সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৫ সিটি ভোট করবে ইসি

বিশেষ প্রতিনিধি: সেপ্টেম্বরের মধ্যে গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশনের ভোট শেষ করার পরিকল্পনা করেছে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আর জুনের মধ্যেই গাজীপুরসহ দুই সিটির ভোট করতে চায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
তবে ময়মনসিংহের ভোটের ক্ষণগননা ডিসেম্বরে শুরু হওয়ায় এই সিটি ভোট নিয়ে বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশনের। ইতিমধ্যে সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনাররা স্বল্প সময়ের মধ্যে পাঁচ সিটির ভোট করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
রবিবার (০৫ মার্চ) নির্বাচন ভবনের নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, জুনের আগে আগে দুই একটা সিটি করপোরেশনের ভোট হবে জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, বাকিগুলো জুনের পরে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিটি ভোট শেষ করবো। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের তফসিলের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি আমাদের। যেটা আলোচনা হয়েছিল গাজীপুর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট এইগুলোর নির্বাচনগুলো সেগুলোর মেয়াদ শেষ হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে করতে হয়।
চলতি বছরের শেষ সপ্তাহে বা আগামী বছরের জানুয়ারির শুরুতে দ্বাদশ নির্বাচন করবে ইসি। এজন্য দ্রুত পাঁচ সিটির ভোট সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী, কোনো সিটির মেয়াদ ধরা হয় প্রথম সভা থেকে পরবর্তী ৫ বছর। কোনো সিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণ করতে হয়। সেক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির পরবর্তী ভোটের ক্ষণগণনা শুরু হবে চলতি মাসের ১১ মার্চ। ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
অন্যদিকে খুলনা ও রাজশাহী সিটির ক্ষণগননা শুরু হবে ১৩ এপ্রিল ১০ অক্টোবরের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বরিশাল সিটি ভোটের ক্ষণগননা শুরু হবে ১৪ মে থেকে ১৩ নভেম্বর। সিলেট সিটি ৬ মে থেকে পরবর্তী নির্বাচনের ক্ষণগননা শুরু হবে। ৬ নভেম্বরের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ময়মনসিংহ সিটি ভোটের ক্ষণগননা শুরু হবে ২০ ডিসেম্বর। ১৯ জুন ২০২৪ সালের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
মো. আলমগীর বলেন, ইচ্ছা করলে ৬ মাসের শেষ করা যায়। মাঝামাঝি করা যায় আগেও করা যায় জানিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু আমাদের জাতীয় নির্বাচন আছে এ বছরের ডিসেম্বরের শেষে অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সেজন্য আমাদের চেষ্টা থাকবে এই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন শেষের দিকে না করে প্রথম দিকে করা।
জাতীয় নির্বাচনের জন্য অনেক বিষয়ে প্রস্তুতির ব্যাপার আছে জানিয়ে তিনি বলেন, এজন্য সেটাই করবো। গাজীপুরের ব্যাপারে শুধু ওইটুকু আলোচনা হয়েছে তফসিল কবে এ ধরনের কোনো আলোচনা হয় নাই।
১১ মার্চ থেকে ১০ সেপ্টেম্বরে গাজীপুরে ভোটের সময় জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, যেকোনো সময়ে নির্বাচন হতে পারে। সেই হিসেবে যেহেতু জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে। সেজন্য নির্বাচনগুলো আর্লি (আগে) করার চেষ্টা করবো। মার্চের পরে যে কোনো সময় নির্বাচন হতে পারে।
চার সিটির ভোট একদিনে হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে এই কমিশনার বলেন, একদিনে হবে না। ৬ টা সিটি আছে। তার মধ্যে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনেক দেরি। ওটাকে আমরা ধর্তব্যের মধ্যে আনছি না। বাকি পাঁচটার ক্ষেত্রে হয়তো দুই দিনে হতে পারে। তিনদিনে হতে পারে।
জুন মাসের মধ্যে দুই সিটি ভোট করার ইচ্ছা প্রকাশ করে এই কমিশনার বলেন, করার ইচ্ছা আছে। তবে এখন পর্যন্ত দিন তারিখ ঠিক হয় নাই। চূড়ান্ত কিছু হয় নাই। যেগুলো আগে ম্যাচিউরিটি (ক্ষণগননা) শুরু হবে সেগুলো আগে হবে।
গাজীপুরে স্থানীয়ভাবে তফসিল ঘোষণা হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে এই কমিশনার বলেন, গাজীপুর নিয়ে আমরা (কমিশন) কোনো তফসিল ঘোষণা করি নাই। জুনের আগে আগে দুই একটা সিটি ভোট হবে। বাকিগুলো জুনের পরে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিটি ভোট শেষ করবো।
সিটি নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা থাকবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে এই কমিশনার বলেন, এগুলো নির্ভর করবে বাজেটের ওপরে। আমরা বাজেট চাইবো। টাকা পাইলে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করবো।
সিটি ভোটগুলোতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করার আগ্রহ আছে জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, এটা ডিপেন্ড করবে। নতুন ইভিএম আসে নাই। ইভিএমগুলোর ব্যাটারির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে ব্যাটারি রিপ্লেসমেন্ট করতে হবে। সার্ভিসিং করাতে হবে। সে জন্য টাকা লাগবে। সার্ভিসিং করিয়ে যদি সচল করতে পারি তার ওপরে নির্ভর করবে কতগুলো ইভিএম ব্যবহার করবো। তবে কমিশনের ইচ্ছা ইভিএমে করা।
সরকারের ইচ্ছা অনিচ্ছার ওপর সিসি ক্যামেরা নির্ভর করছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, সিসি ক্যামেরা ভোটের অনুষঙ্গ না। আইনে কোথাও বলা নাই সিসি ক্যামেরা রাখতে হবে। এটা বাড়তি ব্যবস্থা এবং পরীক্ষামূলক ছিল। টাকা পেলে সব আসনে না করলেও ঝুঁকিপূর্ণ আসনে করবো।
সিসি ক্যামেরা নিয়ে সরকারের সদিচ্ছার অভাব আছে বলে মনে করেন না এই কমিশনার। তিনি বলেন, সরকার থেকে আমরা কোনো প্রতিক্রিয়া পাই নাই। দলের কেউ মন্তব্য করতেই পারে। দলের সাথে সরকারের মন্তব্যের রিলেশন করা যাবে না। সরকার আর দল কিন্তু এক নয়।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.