নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সুবর্ণচরে পরিবর্তন হচ্ছে কৃষির চিত্র। একসময় যেখানে কৃষকেরা ধান চাষের ওপরই নির্ভরশীল ছিলেন, এখন সেখানে ধানের বদলে বেগুন চাষে ঝুঁকছেন অনেকে। কারণ, ধানের তুলনায় বেগুন চাষে ১৫ থেকে ২০ গুণ বেশি ফলন ও লাভ হচ্ছে। উঁচু জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে বেগুন চাষে সাফল্য পাচ্ছেন সুবর্ণচরের কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শ ও সহায়তায় এই অঞ্চলে বেগুন চাষ এখন লাভজনক পেশায় পরিণত হয়েছে। ফলে বদলে যাচ্ছে কৃষকদের জীবনযাত্রার মান, বেড়েছে আত্মনির্ভরতা।
চরজব্বার ইউনিয়নের কৃষক রহুল আমিন বলেন, “একসময় জীবিকার তাগিদে আমাদের এলাকার কৃষকেরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শ্রম বিক্রি করতে যেতেন। এখন সবাই নিজেদের জমিতেই কাজ করছেন। অনেক বেকার যুবক বেগুন চাষ করে ঘুচিয়েছেন বেকারত্ব।”
ইমান আলী বাজার এলাকার বেগুনচাষি মো. জাফর উল্যাহ জানান, তিনি ৮০ শতাংশ জমিতে প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ করে বেগুন চাষ শুরু করেন। এখন পর্যন্ত সাড়ে সাত লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করেছেন, আর বাকি ফসল থেকে আরও সাত থেকে আট লাখ টাকার বিক্রির আশা করছেন। “ধান চাষে এত লাভ কখনো হতো না,” বলেন তিনি।
তবে আগাম চাষের কারণে কিছু সমস্যার কথাও জানালেন উত্তর বাগ্যা গ্রামের বেগুনচাষি মো. হাসান আলী। তিনি বলেন, “লাভজনক হলেও আগাম মৌসুমে পোকামাকড়ের আক্রমণ বেশি হয়। তবে কৃষি অফিসের পরামর্শে তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছি।”
সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশীদ বলেন, “সরকারি অর্থায়নে কৃষকদের সার, বীজ, নগদ অর্থসহ নানা সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে পোকামাকড় দমন ও আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার নিশ্চিত করতে কৃষকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।”
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে সুবর্ণচরের ২২০ হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন বেগুন চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া ও ন্যায্য বাজারমূল্য পেলে আগামীতে আরও বেশি কৃষক এই চাষে আগ্রহী হবেন বলে আশা করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। বেগুন চাষে কৃষকদের সাফল্যে সুবর্ণচর এখন নতুন এক সম্ভাবনার মুখে। একদিকে স্থানীয় অর্থনীতিতে তৈরি হচ্ছে গতি, অন্যদিকে কৃষকরা নিজের পায়ে দাঁড়ানোর আত্মবিশ্বাস ফিরে পাচ্ছেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিল (শিমুল)। #