। একটি গতমাসে তৈরি হলেও করিমে ঘাটের সাঁকোটি বন্যায় ভেঙে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা।
সাঁকো পারাপার করার সময় স্কুলশিক্ষার্থী মমিনুল ও আজমেরী বলে,‘আমরা প্রতিদিন ভয়ে ভয়ে পার হই। ভাঙা জায়গাটি পার হতে গিয়ে মনে হয়, এই বুঝি সাঁকো  ভেঙে পড়ে যাবে!’
কৃষক হামিদ মিয়া ও কাশেম আলী বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘ছয় বছর আগে এখানে একটা ঘাট ছিল। তখন  নৌকা দিয়ে পার হয়েছি। তারপর বাঁশ কালেকশন করে এই সাঁকো দিয়েছি। এবার সাঁকোটিও ভেঙে গেছে। এখন পারাপারে খুবই সমস্যা।’
বালাহাট আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক ও মৎস ব্যবসায়ী আতাউর রহমান রতন বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ সবাইকে ব্রিজের ওপর ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয়। সাঁকোটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১২০ ফুট। প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ পারাপার হয়। প্রতিবছর নিজেদের উদ্যোগ সাঁকোটি পারাপারের উপযোগী করি। স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আমরা এখানে একটি স্থায়ী ব্রিজ চাই।’
এই প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুমন দাস বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘ইতোমধ্যে জনদুর্ভোগ কমাতে দুটি জরাজীর্ণ কাঠের সেতু মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছি। এছাড়া এই রকম কোনো বিষয় নজরে এলে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করি। যেন জনদুর্ভোগ কমানো নিশ্চিত করা যায়।’

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি মো. হাফিজুর রহমান হৃদয়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.