নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: জীবিকার তাগিদে মাত্র ৬ মাস আগে স্বপ্নের ঘর সাজাতে নারায়ণগঞ্জে ৫ মেয়ে শিশু কন্যা ও দিনমজুর স্বামীকে নিয়ে কাজ করতে গিয়েছিলেন নবীগঞ্জের স্বপ্না রাণী।
ঘটনার সময় বিশ্ব খাঁ রাণী নিচ তলায় ছিল। লোকজনের চিৎকার শোনে দৌড়ে বের হয়ে যায়। কিন্তু গত ৮ জুলাই নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতায় উপস্থিত সজীব গ্রুপের প্রতিষ্ঠান সেজান জুস কোম্পানীর মর্মান্তিক অগ্নিকান্ড নিভে গেল স্বপ্না রাণীর সেই স্বপ্ন।
নিহত স্বপ্না রাণী (৩৮), নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের গোলডুবা আদর্শ (ভূমিহীন) গ্রামের জতি নমের স্ত্রী। এদিকে মায়ের সাথে একই কোম্পানিতে কাজে থাকা বিশ্ব খাঁ রাণী (১৩), বছরের শিশু প্রাণে ফিরে বেঁচে এসেছে বাবার কোলে। তার চোখে মুখে এখনো ভয়ানক সেইদিনের অগ্নিকান্ডের দৃশ্য ভেসে উঠছে। চোখের সামনে মায়ের মৃত্যু যেন কিছুতেই মানতে পারছে না।
গর্ভধারণী মা হারিয়ে ৫ বোনের অর্তনাদে এলাকার আকাশ পাতালে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শোকে কাতর পুরো গ্রামবাসী। স্বপ্না রাণীর মেয়ে বিশ্ব খাঁ রাণী জানায়, গত ৮ জুলাই অগ্নিকান্ডের সময় তার মা জীবন বাঁচাতে এই কোম্পানির ৩য় তলার জানালার কাছ থেকে লাফ দিয়ে মাটিতে লুটে পড়েন। ওই সময় তার পুরো শরীর রক্তমাখা ছিল। সেখানকার লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে সেখানকার স্থানীয়দের সহযোগীতায় ৯ জুলাই স্বপ্না রাণীর মৃতদেহ নবীগঞ্জ নিয়ে আসা হয়।
স্বপ্না রাণীর স্বামী জতি নম বিটিসি নিউজকে জানান, পরিবারের অভাব অনটন এবং ঋণের বোঝা দুর করতে স¦পরিবারে ৬ মাস পুর্বে নারায়ণগঞ্জের ভাড়া বাসায় উঠেন তারা। বড় মেয়ে ভাসনা রাণী (১৭),কাজ করতেন চায়না ব্যাগ কোম্পানীতে। দ্বিতীয় মেয়ে বিশ্ব খাঁ রাণী (১৩), মায়ের সাথে একই কোম্পানিতে করতেন।
এছাড়াও স্বপ্না রাণীর আরো তিন মেয়ে রয়েছে। তারা হলো, মিনতি রাণী (১০), মৌসুমী রাণী (৮),জবা রাণী (৩),। জতি নম এ প্রতিবেদককে আরো বলেন, স্যার আমরা গরিব মানুষ দিনমজুরী করে খাই। স্ত্রীকে হারিয়ে আজ আমার মেয়েরা দিশেহারা। ঘরে কোনো টাকাও নেই। কাউকে বলেন আমাদের সাহায্য করতে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.