হাঙ্গেরিকে হারিয়ে শেষ ষোলোয় জার্মানি

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: প্রথমার্ধে জার্মানির কঠিন পরীক্ষা নিল হাঙ্গেরি। তবে গোলরক্ষক মানুয়েল নয়ারের দেয়াল ভেদ করতে পারল না তারা। দুই অর্ধে দুই গোল করে আরেকটি দারুণ জয় তুলে নিল জার্মানরা। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শেষ ষোলোয় উঠে গেল ইউলিয়ান নাগেলসমানের দল।
স্টুটগার্টে বুধবার ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচটি ২-০ গোলে জিতেছে চারবারের বিশ্বকাপ জয়ীরা।
জামাল মুসিয়ালা এগিয়ে নেন দলকে। ওই গোলে অবদান রাখা অধিনায়ক ইলকাই গিনদোয়ান পরে নিজে করেন দ্বিতীয়টি।
তিন ম্যাচ পর হাঙ্গেরিকে হারাতে পারল জার্মানি। ২০২২ সালে সবশেষ ম্যাচে জার্মানরা ১-০ গোলে হেরেছিল নেশন্স লিগে। তার আগে দুটি ড্র হয়েছিল।
বড় টুর্নামেন্টে এই দুই দলের চারবারের মুখোমুখি লড়াইয়ে গোল হলো মোট ২২টি। ১৯৫৪ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে তখনকার পশ্চিম জার্মানিকে ৮-৩ গোলে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল হাঙ্গেরি। তবে ওই সময়ের প্রবল শক্তিশালী দলটিকে ফাইনালে ৩-২ গোলে হারিয়ে চমকে দেয় জার্মানরা।
এরপর গত ইউরোয় জয়ের পথেই ছিল হাঙ্গেরি। কিন্তু লেয়ন গোরেটস্কার ৮৪তম মিনিটের গোলে ২-২ ড্র করে জার্মানি।
এবার আন্টোনিও রুডিগারের ভুলে প্রথম মিনিটেই গোল খেতে বসেছিল জার্মানি। তবে এগিয়ে এসে বার্নাবাস ভার্গার প্রচেষ্টা রুখে দলকে রক্ষা করেন সমালোচনার মুখে থাকা গোলরক্ষক নয়ার।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠা ম্যাচে একাদশ মিনিটে প্রথম উল্লেখযোগ্য সুযোগ পায় জার্মানি। কাছ থেকে কাই হাভার্টজের শট দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন হাঙ্গেরির গোলরক্ষক পেতার গুলাসি।
২২তম মিনিটে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। বক্সে মুসিয়ালার পাস গিনদোয়ানের পা ছুঁয়ে লাগে উইলি অর্বানের গায়ে। গিনদোয়ানের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মাটিতে পড়ে যান হাঙ্গেরির এই ডিফেন্ডার। তার থেকে বল কেড়ে নিয়ে জার্মান অধিনায়ক পাস দেন মুসিয়ালাকে। জটলার ভেতর থেকে জাল খুঁজে নেন তরুণ ফরোয়ার্ড।
অর্বান পড়ে যাওয়ার পর ফাউল না ধরায় রেফারির ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন হাঙ্গেরির খেলোয়াড়রা।
সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে কোনো ইউরোয় গ্রুপ পর্বে দলের প্রথম দুই ম্যাচেই গোলের কীর্তি গড়লেন ২১ বছর বয়সী মুসিয়ালা।
এবারের ইউরোর আগে জার্মানির হয়ে ২৯ ম্যাচে তার গোল ছিল স্রেফ ২টি। ইউরোয় ২ ম্যাচে করলেন ২টি। আসরে একাধিক গোল করা প্রথম খেলোয়াড় তিনি।
চার মিনিট পর দুর্দান্ত সেভে ব্যবধান ধরে রাখেন নয়ার। হাঙ্গেরির অধিনায়ক দমিনিক সোবোসলাইয়ের উঁচু ফ্রি-কিক ঝাঁপিয়ে ফেরান তিনি। ফিরতি বলে কাছ থেকে ভার্গার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন বায়ার্ন মিউনিখ গোলরক্ষক। ৩০তম মিনিটে সোবোসলাইয়ের আরেকটি শট প্রতিহত করেন এক ডিফেন্ডার।
৪৪তম মিনিটে অল্পের জন্য দ্বিতীয় গোল পাননি মুসিয়ালা। বক্সের বাইরে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে শট নেন বায়ার্ন মিউনিখ ফরোয়ার্ড, বল পাশের জালে লাগে।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে সোবোসলাইয়ের ফ্রি-কিকে অর্বানের হেড ফিরিয়ে দেন নয়ার, ফিরতি বল জালে পাঠান রোলান্দ সালাই। তবে অফসাইডেরর কারণে গোল মেলেনি।
প্রথমার্ধে স্রেফ ২৮ শতাংশ পজেশন ধরে রেখে গোলের জন্য ৭টি শট নিয়ে তিনটি লক্ষ্যে রাখে হাঙ্গেরি। জার্মানির ৮ শটের তিনটি লক্ষ্যে ছিল।
৫৬তম মিনিটে বক্সের ডান দিক থেকে গিনদোয়ানের শট ফিরিয়ে দেন গুলাসি। ফিরতি বলে টনি ক্রুসের শটও রুখে দেন ৩৪ বছর বয়সী গোলরক্ষক। চার মিনিট পর সালাইয়ের ক্রসে বক্সে দারুণ সুযোগ পেয়ে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ভার্গা।
৬৭তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে হাঙ্গেরির ঘুরে দাঁড়ানোর পথ আরও কঠিন করে তোলে জার্মানরা। মাক্সিমিলিয়ানোর পাস ফাঁকায় পেয়ে প্রথম স্পর্শে শটে জালে পাঠান গিনদোয়ান।
ইউরোয় বার্সেলোনার এই মিডফিল্ডারের প্রথম গোল এটি।
দ্বিতীয়ার্ধে হাঙ্গেরির আক্রমণে ধার ছিল না তেমন। দ্বিতীয় গোল হজমের পর আরও ম্রিয়মান হয়ে পড়ে তারা। শেষ দিকে একটি সুযোগ যদিও পেয়েছিল তারা। কিন্তু বদলি নামা মার্টিন অ্যাডামের প্রচেষ্টা গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করেন এক ডিফেন্ডার।
দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ গ্রুপের শীর্ষে আছে জার্মানি। চার তৃতীয় সেরা দলের একটি হিসেবে নকআউটে যাওয়া নিশ্চিত হলো তাদের। তবে শীর্ষ দুইয়ে থেকেই গ্রুপ পর্ব শেষ করার সুযোগ তাদের এখনও আছে।
আসরে ছয় গ্রুপের শীর্ষ দুটি করে দল যাবে নকআউটে। সঙ্গে গ্রুপে তৃতীয় হওয়া সেরা চার দল পাবে শেষ ষোলোর টিকেট। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.