সুবর্ণচরে ড্রাগন চাষে সাফল্যের স্বপ্ন

নোয়াখালী প্রতিনিধি: ড্রাগন ফল মূলত আমেরিকার প্রসিদ্ধ একটি ফল যা বর্তমানে আমাদের দেশেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। আর আমদানি করা আঙুর-আপেলের মাঝে ধীরে ধীরে জায়গা করে নিচ্ছে ড্রাগন ফল।
ফলটির স্বাদ টক-মিষ্টি। উচ্চমাত্রার পুষ্টিগুণ থাকায় এটি উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ইদানীং দেশেও ভোক্তা তৈরি হয়েছে। স্থানীয় পাইকারি বাজারে এই ফল বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে।
আঙুর-আপেলের বাণিজ্যিক আবাদে দেশের মাটিতে চেষ্টা করেও সফল হওয়া যায়নি। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ড্রাগন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অল্প খরচে কম জায়গায় ড্রাগন ফলের চাষ সম্ভব। তবে অনেকে এচাষে সফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
দেশে ড্রাগন ফলের বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু হয় বলতে গেলে ২০০৬-৭ সালে। এর পর থেকে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় এই ফলের আবাদ বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপক আকারে বেড়ে চলেছে। ড্রাগন ফলের গাছ এক ধরনের ক্যাকটাস জাতীয় গাছ। এই গাছের কোন পাতা নেই।
চরক্লার্ক কেরামতপুরের কৃষক হেলাল উদ্দিন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণের সহযোগীতায় বাড়ির আঙ্গিনায় ৩ শতক জায়গায় এই ড্রাগন চাষ করেছি, এবং ড্রাগন গাছের গতি দিন দিন বৃদ্ধি হওয়ায় দেখে বুঝা যাচ্ছে সফল হবো। যদি সফল হয়ে থাকি তাহলে পরবর্তীতে ব্যাপক হারে চাষবাদ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে জানা গেছে, ড্রাগনের চারা রোপণের জন্য মাটিতে গর্ত করে প্রতি গর্তে ১০ কেজি গোবর অথবা সবুজ সার, ৫০ গ্রাম ইউরিয়া, ১০০ গ্রাম টিএসপি ও এমপি, জিপসাম, ১০ গ্রাম করে বোরাক্স ও জিংক সালফেট মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে ২০-৩০ দিন রেখে দিতে হবে। এরপর চারা লাগালে ফলন ভালো হবে।
চারা বেড়ে ওঠার জন্য খুঁটি বা পিলার সংযোগ করতে হবে। এবং খুঁটি বা পিলারের মাথায় গোলাকার রিং বা টায়ার ব্যবহার করতে হবে। তখন ড্রাগন গাছটি রিং বা টায়ারের ভিতর দিয়ে প্রবেশ করে ঝুলে ঝুলে ফলটি ধরতে থাকবে। বর্ষা মৌসুম এই চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়। ফল ধরা বা ফুল ফোটার সময় গাছের গোড়ায় সার দেওয়া যাবে না। সার প্রয়োগের নিয়মে ভুল হলে গাছ মরে যেতে পারে। তাই মাটির সঙ্গে সার মিশিয়ে তা অন্যত্র রেখে দিতে হবে। সার মেশানো মাটি পরে গাছের গোড়ায় দেওয়া যেতে পারে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ হারুন অর রশিদ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, সুবর্ণচরে ১০ জন কৃষকদের মাঝে প্রদর্শনী দেওয়া হয়। এবং সমগ্র উপজেলায় ৩০ শতক জায়গায় পরিক্ষামূলক ভাবে ড্রাগন আবাদ হয়। এই ড্রাগন ফলটি আমাদের এখানে এখনো নতুন। তবে খুশির খবর ধীরে ধীরে ড্রাগন চাষের ব্যাপকতা এই উপজেলায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবং ড্রাগনের চাষ আরো ব্যাপক আকারে চাষবাদ করার জন্য চাষীদেরকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নোয়াখালী প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিল (শিমুল)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.