সুবর্ণচরে পেঁপে চাষে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন চাষীরা

নোয়াখালী প্রতিনিধি: “কৃষক উপকৃত হলে দেশ উপকৃত হবে” এই শ্লোগানে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে চলতি মৌসুমে প্রতিত জমিতে “গ্রীন লেডি” জাত নামে পেঁপে চাষ করে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন দেখছেন চাষীরা।
উপজেলার চর মজিদ গ্রাম’সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে দেখা যায় উচ্চমূল্যের ফসল হিসেবে এই আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবং বাজারে প্রচুর চাহিদা ও দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চারা রোপণের পর থেকে চাষিরা পেঁপে আবাদে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
প্রতি কেজি কাঁচা পেঁপে বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা এবং পাকা পেঁপে ৭৫-৮০ টাকা। তবে লাভের অংক বেশি হওয়ায় কৃষকরা পাকা পেঁপেই বেশি বিক্রি করছেন। আশানুরূপ মূল্য পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি লক্ষণীয়। এছাড়াও যে কেউ চাইলে পেঁপে চাষ করে স্বল্প সময়ে স্বল্প পরিশ্রমে বেকারত্ব দুর করার পাশাপাশি সাবলম্বীও হতে পারবে।
জমিতে একবার চারা লাগালে ৩ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে চলতি বছরের পর পরের দুই বছর ক্ষেত পরিচর্যার খরচ খুবই কম লাগে। এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে কৃষকরা পেঁপে চাষে ব্যাপক ভাবে লাভবান হবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।
উপজেলার ০৭নং পূ্র্বচরবাটা ইউনিয়নের চর মজিদ গ্রামের কৃষক মো: আবদুল কুদ্দুছ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আমি ৫০ শতক জায়গায় এই পেঁপের চাষ করি। গরু মহিষ ও মানুষের জানমাল রক্ষার্থে ১৯৮৯-৯০ সালের দিকে এই কিল্লা স্থাপন করা হয়েছে। এটি পশু কিল্লা নামে খ্যাত। এই কিল্লা স্থাপনের পর থেকে দীর্ঘদিন যাবত পরিত্যক্ত থাকায় উপজেলা কৃষি বিভাগ মো: ইকবাল হোসেনের সহযোগীতায় “গ্রীন লেডি” জাতের ২৫০ টি পেঁপের চারা রোপণ করি। এর পাশাপাশি লাল শাক, মুলা, টমেটো, মরিচ, বেগুন, চিচিঙ্গা’সহ বিভিন্ন সবজি চাষ করি। তখন বাজারে চাহিদা থাকায় ব্যাপক দামও পেয়েছি। এখন আবার এই সব সবজির মধ্যে কিছু সবজি চাষ করেছি এবং পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সবজি চাষ করা হবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ থেকে এই ধরনের সহযোগীতা আরো বৃদ্ধি পেলে পরবর্তীতে এর চেয়ে দ্বিগুণ আবাদ করা হবে।
কৃষক আরো বলেন, কিল্লাটি চাষাবাদের জন্য উপযুক্ত ভাবে তৈরী করা, চারা রোপন, সার, বালাইনাশক, আগাছা পরিস্কার ও শ্রমিকের টাকা’সহ প্রায় ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে প্রথম দুই তিন ধাপে ১০-১২ হাজার টাকার পেঁপে বিক্রি করেছি। প্রতিটি গাছে এভারেজ এখনো কাঁচা ও পাকা ৫০-৫৫ কেজি করে পেঁপে রয়েছে। বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে তাহলে দেড় লক্ষ টাকার মতো লাভ হবে আশাকরছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: হারুন অর রশিদ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, সুবর্ণচর উপজেলায়  ২০২০-২১ অর্থ বছরে ৪০ হেক্টর জমিতে পেঁপের আবাদ হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে আমরা কৃষকের কল্যাণে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। কৃষিকাজে এখানকার চাষিরা বেশ তৎপর। বিশেষ করে সবজি চাষে চাষিরা বেশ সাফল্য এনেছে। কৃষি অফিস থেকে চাষিদেরকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ ও সহযোগীতা করা হচ্ছে। এবং অন্যান্য চাষীদেরকে পতিত জমিতে পেঁপে চাষ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নোয়াখালী প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিল (শিমুল)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.