‘সৈয়দ আশরাফুল যে দৃষ্টান্ত রেখে গেলেন, তা অনুসরণ করতে হবে’

:লীগ প্রতিবেদকজাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সুযোগ্য সন্তান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, ‘সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ছিলেন দুঃসময়ের সাহসী সন্তান, নির্লোভ, আদর্শবান ও স্বল্পভাষী রাজনীতিবিদ।

তিনি মন্ত্রী ছিলেন, চাইলেই অনেক অর্থ করতে পারতেন, কিন্তু তিনি সেসবের কিছুই করেননি। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য তাঁকে বাড়ি বেঁচতে হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রীকে চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে হয়েছিল। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ যে দৃষ্টান্ত রেখে গেলেন, তা যেন আমরা মনে রাখি, আমাদের তা অনুসরণ করতে হবে।’

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের সুযোগ্য সন্তান, জনপ্রশাসন মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বতর্মান প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের অকাল মৃত্যুতে ও ছাত্রলীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ব্যক্তিগতভাবে স্বল্পভাষী, নিখাত ভদ্রলোক ছিলেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এমন লোক পাওয়া অনেক কঠিন। তিনি অল্পকথায় অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে মিডিয়া ফেস করতেন। সমকালীন রাজনীতিতে তাঁর মতো মিডিয়া ফেস করা দক্ষতা কারো নেই। তিনি মিডিয়ার মুখোমুখী কম হতেন, মিডিয়া তাঁর পেছনে ছুটতো।

মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, ১/১১ এর দুঃসময়ে তাঁকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল। সে সময় তিনি অত্যন্ত সুচারুভাবে ঠান্ডা মাথায় নেত্রীর মুক্তি ও গণতন্ত্র ফিরি আনতে কাজ করেছিলেন। সে সময় হিশেহারা আওয়ামী লীগকে পথ দেখানোর কাজ করেছেন তিনি।

মেয়র আরো বলেন, সৈয়দ আশরাফুল আর ১০ থেকে ১২ বছর বাঁচলে দেশ ও আওয়ামী লীগ অনেক অপকৃত হতো। তাঁর মতো রাজনীতিবিদ হারিয়ে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হলো।

খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, সৈয়দ আশরাফ ছাত্রলীগের একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন। তাঁর মতো আদর্শবান নক্ষত্র যেন আগামীতে ছাত্রলীগের আরো তৈরি হয়।

মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মেয়র লিটন আরো বলেন, আমরা নৌকার নেগেটিভ জোনে আছি। এখানে সুযোগ পেলেই আওয়ামী লীগের সমালোচনা করা হয়। তবে এখন মানুষ নৌকার পক্ষে আসছে, তা ধীরে ধীরে। নারীরা নৌকার পক্ষে এসেছেন, এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।

এ সময় মেয়র নগরভবনে সম্প্রতি চালু করা বঙ্গবন্ধু কর্ণার পরিদর্শন করতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্না বলেন, তাঁর (সৈয়দ আশরাফ) মৃত্যুতে আওয়ামী লীগের অনেক বড় ক্ষতি হলো। আওয়ামী লীগের জন্য তাঁর ত্যাগ সবাই মনে রাখবেন।

প্রকৃতপক্ষে কৃর্তিমানের কোনো মৃত্যু নাই। হয়তো তিনি বেঁচে থাকলে আমরা আরো ভালো কিছু পেতাম।

মেয়র কন্যা ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্না আরো বলেন, আমরা জাতীয় চার নেতার পরিবারের সদস্যরা একে অপরের আত্মার আত্মীয়। আমার বাবা তাঁর ভাইকে হারালেন, আমি হারালাম আমার চাচাকে। তাঁর মৃত্যু আমাদের জন্য কতটা দুঃখের তা আমি ভাষাই প্রকাশ করতে পারছি না।

মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রকি কুমার ঘোষের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাইমুল হুদা রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আসলাম সরকার, সাবেক ছাত্রনেতা এ্যাড. মোজ্জামেল হোসেন, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুজ্জামান শফিক, সাধারণ সম্পাদক মীর তৌহিদুল হক কিটু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মোমিন, সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকারসহ মহানগর ছাত্রলীগ, থানা ও ওয়ার্ড ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনায় ছিলেন মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাজিব।

আলোচনা শেষে দোয়া মাহফিল ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এরআগে বাদ জুম্মার নামাজ পর কাদিরগঞ্জে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের কবর জিয়ারত করেন মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। #প্রেস বিজ্ঞপ্তি )#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.