হরিয়ানায় বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো ২৫০ ঝুপড়ি

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: হরিয়ানায় সংঘর্ষে জর্জরিত নুহ শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরের টাউরুতে বসবাসকারী অভিবাসীদের ঝুপড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টরের নির্দেশে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বুলডোজার নিয়ে অভিযানে নামে সরকার। এ পদক্ষেপকে অবশ্য কথিত দাঙ্গাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন এবং মুখ্যমন্ত্রী আগেই অভিযোগ তুলেছিলেন যে এই অভিবাসীরা সংঘর্ষে জড়িত ছিল। বাংলাদেশ থেকে আসা ‘অবৈধ’ অভিবাসীরা এখানে থিতু হওয়ার আগে আসামে বাস করতেন। তারা নুহ জেলার তোরু শহরের মহম্মদপুর সড়কের এক নম্বর ওয়ার্ডে হরিয়ানা আরবান অথরিটির জমিতে ঝুপড়ি স্থাপন করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রায় এক একর জমিতে ২৫০টিরও বেশি ঝুপড়ি তৈরি করে তারা গত চার বছর ধরে বসবাস করে আসছিল বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বুলডোজার দিয়ে যখন ঝুপড়িগুলো মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছিল তখন চারপাশে ছিল পুলিশ এবং আধা-সামরিক বাহিনীর ভারী উপস্থিতি। ঘটনাস্থলে ছিলেন বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তারাও। পুলিশ ও প্রশাসনের অভিযোগ, কথিত অনুপ্রবেশকারীসহ ‘বহিরাগতরা’ ভিএইচপি মিছিলে হামলার সঙ্গে জড়িত।
এমন কঠিন পদক্ষেপ যে নেওয়া হবে তার আভাস অবশ্য আগেই মিলেছিল। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দুদিন আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, যোগী আদিত্যনাথের উত্তর প্রদেশের মতো হরিয়ানায়ও বুলডোজার চালানো হবে।
এদিকে বুধবার গভীর রাতেও তোরুতে দুটি মসজিদ ভাঙচুরের চেষ্টা হয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে গুরুগ্রামের মসজিদে জুমার নামাজ (জুম্মার নামাজ) অনুষ্ঠিত হয়নি। মুসলিম ধর্মীয় নেতাদের পরামর্শে বাড়ি থেকে নামাজ পড়েছেন মুসল্লিরা।
উদ্ভুত পরিস্থিতে নুহের পুলিশ সুপার বরুণ সিংলাকে বদলি করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ শুরুর সময় তিনি অবশ্য ছুটিতে ছিলেন। তার জায়গায় আনা হয়েছে আইপিএস অফিসার নরেন্দ্র বিজারনিয়াকে। এর আগে তিনি জেলার পুলিশ বাহিনীর প্রধান পদে কাজ করেছেন।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিল থামানোর চেষ্টাকে কেন্দ্র করে নুহতে যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল তা ছড়িয়ে পড়েছিল গুরুগ্রামে। সংঘর্ষে দুই হোম গার্ড এবং একজন ধর্মগুরুসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। বিক্ষুব্ধ জনতা বেশ কিছু যানবাহন, খাবারের দোকান এবং দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়।
পুলিশ জানায়, সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজ্যজুড়ে অভিযান চালিয়ে এখন পর্যন্ত ১৭৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক রাখা হয়েছে ৯০ সন্দেহ ভাজনকে। মামলা নথিভুক্ত হয়েছে ৪১টি।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সোমবার বিকাল ৪টা থেকে নুহ জেলায় স্থগিত মোবাইল ইন্টারনেট এবং এসএমএস পরিষেবাগুলো শুক্রবার ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত চালু করা হবে। এ সময়ে সবাইকে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে ফেলার পরামর্শ দিয়েছে সরকার।
উসকানিমূলক সোশাল মিডিয়া পোস্টের জন্য পুলিশ সাতটি এফআইআর দায়ের করেছে। তারা বলেছে, অন্তত দুই হাজার ৩০০টি ভিডিও যাচাই করা হচ্ছে। চিহ্নিত করা হয়েছে তিনটি অ্যাকাউন্ট। (সূত্র: এনডিটিভি)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.