সেই ভুটানকে দেখে নিতে চায়

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: আগামীকাল ঈদুল আজহা। জাতীয় দলের ফুটবলাররা ভারতে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের মঞ্চে। ভুটানের বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচ খেলতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আজ জিতলে তারা ঈদ করবেন সেখানে। আর হেরে গেলে ঢাকায় এসে পড়বেন। সাদাচোখে এমনটা হলেও বাংলাদেশের ফুটবলাররা ৪ জুলাইয়ের পর দেশে ফিরতে চান। ততদূর যেতে হলে এর আগে অনেক বাধা পার হতে হবে। বলতে গেলে মরণের বাঁধা মাড়িয়ে ফাইনালের মঞ্চে উঠতে হবে। অথচ একসময় এই ভুটানকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় মাথা ভারী করতে হতো না।
এমনও না যে ভুটান সব কিছু ছাড়িয়ে আকাশে উঠে গেছে। দুর্ভাগ্য হচ্ছে ফিফার র‍্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের (১৯২) ওপরে ভুটান (১৮৫)। অথচ এই ভুটান সাফের মঞ্চে কখনোই বাংলাদেশকে হারাতে পারেনি। সব সময় হেরে এসেছে। দেশের ফুটবলের যত খারাপ অবস্থাই হোক, ভুটান কখনোই বাংলাদেশের মাথায় ছড়ি ঘুরাতে পারেনি। সেই ভুটানকে নিয়ে এখন ভাবতে হয়। কারণ একটাই, ২০১৬ সালের কথা, এশিয়ান কাপ এবং বিশ্বকাপের বাছাই একসঙ্গে চলছিল।
ভুটানের বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে হেরে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে ১৭ মাস দূরে ছিল। ম্যাচ জিতলেও আর হয়তো এক-দুই ম্যাচ খেলার সুযোগ পেত। কিন্তু থামতেই হতো। হয়তো দুই ম্যাচ আগেই বিদায় নিয়েছিল। কেন ভুটানের কাছে হারবে। বাফুফের বিপক্ষে থাকা সাবেক ফুটবলাররা চিৎকার করে আকাশ কাঁপিয়ে দিল। সেই ম্যাচের ফুটবলাররা সেদিন ম্যাচ ডোবানোর কারিগর ছিলেন। কোচ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন খেলোয়াড়দের কারণে ম্যাচ হেরেছে। সেই ম্যাচের পর ভুটানকে তিন বার হারিয়ে ছিল বাংলাদেশ। তারপরও ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচ হলে দুঃস্বপ্নের কথাগুলো চোখে এসে যায়। এখনো ভুটানকে নিয়ে ভাবতে হয়।
সাফে বাংলাদেশ-ভুটান মুখোমুখি হয়েছে ছয় বার। এর মধ্যে একবারও ভুটান জয় পায়নি। ১ বার ড্র হয়েছিল ২০০৮ সালে মালদ্বীপে। সেই সাফেই ভুটান তার ইতিহাসে সর্বোচ্চ সাফল্য ছিল সেমিফাইনাল খেলেছিল তারা। ভারতের কাছে হেরেছিল। গোল করে এগিয়ে থাকা ভুটানকে হারাতে ১২০ মিনিট পর্যন্ত লড়াই করতে হয়েছিল সুনীল ছেত্রীদেরকে। সেই সাফেই ভুটান সর্বশেষ জয় পেয়েছিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে, ৩-১ গোলে জিতে। এছাড়া সাফে কখনোই ভুটান কিছু করতে পারেনি।
এবার ভারতের বেঙ্গালুরুতে ১৪তম সাফেও ভুটান দুই ম্যাচ হেরে বিদায়ের দুয়ারে দাঁড়িয়ে। সমীকরণে এখনো বিদায় হয়নি। বাংলাদেশ যদি জিতে যায় ভুটানকে ঘরে ফেরার বিমান ধরতে হবে, সমীকরণ নিয়ে ভাবতে হবে না।
শ্রী কান্তীরাভা স্টেডিয়ামে রাত ৮টায় ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচে নামার আগে বাংলাদেশের সুবিধা হচ্ছে বিকেল ৪টায় একই গ্রুপের লেবানন-মালদ্বীপ মুখোমুখি হবে। এই ম্যাচের ফলাফল দেখে বাংলাদেশ নির্ধারণ করবে করণীয়। বিকেলের ম্যাচ ড্র হলে বাংলাদেশকে জিততেই হবে। আর মালদ্বীপ যদি লেবাননকে হারায় তাহলে বাংলাদেশকে জিততে হবে এবং গোল গড় বাড়িয়ে নিতে হবে। কী করতে হবে সেটিও বোঝা যাবে মাঠে নামার আগেই। সাফে সবদিক থেকে এগিয়ে বাংলাদেশ। আজ ভুটানকে হারিয়ে সমীকরণ মিলিয়ে সেমিফাইনালে উঠতে পারবে বাংলাদেশ। দুঃখ ঘুচবে বাংলার ফুটবলের। টানা পাঁচটি সাফের গ্রুপপর্ব হতে বিদায় নেওয়ার কষ্টের গল্পের কথা শেষ হতে পারে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.