সুবর্ণচরে কৃষকের মুখে সূর্যমুখীর হাসি

নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সুবর্ণচরের বিস্তৃত মাঠ জুড়ে এখন পরিপক্ক সোনালী সূর্যমুখী ফুলের সমারোহ। মাঠের পর মাঠ এখন হলদে ভরে গেছে। চাষীদের চেয়েও দর্শনার্থীদের আনন্দের অন্ত নেই। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সূর্যমুখীর মনোরম দৃশ্য দেখতে সুবর্ণচরে ভীড় জমাচ্ছেন তারা।
সুবর্ণচরের প্রতিটি ইউনিয়নে কম বেশী চাষ হয়েছে সূর্যমুখীর। মাঠের পর মাঠ ছেয়ে আছে হলুদের আভায়। যে দিকে চোখ যায় সেদিকেই হলুদের ছড়াছড়ি। চোখ জুড়ানো মনোমুগ্ধকর এক অপরূপ সৌন্দর্য। রাস্তার দুপাশের মাঠের দিকে তাকালেই চোখ জুড়িয়ে যায় ভোজ্য ফসল সূর্যমুখীর বাহারি শোভায়।
আজ মঙ্গলবার (০৬ এপ্রিল) সরেজমিনে কথা হয় কয়েকজন সূর্যমুখী চাষী, দর্শনার্থী এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সাথে। কৃষি বিভাগ বলছে, এতে অনাবাদী জমির পরিমাণ কমার পাশাপাশি পূরণ হবে স্থানীয় সূর্যমুখী তেলের চাহিদা। লবণ সহিষ্ণু এ ভোজ্য ফসল আবাদে দিনদিন আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। উপজেলার ৬ ইউনিয়নের সূর্যমুখী ফুলের চাষ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি মৌসুমে ৪৮০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর উৎপাদন হবে বলে মনে করেন সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।
সুবর্ণচরের চর আমান উল্যাহ ইউনিয়নের চর বজলুল করিম গ্রামের সূর্যমুখী চাষী মো. রাসেল মিয়া বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, স্থানীয় গ্লোব এগ্রো’র পরামর্শে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে পতিত জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করি। লবণাক্ত জমিতে, কম পরিশ্রম ও স্বল্প খরচে ভালো ফলন পাওয়ায়, এতে সূর্যমুখী চাষের ব্যাপারে আগ্রহ বেড়েছে তাদের। তার মতো অনেকেই সূর্যমুখী চাষে আলোর মুখ দেখেছেন।
রাসেল মিয়া জানান, সূর্যমুখী চাষে দ্বীগুন থেকে কোন কোন বছর চারগুন পর্যন্ত লাভ গুনেছেন। তাদের অভিযোগ বীজ বপনের কিছুদিনের মধ্যে পানি সংকটসহ ফসলের বিভিন্ন পোকার আক্রমণ হয়। এ সময় কৃষি কর্মকর্তাদের সঠিক পরামর্শ না পেয়ে নানাভাবে সার কীটনাশক ব্যাবহার করে প্রতারিত হচ্ছেন কৃষকরা।
চাষিদের এই চাষে আকৃষ্ট করতে এসব ক্ষেতে গ্লোব এগ্রো ফিসারিজ কয়েক বছর যাবৎ বিনা মূল্যে জমি চাষ ও বীজ সরবরাহ করছে এবং চাষিদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফুলের বীজ সংগ্রহ, রোদে শুকানো এবং তেল তৈরির কলাকৌশল হাতেনাতে শিখিয়ে দিচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যেই এ ফসল কাটা শুরু হবে। এতে স্বল্প খরচে বাম্পার ফলনে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
সূর্যমুখী চাষের ব্যাপারে গ্লোবের কৃষি কর্মকর্তা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, তারা কৃষকদের জমি চাষ থেকে শুরু করে ফসল কাটা পর্যন্ত কৃষকদের সঙ্গে থাকছেন এবং তাদের অর্থনৈতিক সহযোগিতার পাশাপাশি পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা করে আসছেন। গ্লোবের এ কর্মসূচির আওতায় সুবর্ণচর উপজেলায় অর্ধশত সূর্যমুখী চাষী সঙ্গে রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, তারা বিভিন্ন সময় কৃষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষনের ব্যবস্থাও করেছেন।
লবনাক্ত পতিত জমিতে সূর্যমুখী চাষ সম্প্রসারণে কৃষক ও উদ্যোক্তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হচ্ছে বলে জানান, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুনুর রশিদ এবং তিনি কৃষকদের অভিযোগের ব্যাপারে বলেন, আমরা সবসময় চাষীদের নানা ভাবে সহযোগীতা করে আসছি। তবে জনবল কম থাকায় কোথাও কোথাও প্রতিদিন যাওয়া সম্ভব হয় না।
এছাড়াও চাষীরা আমাদের পরামর্শ না নিয়ে বাজারের সস্তা কিটনাশক ক্রয় করে প্রতারিত হচ্ছেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নোয়াখালী প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিল। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.