সুবর্ণচরে খেসারি চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষক, ঝুঁকছে বোরোধানের চাষে

নোয়াখালী প্রতিনিধি: “খেসারি ডাল” এক সময়ের জনপ্রিয় ফসলের নাম। মানুষের মাঝে ফসলটা সুস্বাদু খাবারও বটে। শীত মৌসুমে আমন ধান উঠে গেলে জমিতে হালচাষ করা ছাড়াই খেসারি বীজ প্রয়োগ করলে তিন মাসের মধ্যেই খেসারির ফসল ঘরে তোলা যায়।
এর তেমন একটা যত্নও করতে হয় না, খরচও তেমন বেশি না। তবুও লাভ চোখে পড়ে না। আগে দেখা যেত, গ্রামের প্রতিটি কৃষকের ঘরে কিংবা বাড়িতে খেসারিতে ভরে থাকতো। চাষ করতো অনেক বড় বড় ক্ষেতে। এখন তা আর চোখে পড়ে না। হাতে গোনা কয়েকজন কৃষকই কেবল ছোট ছোট জমিতে খেসারি চাষ করেন শুধুমাত্র পরিবারের সদস্যদের খাওয়ার জন্য।
তখন খেসারির ফসল জমি থেকে সংগ্রহের কথা শুনলে গ্রামের মানুষ দল বেঁধে ছুটতো খেসারি উঠানোর জন্য। জমির মালিক খেসারি উঠাতে কাজ করা শ্রমিকদের মাঝে খেসারি ভাগ করে দিতেন। ঐসময় তাদের মাঝে একটি আনন্দ বিরাজ করত। এখন এটি তেমন চোখে পড়ে না।
এর মধ্যে সুবর্ণচরের চর আমান উল্যাহ ইউনিয়নের মোঃ মোস্তফা, চরক্লার্ক ইউপির মোঃ নূর হোসেন, মোহাম্মদপুর ইউপির মোঃ সোলাইমান, চর ওয়াপদা ইউপির মোঃ সামছুদ্দিন, চরবাটা ইউপির তোফায়েল আহম্মদ, পূ্র্বচরবাটা ইউপির মমিনুল হক, চর জুবিলী ইউপির মোঃ হানিফ, চরজব্বর ইউপির মোঃ নিজাম উদ্দিন জাহাঙ্গীর’সহ এই সকল কৃষক তারা একই সূত্রে জানান খেসারি ডালে আমরা লাভবান হওয়ার জন্য এই চাষাবাদ করি।
চরজুবিলী ইউনিয়নের মোঃ হানিফ বিটিসি নিউজকে জানান, আমি ২ একর জমিতে খেসারি ডালের চাষ করি। বাপদাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে এই চাষাবাদ। এই চাষ অন্যান্য ফসলের মত তেমন লাভজনক না। তাই আমরা এই চাষে অনিহা প্রকাশ করছি। খেসারির চেয়ে অন্যান্য ফসল দ্বিগুণ লাভজনক হওয়ায় সেইগুলো চাষাবাদের জন্য ঝুঁকছি। এছাড়া হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় বেশ কিছু খেসারি নষ্ট হয়। না হয় মোটামুটি একপর্যায়ে লাভবান হতাম। তবে শুষ্ক মৌসুমে অধিকাংশ কৃষক এখন সয়াবিন, মরিচ, সরিষা, বাদাম, সূর্যমুখী, তরমুজ, বোরোধান চাষে আগ্রহী হচ্ছি। এজন্য আমরা খেসারি ডালচাষে আগ্রহ হারাচ্ছি।
সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ হারুন অর রশিদ বিটিসি নিউজকে জানান, ২০২১-২২ অর্থ বছরে সমগ্র উপজেলায় ৪৯০০ হেক্টর জমিতে খেসারি অর্জন থাকলেও কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ার কারনে ১৪০০ হেক্টর জমির খেসারি নষ্ট হয়। বর্তমানে ৩৫০০ হেক্টর জমিতে খেসারির আবাদ রয়েছে। কিন্তু ১৪০০ হেক্টর জমির খেসারি নষ্ট হওয়ায় সেই পরিত্যক্ত জমি গুলো হালচাষ দিয়ে পুনরায় বোরোধান চাষ করে চাষীরা। এনিয়ে সুবর্ণচরে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোধান চাষ আবাদ হয়।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নোয়াখালী প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিল (শিমুল)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.