স্বপদে বহাল : বিদেশে থেকেও এমপিওভুক্ত ২ শিক্ষক

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ৩নং ভাদুর ইউনিয়নের সিরন্দী গ্রামের খাতুনে জান্নাত মহিলা দাখিল মাদ্রাসার আরবি শিক্ষক মাওলানা আতাউর রহমান ও ইংরেজি শিক্ষক রেশমা আক্তার বিগত ২ বছর থেকে আমেরিকা ও সুইডেনে বসবাস করলেও তারা ওই মাদ্রাসায় এখনো স্বপদে বহাল রয়েছে।

মাদ্রাসা সুপার মাওলানা মুরাদ হোসেন ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোনাজের হোসেনকে ম্যানেজ করেই ওই দুই শিক্ষক স্ব-পদে বহাল রয়েছেন বলে জানা গেছে।

শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা গতকাল রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে মাদ্রাসার সামনে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ শেষে এসব অভিযোগ করেছেন। মাদ্রাসার এমন অনিয়মের খবর সিরন্দী গ্রামসহ উপজেলাব্যাপী সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯০ সালে স্থানীয় সিরন্দী গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাঁশ, কাঠ ও টিন দিয়ে ‘খাতুনে জান্নাত’ মহিলা মাদ্রাসাটি স্থাপন করেন। সেই থেকে ধারদেনা করে পরিচালিত হওয়ার এক পর্যায়ে এমপিওভুক্ত হয়। এরপর মাদ্রাসা সুপার মাওলানা মুরাদ হোসেন সুপার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বার বার সরকারি বরাদ্ধ পাওয়ার পর চরম অনিয়মের কারণে প্রতিষ্ঠানটি উন্নয়নের কোন আলোর মুখ দেখেনি।

অনিয়মের এসব ধারাবাহিকতায় মাদ্রাসা সুপার মাওলানা মুরাদ হোসেন ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোনাজের হোসেনকে ম্যানেজ করে মাদ্রাসার আরবি শিক্ষক মাওলানা আতাউর রহমান ও ইংরেজি শিক্ষক রেশমা আক্তার দীর্ঘ ২ বছর থেকে আমেরিকা ও সুইডেনে অবস্থান করেও মাদ্রাসার চাকরীর স্বপদে বহাল রয়েছেন।

এব্যাপারে স্থানীয় সিরন্দী গ্রামের ইউপি মেম্বার আবদুর রহমান দুলাল বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, মাদ্রাসা সুপার মাওলানা মুরাদ হোসেনের কাছে বার বার প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের বিষয়ে কথা বলতে চাইলেও তিনি কোন কথা বলতে রাজি নন। এছাড়াও ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে সুপার ওই দুই শিক্ষককে বিদেশে যাওয়ার জন্য ব্যবস্থা করে করে দিয়েছেন।

অন্যদিকে মাদ্রাসায় উন্নয়নের জন্য ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদের ছোট ছোট প্রকল্প দেখিয়ে সুপার মুরাদ হোসেন কাজ না করেই একাই ওই প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

খাতুনে জান্নাত মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মুরাদ হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, ওই দুই শিক্ষক করোনাকালীন, মাতৃত্বকালীন, মেডিকেলসহ সকল ধরনের ছুটিতে রয়েছেন।

হুট করে কোন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা সম্ভব নয়। গত একমাস আগ থেকে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাদের বেতনভাতা স্থগিত করে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া ওই দুই শিক্ষককে তড়িগড়ি করে কারণ দর্শানোর নোটিশ করলে তারা আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। তাই একটু ভেবেচিন্তে কাজ করতে হবে।

রামগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোনাজের হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আমার জানামতে শিক্ষকরা একটানা ৩ বছর যাবত ছুটি নিতে পারবেন। তবে ওই সময়ের ভিতরেই কর্মস্থলে যোগদান করলে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু ছুটিকালীন সময় কোন বেতনভাতা নেয়া যাবে না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপ্তি চাকমা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, বিষয়টি আমি জানি না। মাদ্রাসার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি মো. আসলাম সরকার আসলাম  #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.