সুবর্ণচরে প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে ৩৫ লাখ টাকা আত্নসাতের অভিযোগ!

নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালী সুবর্ণচরে অতি দরিদ্রদের জন্য ৪০ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচির ২ কিস্তির ৯টি প্রকল্পে জন্য বরাদ্ধকৃত ৩৫ লক্ষ ২০ হাজার টাকা আত্নসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়ীত্ব পালন করা মোস্তফা পারভেজের বিরুদ্ধে।
দূর্নীতি অনিয়মের মাধ্যমে পুরো প্রকল্পের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন সুবর্ণচর উপজেলার ২ নং চরবাটা ইউনিয়নের ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের মেম্বার রাশেদা আক্তার শিরিন।
তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোস্তফা পারভেজের বিরুদ্ধে দূর্ণীতি দমন কমিশন নোয়াখালী, চট্রগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবং নোয়াখালী জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন।
২০১৪-১৫ অর্থ বছরের ২ নং চরবাটা ইউনিয়নের অতি দরিদ্রদের জন্য ৪০ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচির ইউনিয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন কিমিটির সভাপতি, সদস্য সচিব, ইমাম প্রতিনিধি, সমাজ কর্মি, মহিলা প্রতিনিধি নির্বাচিত হন, তখন ২ নং চরবাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজি মোশারেফ হোসেন চিকিৎসার জন্য ভারতের দিল্লীতে গেলে, সেখানে চিকিৎসাধিন থাকাবস্তায় প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তি হাজি মোশারেফ হোসেন মৃত্যুবরণ করার পর তৎকালিন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোস্তফা পারভেজ ওরপে মোস্তফা মেম্বারকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের  দায়ীত্ব দেয়া হয়।
দায়ীত্ব পাবার  পর ঐসব প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে সোনালী ব্যাংক চরবাটা শাখা ম্যানেজারের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করেন। এইসব বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনে সরজমিনে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ডাকযোগে রেজিস্ট্রি করে ৬ জানুয়ারী ২০২০ তারিখে মোস্তফা পারভেজের দূর্ণীতি ও অর্থ লুটের তদন্ত করে কার্যালয়ে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার নোয়াখালী আব্দুর রব মন্ডলকে দায়ীত্ব প্রদান করেন।
উপ-পরিচালক পরবর্তীতে সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এস এম ইবনুল হাসানকে তদন্তভার অর্পণ করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষয়টি তদন্তের জন্য দায়ীত্ব দেন সুবর্ণচর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ইকবাল হাসানকে তিনি তদন্তভার অর্পণ করেন সুবর্ণচর উপজেলা মৎস কর্মকর্তা খোরশেদ আলমের ওপর খোরশেদ আলম দায়ীত্ব প্রাপ্ত হয়ে সরজমিনে পরিদর্শনের না এসে কোন প্রকার তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে আসেনি।
শিরিন মেম্বার আরো বলেন, পারভেজ চেয়ারম্যান দায়ীত্ব পেয়ে সম্পূর্ণ রুপে নিজের ক্ষমতা অপব্যবহার করে মনগড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন কিমিটি গঠন করেন এবং বিধি বর্হিভূত ভাবে ৩ টি প্রকল্পের প্রকল্প কিমিটির প্রকল্প চেয়ারম্যান তিনি নিজেই হন। বিধি অনুযায়ী দায়ীত্বে থাকা চেয়ারম্যান অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির প্রকল্প চেয়ারম্যান হতে পারেন না। কেবল ৩৫ লক্ষ টাকা আত্নসাৎ করার জন্যই তিনি এসব অনিয়ম করেন। যাদেরকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কিমিটিতে  সদস্য নির্বাচিত করা হয়েছে এর মধ্যে অনেকেই জানেনা। তিনি সব  প্রকল্পের টাকা আত্নসাৎ করে নিজ বাড়ীতে আলিশান বাড়ি তৈরী করেছেন, বাজারেও রয়েছে কয়েকটি দোকান ঘর সহ জায়গাজমি।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সাবেক ভারপ্রাপ্ত পারভেজ চেয়ারম্যানের সাথে আলাপকালে তিনি অভিযোগ অস্বিকার করে বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, “সকল প্রকল্পের কাজ করা হয়েছে, কাজ না করলে পিআইও কখনো টাকা দেয়না, কিছূ ব্যাক্তি আমার পিছনে লেগে এসব করাচ্ছে।
সুবর্ণচর উপজেলা বাস্তবায়নাধীন কর্মকর্তা (পিআইও) ইকবাল হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ঘটনাটি ২০১৪-১৫ সালের তখন আমি দায়ীত্বে ছিলাম না, সম্প্রীতি এ বিষয়ে  সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএসএম ইবনুল হাসান স্যার আমাকে দায়ীত্ব দিলে আমি সেটা গ্রহণ করিনি যেহেতু এটা আমাদের বিভাগের কাজ তদন্ত হয়তো স্বচ্ছতা থাকবেনা তাই স্যার কে বিষয়টি জানালে তিনি কাকে দায়ীত্ব দিয়েছেন আমি জানিনা।
মৎস কর্মকর্তা খোরশেদ আলমের কাছে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন,” তদন্তভার পেয়ে,  আমি উভয় পক্ষকে  নোটিশ করেছি, আগামিকাল উভয় পক্ষ আসার তারিখ আছে।
সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএসএম ইবনুল হাসান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, “এ বিষয়ে আরো বহুদিন আগে একটি প্রতিবেদন আমি পাঠিয়েছি সম্প্রতি দূর্নীতি দমন কমিশন থেকেও একই বিষয়ে প্রতিবেদন চেয়েছে,  বিষয়টি যেহেতু ২০১৪-১৫ সালের সেহেতু তদন্ত করতে একটু সময় লাগবে আশা করছি কয়েদিনের মধ্যে  প্রতিবেদন পাঠাতে সক্ষম হবো”।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নোয়াখালী প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিল। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.