সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) প্রতিনিধি: নোয়াখালীতে তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে। জেলার সেনবাগ উপজেলার ৫টি ইউপি ও একটি পৌরসভার মধ্যে ১টিতেও জয় নেই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের। ৫টিতেই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন বিপুল ভোটে!
ফলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা দুষছেন নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্যকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা এই প্রতিবেদককে জানান, নৌকার মনোনয়ন বাণিজ্য,দলীয় নেতাদের গ্রুপিংয়ের কারনেই নৌকা প্রার্থীদের এই ভরাডুবি, নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী) আংশিক আসনের এমপির দূরদর্শীতাকেও দুষছেন তারা।
সোনাইমুড়ীর ছাত্রলীগের এক নেতা(নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান,স্থানীয় নেতাদের ব্যর্থতা, যারা তৃনমূল আওয়ামী লীগকে আজকে বিভিন্ন গ্রুপিং করে ফেলেছে, যার ফল তাঁরা ভোগ করতেছে ।নিজেকে শক্তিশালী বা গ্রুপকে শক্তিশালী করার জন্য জামায়াত-বিএনপির শিবির কোন ভেদাভেদ না রেখে সকলকে আওয়ামী লীগের সাইনবোর্ড দিয়ে সুবিধা দিচ্ছে। কিছু কিছু নেতারা তাদের কথায় উঠে আর বসে সাধারণ মানুষের কথা শুনতে পায় না, তার ফল সেনবাগে নৌকার ভরাডুবি বলে মনে করছেন তিনি।
গতকাল রোববার (২৮ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নৌকার প্রার্থীদের বাইরে স্বতন্ত্র হিসেবে যে ৫ জন বিজয়ী হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ৩ জন এবং ২ জন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী জয় পেয়েছেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা বেসরকারীভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
সেনবাগ পৌরসভায় বিজয়ী প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) আবু নাছের ওরফে ভিপি দুলাল নারিকেল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫ হাজার ৮৫২ ভোটে পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবু জাফর টিপু পেয়েছেন নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪ হাজার ৯৩৪ ভোট।
নৌকার প্রার্থীদের ভরাডুবির বিষয়ে জানতে চাইলে সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাফর আহমদ চৌধুরী তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন,সবাই এখন ক্ষোভ-দুঃখে আছে। আমি আগে খোঁজ খবর নিয়ে পরে এ বিষয়ে কথা বলব।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো.শহীদুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে জানান, তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৫টি ইউনিয়নে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উল্লেখ্য,তৃতীয় ধাপে গতকাল রোববার (২৮ নভেম্বর) সেনবাগ পৌরসভার নয়টি কেন্দ্রে এবং ৫টি ইউনিয়নের মোট ৫০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে সেনবাগ পৌরসভার নয়টি ও ছাতারপাইয়া ইউনিয়নের নয়টিসহ মোট ১৮টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৫৯টি নির্বাচনী কেন্দ্রে ২৯৮ জন পুলিশ, ১৯টি মোবাইল টিম, সাতটি স্ট্রাইকিং ফোর্স, সাতটি স্পেশাল স্ট্রাইকিং ফোর্স, জেলা গোয়েন্দা শাখার চারটি টিম, পাঁচটি চেকপোস্ট এবং চারটি স্ট্যান্ড বাই টিম, ওসিদের একটি টিম এবং সিনিয়র অফিসারদের পাঁচটি টিমে মোট ৬৫৬ জন পুলিশ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ৯২৯ জন আনসার, র্যাবের ৩৭ জন এবং বিজিবির ৮৩ জন সদস্য একযোগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করেছেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.