বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি: রেল যোগাযোগে প্রবেশ করলো বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল ও সমুদ্রবন্দর মোংলা। দেশে ট্রেন চলাচলের দীর্ঘ ৭৩ বছর পর এই রুটে যুক্ত হয়েছে ট্রেন চলাচল।
‘মোংলা কমিউটার’ ট্রেন নামে যাত্রীবাহী ট্রেনটি ৬শ’ যাত্রী নিয়ে বেনাপোল থেকে আজ শনিবার (০১ জুন) সকাল ১০টায় প্রথম মোংলাবন্দর অভিমুখে যাত্রা শুরু করে।
গত ১ নভেম্বর খুলনা থেকে মোংলা পর্যস্ত নতুন রেল লাইনের উদ্বোধন করা হয়েছিল। উদ্বোধনের প্রায় ৭ মাস পর এ রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। চার হাজার ২২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বেনাপোল-খুলনা-মোংলা রুট চালু করা হয়।
বর্তমানে বেনাপোল-খুলনা ভায়া যশোর হয়ে চলাচল করছে বেতনা এক্সপ্রেস ট্রেন। পুরোনো বগি ও ইঞ্ছিন দিয়ে রেলওয়ের মোংলা রুট বাড়ানো হয়েছে। এই ট্রেনটি ‘মোংলা কমিউটার’ নাম দিয়ে যশোর-ফুলতলা হয়ে বাইপাস দিয়ে মোংলায় যাবে।
শনিবার সকাল সোয়া ৯টায় বেনাপোল থেকে ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটা সকাল ১০টায় বেনাপোল থেকে ছেড়ে যায় মোংলার উদ্দেশে। ট্রেনটি পৌঁছাবে দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে। এরপর মোংলা থেকে ট্রেনটি ছাড়বে দুপুর ১টায় এবং বেনাপোলে পৌঁছাবে বিকেল সাড়ে ৪টায়। এরপর বেনাপোল থেকে বিকেল ৫টায় ছেড়ে খুলনায় পৌঁছাবে রাত সাড়ে ৭টায়।
মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিন এ রুটে একই সময়ে একবার করে ট্রেন চলাচল করবে। এই রুটের দূরত্ব ১৩৮ দশমিক ৬৪ কিলোমিটার।
বেনাপোল থেকে ট্রেন ছাড়ার পর নাভারণ, ঝিকরগাছা, যশোর জংশন, রূপদিয়া, সিঙ্গিয়া, চেঙ্গুটিয়া, নওয়াপাড়া, বেজেরডাঙ্গা, ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদনগর, কাটাখালি, চুলকাটি বাজার, ভাগা ও দিগরাজ স্টেশনে যাত্রাবিরতির পর মোংলায় যাবে।
রেলযাত্রী জাহাঙ্গীর জানান, এই ট্রেনটি চালু করায় আমরা অনেক উপকৃত হবো। বেনাপোল থেকে সরাসরি মোংলা বন্দরে কাজ করতে পারবো। আগে বেনাপোল থেকে খুলনা ও খুলনা থেকে অন্যবাসে করে মোংলায় যেতাম। প্রায় ৩০০ টাকা খরচ হতো। এখন মাত্র ৮৫ টাকায় মোংলা যেতে পারছি।
রেলযাত্রী অর্পিতা রায় বলেন, আমার বাড়ি মোংলাতে। বেনাপোল থেকে সরাসরি মোংলায় টিকিট কেটেছি। আমাদের খুব সুবিধা হলো। আসর সময় বাস পাল্টিয়ে পাল্টিয়ে এসেছি।
বেনাপোল রেলস্টেশনের মাস্টার সাইদুজ্জামান বিটিসি নিউজকে জানান, বেনাপোল থেকে মোংলার ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৫ টাকা। পুরোনো ট্রেন দিয়ে মোংলা-বেনাপোল রুটে আজ থেকে নিয়মিতভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও কোরবানির ঈদের পর এ রুটে নতুন ট্রেন সংযোজন করা হবে এবং ট্রেনের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে।
এদিকে, নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক প্রধান প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে বলেন, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলার সঙ্গে দেশের রেলওয়ের বর্তমান নেটওয়ার্ক সংযোগ স্থাপন এবং মোংলা বন্দরের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের রেলযোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করা, মোংলা পোর্ট পর্যন্ত রেলপথে আরামদায়ক ভ্রমণের সুব্যবস্থা করা, রেলের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে খুলনা-মোংলা পোর্ট রেলপথ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.