হত্যার ১৭ বছর পর রায়, ৪ জনের যাবজ্জীবন

জয়পুরহাট প্রতিনিধি: জয়পুরহাট সদর উপজেলার ফরিদপুরে পাওয়ার টিলার চালক এনামুল হক (৪৭) হত্যা মামলার প্রায় সতেরো বছর পর বাবা-ছেলেসহ চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আসামিদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ রায় দেন জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নুর ইসলাম।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন: জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে রমজান আলী, তার দুই ছেলে রঞ্জু ও শাহীন এবং রেজাউল ইসলামের ছেলে হান্নান। তাদের মধ্যে রঞ্জু পলাতক রয়েছেন। খালাস পেয়েছেন তিনজন।
তারা হলেন: একই এলাকার কোরবান আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর, সোলায়মান আলীর ছেলে আলীম ও মোস্তফার ছেলে শাহাদত ওরফে শাহাদুল।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলার ফরিদপুর গ্রামের এনামুল হক (তখন তার বয়স ছিল ৩০ বছর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে পার্শ্ববর্তী বজরপুর গ্রামে ভগ্নিপতি আবু বকর ভাদসার বাড়িতে পাওয়ার টিলার নিতে যান। সেখানে গিয়ে রাতের খাবার খাওয়ার পর পরের দিন সকালে এনামুলের বাড়িতে পাওয়ার টিলার পৌঁছে দেবেন বলে জানান ভগ্নিপতি। বাজার পর্যন্ত এনামুলকে এগিয়ে দিয়ে ভাদসা নিজ বাড়িতে চলে যান। কিন্তু ওই রাতে এনামুল বাড়ি ফেরেননি। পরের দিন ৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে এনামুলের বাড়ি থেকে প্রায় ৭০০ গজ দূরে এক কৃষক মাঠে কাজ করতে গিয়ে দেখেন, চারজন লোক মাঠের মধ্যে কিছু একটা ফেলে দিয়ে চলে গেলেন। পরে ওই কৃষক সেখানে গিয়ে আলুর ক্ষেতে জখম অবস্থায় এনামুলের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ওই ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে জয়পুরহাট সদর থানায় মামলা করেন। মামলায় পন্ডিতপুর গ্রামের মৃত কুড়ানোর ছেলে রমজান আলী এবং ফরিদপুর গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে রমজান আলী ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। পরবর্তী সময়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল ইসলাম আকন্দ কুড়ানোর ছেলে রমজান আলীর নাম বাদ দিয়ে ২০০৫ সালের ৪ মে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ১৯ জনের সাক্ষ্য শেষে আজ বিচারক এই রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) বলেন, ‘দীর্ঘ শুনানি শেষে চারজনের যাবজ্জীবন এবং তিনজনকে খালাস দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নুর ইসলাম। তাদের মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত আসামি রঞ্জু পলাতক রয়েছে।’
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর জয়পুরহাট প্রতিনিধি মো. আসলাম হোসেন#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.