হবিগঞ্জে প্রভাব নেই লকডাউনের। বাড়ছে করোনা  

হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: হবিগঞ্জে দিন দিন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে করোনা। এরই মধ্যে সারা দেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে জারি করা হয়েছে লকডাউন। সারা দেশের ন্যায় হবিগঞ্জেও চলছে লকডাউন। কিন্তু এর তেমন কোন প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা নেই বললেই চলে।
যদিও সরকারী বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত ও মানুষকে সচেতন করতে মাঠে কঠোরভাবে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। এরপরও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না মানুষের অবাধ বিচরণ।
প্রয়োজনে-অপ্রজনে ঘুরাফেরা করছেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষই। স্বাস্থ্যবিধি মানাতো দূরের কথা মাস্ক পড়তেও মানুষের মধ্যে দেখা গেছে অনিহা। গণপরিবহণ বন্ধ থাকাতো দূরের কথা, মানা হচ্ছে না ৫০ শতাংশ আসন শুন্য রেখে চলার বিধি নিষেধও। গতকাল  সকাল থেকে হবিগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, পূর্বের মতোই মানুষের অবাধ বিচরণ শহরে। শপিংমলগুলো খোলা৷
খোলা রয়েছে সবধরণে ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ভীরও চোখে পড়ার মতো। শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম চৌধুরী বাজারে গিয়ে দেখা যায় ভয়াবহ চিত্র। মুদিমালের পাইকারি বাজার হওয়ায় সেখানে ছিল মানুষ ও যানবাহনের জটলা।
ব্যবসায়ি দিলিপ বণিক জানান, গত লকডাউনে ব্যবসায়িরা অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এবার যদি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে তাহলে তাদেরকে পথে বসতে হবে। যে কারণে প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করেই প্রতিষ্ঠান খুলা রেখেছেন তিনি। তবে যতটুকু স্বাস্থ্যবিভিন্ন মানা সম্ভব তার চেষ্টা করছেন বলেও জানান তিনি। বানিয়াচং উপজেলার সাঙ্গর বাজারের ক্ষুদ্র মুদি ব্যবসায়ি আলী আশরাফ মিয়া। চৌধুরী বাজারে মালামাল কিনতে এসেছেন তিনি।
বলেন, ‘সামনে রমজান ও ঈদ। যে কারণে দোকানে মাল তোলতে লকডাউন ভেঙেই বাজারে আসতে হয়েছে। এমনিতেই আমি সবধরণের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলের চেষ্টা করি’ বলেন তিনি।
ব্যবসায়ি সরওয়ার আহম্মদ বলেন, ‘লকডাউনের কারণে গত বছর একদিনও দোকান খুলিনি। এতে বিপুল পরিমাণ মালামাল নষ্ট হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। পরিবার চালাতে ঋণ করতে হয়েছে। কিন্তু এরপরও লকডাউনে দোকান খুলার ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু আমার কিছু নিজস্ব পাইকারী ক্রেতা রয়েছেন, তাদের চাপের কারণে দোকান খুলতে হয়েছে।’
এদিকে, লকডাউন নিশ্চিত করতে মাঠে কাজ করছে প্রশাসনের লোকজন। জেলা শহরে ভ্রাম্যমান আদালতের একাধিক টিম কাজ করছে। এছাড়া জেলার ৯টি উপজেলায় মাঠে রয়েছে ইউএনও, এসিল্যান্ডসহ পুলিশ প্রশাসন।
সচেতনতার পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে করা হচ্ছে জরিমানা। লকডাউনের প্রথম দিন ৫ এপ্রিল জেলায় ২০টি ভ্রাম্যমান আদালতের টিম কাজ করে। এর মধ্যে ১০৮টি মামলার মাধ্যমে ১০৮ জন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ৬৫ হাজার ৩৫০ টাকা জরিমানা করা হয়।
লকডাউনের দ্বিতীয় দিন গতকাল মঙ্গলবারও ভ্রাম্যমান আদালতের পরিচালনা করেছে জেলা প্রশাসন। যদিও শহরে অবাদে টমটম চলাচল নিয়ে রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ। সাধারণ মানুষজন বলছেন, টমটম চালকরা তো মাস্ক পরিধান করছেই না বরং তারা একটি টমটমে যাত্রী নিচ্ছে ৭/৮ জন। এছাড়াও ৫ টাকার জায়গায় নিচ্ছেন ১০ টাকা।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ‘লকডাউনে মানুষ যেন ঘরে থাকে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে এরজন্য জেলা প্রশাসনসহ উপজেলা প্রশাসনের এশাধিক টিম কাজ করছে। আমি নিজেও দুইদিন ধরে মাঠে রয়েছি। প্রয়োজনে আরও কঠোর হব।’
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর হবিগঞ্জ প্রতিনিধি মোঃ জুনাইদ চৌধুরী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.