হঠাৎ মনে করিয়ে দিলো পূরোনো সৃতি

নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: তখন সময় ছিলো ২০০৫ সাল আমিও ব্যস্ত পড়া লেখায় সামনে বৃত্তি পরিক্ষা। এর মাঝে বৃহস্পতিবার এসে পড়লো। নিয়োমিত আয়োজন ক্লাস শেষে সকল ছাত্র/ছাত্রীদের নিয়ে ইসলামিক গান, হামদ, কবিতা আবৃত্তি, নাটক,কৌতক প্রতিযোগিতা। কি আর করার সবারই চাপে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করতে হলো।
কিন্তু এবার একটু অন্য রকম কিছু উপহার দিতে হবে সিনিয়র ভাই আবার কাজিন সে বললো কি করা। তার মাথায় হঠাৎ একটি চিন্তা এলো যে পার্লমেন্টে যেমন বক্তব্য দেয় সেরকম কিছু একটা করবে। তো খুব দ্রত সময়ে কে কি বক্তব্য দিবে তা কাগজে লিখে ফেললো সে। তিনি হলেন স্পিকার ও…. তার নাম টা তো এখনো বলাই হয়নি। তার মোঃ রুহুলামিন, গ্রাম গুমড়া, পোস্ট মনসাপুর, থানা নবাবগঞ্জ, জেলা দিনাজপুর। তো আমরা সবাই প্রস্ততি নিচ্ছি, আমাদের সবার হাতেই দেওয়া হলো কাগজ,আর বলা হলো খুব দ্রত তা মুখস্ত করে সবার সমনে পরিবেশন করতে হবে।
আমি কাগজ হাতেই পেয়েই দেখলাম আমাকে বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে স্বাস্থ্য বিষয় নিয়ে। অর্থাৎ স্বাস্থ্য মন্ত্রী। আমার এক ভাই বা আমার ক্লাস ফ্রেন্ড গোলাম আজমে কে দেওয়া হলো কাগজ তিনিও কাগজ পেয়ে খুব খুশি কারণ তার স্কিপ্ট খুব ভালো লেগেছে। গোলাম আজম আজ আমাদের ছেড়ে চিরদিনের জন্য পাড়ি দিয়েছে ওপারে। তার মৃত্যুর প্রায় ৭ বছর আজ। ওপারে ভালো থাকিস বন্ধু। কথামতো অনুষ্ঠান শুরু হলো। এর মাঝে আমার বক্তব্য দেওয়ার সময় হলো। আমি উঠে দাড়িয়ে সালাম দিলাম।
আসসালামু আলাইকুম। মাননীয় স্পিকার আপনাকে ধন্যবাদ আমাকে সময় দেওয়ার জন্য। মাননীয় স্পিকার আমি আপনার মাধ্যমে একটি কথা উত্থাপিত করতে চাই, আজকে আমার এলাকায় গোবিন্দপুর গুমড়া দ্বীমূখী দাখিল মাদসার ছাত্র/ছাত্রী অনেক দূর্বল তাই বিবেচনা করে যদি পিটি পেড়েডের সময়টা কম করে দেওয়া যেত তাহলে অনেক ছাত্র/ছাত্রীরা মাথা ঘুরে মাটিতে পড়তো না। প্রচন্ড এই গরম, অনেক ছাত্র/ছাত্রীদের অভিযোগ যদি কর্তৃপক্ষ খাবারের স্যালাইন দিতো তাহলে পানি সল্পতা কমে গরমে ছাত্র/ছাত্রীরা অসুস্থ হতোনা। তাই ছাত্র/ছাত্রীদের প্রতি লক্ষ রেখে এইটার একটা জরুরি ব্যবস্থা গ্রহন করা দরকার। ধন্যবাদ মাননীয় স্পিকার ধন্যবাদ সকল সংসদ সদস্য কে।
এই বলে বক্তব্য শেষ করলাম কিন্তু লক্ষ্য করেছি ছাত্র/ছাত্রীরা খুব আনন্দ নিয়েছে। তার পিছলে আরো একটি করাণ রয়েছে আমি দেখতে খুব চিকন ও ছোট ছিলাম তাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রী হওয়ায় আরো বেশী হাসা হাসি করে বেশী মজা নিয়েছে। এবং পিটি পেড়েডে প্রায় সবারই অভিযোগ। কেউ করতে চায়না এই পিটি পেড়েড। তাই সবাই হাত তালি দিয়। সহমত জনালো।
রুহুলামিন ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। খুব অল্প সময়ে এত সুন্দর স্কিপ্ট তৈরি করা খুবই কষ্টকর তারপরও রুহুলামিন ভাই এতো সুন্দর স্কিপ্ট তৈরি করছেন বলতে হয় মেধা আছে। ক্লাসেও তার রোল নং-১। অনেক সময় কাটিয়েছি আমার ক্লাস ফ্রেন্ড গোলাম আজম ও বড় ভাই রুহুলামিন। আজ হঠাৎ দেখা মিললো আমাদের গ্রামের রাস্তায় ভাই ও সাথে ভাবি মোটরসাইকেল করে বাসায় যাচ্ছিলো। আমাকে দেখে গাড়ী থামিয়ে জ্বীঙ্গেস করলো কেমন আছি। কি করছি। একটু হাসি তামাসা করলাম। বড় ভাই হলেও বন্ধুর মতো একটা সময় কাটিয়েছি। কিন্তু লক্ষ্য করছি আমাদের কথায় একটু হলেও বিরক্তবোধ করছে ভাবি। গোলাম আজম মারা যাওয়ার পর আর তেমন যোগাযোগ হয়নি, তাই হয়তো ভাবি আমাকে না চিনে আমাদের কথা গুলো বিরক্তবোধ মনে করছেন। যাওয়ার সময় হাসি মূখে বলে গেলো বেড়াতে আসিস। দোয়া করি বড় ভাই সংসার জীবনে অনেক সুখী হন। আসলেই অনেক ভালো একটা মনের মানুষ ছিলেন রুহুলামিন ভাই। ভাই ও ভাবি আপনাদের জন্য শুভ কামনা রইলো। আল্লাহ হাফেজ।
উৎসর্গঃ- মোঃ রুহুলামিন
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি মোঃ ইয়ামিন সরকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.